ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে আমলাদের অংশগ্রহণের শর্ত শিথিল হচ্ছে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সরকারি চাকরিজীবীদের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার শর্ত শিথিল হতে পারে। বেশকিছু আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিষয়টি নিয়ে ভাবছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুসারে সরকারি চাকরিজীবীদের অবসর কিংবা চাকরি ছাড়ার তিন বছর পর সাংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হয়। কিন্তু আমলাদের অনেকেই এ বিধানের বিলুপ্তি চাইছেন। চাকরি শেষেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান তারা।

ইসির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা এ বিধান বাতিলের তৎপরতা শুরু করেছেন। সচিব পর্যায়ের কয়েকজন ইতোমধ্যে ইসিতে যোগাযোগ করে এ বিধান বাতিলের কথা বলেছেন। তাই বিষয়টি আমলে নিয়ে ভাবছে কমিশন। তবে বিধানটি পুরোপুরি বাতিল না হলেও সময় কমানো হতে পারে।

এ বিষয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সময়সীমার বিষয়ে আমাদের কাছে কিছু সুপারিশ এসেছে। তবে ইসি এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২ ধারায় (উপ-ধারা ঝ ও এইচ) সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতায় বলা আছে ‘সরকারি বা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তারা চাকরি ছাড়ার বা অবসরের পর তিন বছর পূর্ণ না হলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।’ এটিএম শামসুল হুদা কমিশন এ শর্ত দিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিধানটি করেন। সেখানে অবশ্য বলা হয়েছিল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো ব্যক্তি টানা তিন বছর সম্পৃক্ত না থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থিতায় অযোগ্য হবেন। আর অবসর গ্রহণের পর তিন বছর অতিবাহিত না হলে প্রার্থী হতে পারবেন না সরকারি আমলারা। তবে দশম সংসদ নির্বাচনের আগে আরপিও থেকে বিলুপ্ত করা হয় অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রার্থী হওয়া সংক্রান্ত তিন বছরের বিধানটি। কিন্তু বহাল রাখা হয় সরকারি কর্মকর্তাদের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিধান।

বিগত কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশনের সময়েও বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তারা সেটি সংশোধন করেননি। আইন-বিধি সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজনৈতিক দল-সুশীল সমাজসহ ইসির সংলাপে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব পাওয়া গেলে কমিটি বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানা গেছে।

যদিও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শেষে হেলালুদ্দীন আহমেদ জানান, বেশকিছু পরামর্শ ও সুপারিশ এসেছে। এর মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনের অংশ নেওয়ার বিধান শিথিল না করার পরামর্শ দিয়েছেন গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া আইন সংস্কার নিয়ে মাঠপর্যায় থেকে ইসি কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো প্রস্তাবেও কয়েকজন এ বিধান বহাল রাখার প্রস্তাব করেছেন

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নির্বাচনে আমলাদের অংশগ্রহণের শর্ত শিথিল হচ্ছে

আপডেট টাইম : ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সরকারি চাকরিজীবীদের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার শর্ত শিথিল হতে পারে। বেশকিছু আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিষয়টি নিয়ে ভাবছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুসারে সরকারি চাকরিজীবীদের অবসর কিংবা চাকরি ছাড়ার তিন বছর পর সাংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হয়। কিন্তু আমলাদের অনেকেই এ বিধানের বিলুপ্তি চাইছেন। চাকরি শেষেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান তারা।

ইসির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা এ বিধান বাতিলের তৎপরতা শুরু করেছেন। সচিব পর্যায়ের কয়েকজন ইতোমধ্যে ইসিতে যোগাযোগ করে এ বিধান বাতিলের কথা বলেছেন। তাই বিষয়টি আমলে নিয়ে ভাবছে কমিশন। তবে বিধানটি পুরোপুরি বাতিল না হলেও সময় কমানো হতে পারে।

এ বিষয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সময়সীমার বিষয়ে আমাদের কাছে কিছু সুপারিশ এসেছে। তবে ইসি এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২ ধারায় (উপ-ধারা ঝ ও এইচ) সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতায় বলা আছে ‘সরকারি বা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তারা চাকরি ছাড়ার বা অবসরের পর তিন বছর পূর্ণ না হলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।’ এটিএম শামসুল হুদা কমিশন এ শর্ত দিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিধানটি করেন। সেখানে অবশ্য বলা হয়েছিল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো ব্যক্তি টানা তিন বছর সম্পৃক্ত না থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থিতায় অযোগ্য হবেন। আর অবসর গ্রহণের পর তিন বছর অতিবাহিত না হলে প্রার্থী হতে পারবেন না সরকারি আমলারা। তবে দশম সংসদ নির্বাচনের আগে আরপিও থেকে বিলুপ্ত করা হয় অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রার্থী হওয়া সংক্রান্ত তিন বছরের বিধানটি। কিন্তু বহাল রাখা হয় সরকারি কর্মকর্তাদের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিধান।

বিগত কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশনের সময়েও বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তারা সেটি সংশোধন করেননি। আইন-বিধি সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজনৈতিক দল-সুশীল সমাজসহ ইসির সংলাপে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব পাওয়া গেলে কমিটি বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানা গেছে।

যদিও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শেষে হেলালুদ্দীন আহমেদ জানান, বেশকিছু পরামর্শ ও সুপারিশ এসেছে। এর মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচনের অংশ নেওয়ার বিধান শিথিল না করার পরামর্শ দিয়েছেন গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া আইন সংস্কার নিয়ে মাঠপর্যায় থেকে ইসি কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো প্রস্তাবেও কয়েকজন এ বিধান বহাল রাখার প্রস্তাব করেছেন