বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দেশের রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করতে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ভর্তুকি বা নগদ সহায়তার খাত ও হার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরে প্রথমে ২০টি পণ্য রপ্তানিতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল, পরে আরো কয়েকটি পণ্য ভর্তুকির আওতাভুক্ত করা হয়েছিল। এতে পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ায় ২২টি। এর সঙ্গে চলতি অর্থবছরে আইটিসহ ৫টি খাতকে নগদ সহায়তার আওতায় নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আলু, হোগলা-ছোবড়া ও পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্যে নগদ সহায়তার হার বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বৈদেশিক লেনদেনে নিয়োজিত অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠিয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার, আইটিইএস (ইনফরমেশন টেকনোলজি ইনঅ্যাবল সার্ভিসেস) ও হার্ডওয়্যার রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, সিনথেটিক ও ফ্যাব্রিকসেও মিশ্রণে তৈরি পাদুকা রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস্ ইনগ্রিডিয়েন্টস (এপিআই) রপ্তানিতে ২০ শতাংশ, অ্যাকুমুলেটের ব্যাটারি রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ এবং নারিকেল ছোবড়ার আঁশ দ্বারা উৎপন্ন পণ্য রপ্তানিতে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এসব পণ্য নগদ সহায়তার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে আরো দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে হোগলা, খড়, আখের ছোবড়া ইত্যাদি দিয়ে হাতের তৈরি পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তার হার ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ, আলু রপ্তানিতে ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ, সাভারে চামড়াশিল্প নগরীতে স্থানান্তরিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রপ্তানিতে ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ এবং পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্য রপ্তানিতে সাড়ে ৭ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজজাতীয় দ্রব্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ এবং আগর ও আতর রপ্তানিতে ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া গত অর্থবছরের প্রথমে ঘোষিত ২০টি পণ্যে নগদ সহায়তা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এসব পণ্য যে পরিমাণ রপ্তানি করবে তার মূল্যের বিপরীতে সর্বনিম্ন ২ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে রপ্তানিকারকদের। খাতগুলো হলো রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ৪ শতাংশ, বস্ত্র খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা ৪ শতাংশ, নতুন পণ্য বা বাজার সম্প্রসারণ সহায়তা (আমেরিকা, কানাডা ও ইইউ ব্যতীত) ৩ শতাংশ, ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতে রপ্তানিকারকদের জন্য বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা ২ শতাংশ, কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্যে ২০ শতাংশ, গরু-মহিষের নাড়ি-ভুঁড়ি, শিং ও রগ (হাড় ব্যতীত) রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, হাল্কা প্রকৌশল পণ্য রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, শতভাগ হালাল মাংস রপ্তানিতে ২০ শতাংশ, হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে বরফ আচ্ছাদনের হারভেদে ২ থেকে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, চামড়াজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, জাহাজ রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, ফার্নিচার রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, শস্য ও শাকশবজির বীজ রপ্তানিতে ২০ শতাংশ, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন রপ্তানিতে ২০ শতাংশ, প্লাস্টিক দ্রব্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ এবং পাটজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে।