ঢাকা , রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোজার যতো বিধির-বিধান

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রহমত, বরকত, নাজাতের মাস মাহে রমজান। মাসব্যাপী ইবাদত বন্দেগির মাঝ দিয়ে পালন হবে এ মাস। এ মাসের অন্যতম বিধান রোজা পালন। ফলে রোজা রাখার বিধানাবলী জানা থাকা সকলের জন্য খুবই প্রয়োজন। রোজাকে আরবিতে সাওম বলা হয়। সাওম শব্দের অভিধানিক অর্থ কোন কিছু থেকে বিরত থাকা। আল্লামা রাগেব ইস্পাহানী এর মতে, কাজ থেকে বিরত থাকা। পারিভাষিক সংজ্ঞায় আল্লামা মুহাম্মদ আলী সুবনী তার রওয়িউল বয়ান গ্রন্থে বলেন, ইবাদতের নিয়তে ফজরের উদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার এবং স্ত্রী সহবাস হতে বিরত থাকাকে রোজা বলা হয়। নিম্নে রোজার কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল দেওয়া হল,

রোজার রোকন: সাওমের রোকন একটি তা হলো রোজা ভঙ্গ করে এমন বস্তু পরিহার করা।
রোজার তিনটি শর্ত রয়েছে। ১. রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত ৩টি যথা- ক. মুসলমান হওয়া, ২. জ্ঞানবান হওয়া ৩. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া ২. রোজা আদায় হওয়ার শর্ত ২টি- ক. সুস্থ হওয়া খ. মুকীম হওয়া। রোজা আদায় শুদ্ধ হওয়ার শর্ত ২টি ক. মহিলাদের ক্ষেত্রে মিনস ও নেফাস থেকে পবিত্র হওয়া। খ. নিয়ত করা।

রোজার প্রকার
রোজা মোট ছয় প্রকার ১. ফরজ রোজা, যেমন রমজান মাসের । ২. ওয়াজিব রোজা, যেমন মান্নতের রোজা । ৩. সুন্নত রোজা, যেমন, আশুরার রোজা ৪. মুস্তহাব রোজা, যেমন আইয়ামে বীযের রোজা প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা। রাখা। ৫. মাকরুহ রোজা, আশুরার ১টি রোজা রাখা। ৬. হারাম রোজা, যেমন দুই ঈদের দিনে রোজা এবং কুরবানির ঈদের পরের তিন দিন রোজা রাখা।

যেসব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়
১. ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কিছু পানাহার করা। ২. স্ত্রী চুম্বন বা সহবাস দ্বারা বীর্যপাত হওয়া।
৩. ইচ্ছাকরে মুখভর্তি বমি করা। ৪. পাথর লোহার টুকরা বা ফলের আটি ইত্যাদি গিলে ফেলা। ৫. ইচ্ছাকৃতভাবে গুহ্যদ্বার বা ও যৌন পথ দিয়ে যৌন সঙ্গম করা বা ঢুস নেয়া। ৬. ইচ্ছাপূর্বক এমন জিনিস পানাহার করা যা খাদ্য বা ওষুধ রুপে ব্যবহার হয়। ৭. কান বা নাকের ভিতর ওষুধ দেয়া।

যেসব কারণে রোজা ভেঙ্গে ফেললে কাযা ওয়াজিব হয়
১. ইচ্ছাকরে মুখভর্তি বমি করা। ২. কোনো অখাদ্য বস্তু খেয়ে ফেললে। ৩. স্ত্রীকে চুম্বন বা স্পর্শ করায় বীর্যপাত হলে। ৪. কুলি করার সময় অনিচ্ছায় পানি পেটে চলে গেলে। ৫. সন্ধ্যা বিবেচনায় সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে। ৬. ঢুস নিলে। ৭. জোরপূর্বক রোযাদারকে কেউ পানাহার করালে। ৮. কেউ যৌনাঙ্গ ব্যতিরেকে সঙ্গম করায় তাতে বীর্যপাত হলে। ৯. তরল ওষুধ লাগানোর কারনে তা পেটে বা মস্তিষ্কে পৌঁছে গেলে। ১০. সুবহে সাদেক মনে করে ভোরে পানাহার করলে। ১১. ঘুমন্ত অবস্থায় কিছু খেয়ে ফেললে। ১২. দাঁত থেকে ছোলা পরিমান কোনো কিছু বের করে গিলে ফেললে।
১৩. ভুলবসত কিছু খেয়ে রোযা ভঙ্গ হয়েছে ধারনা করে ইচ্ছাপূর্বক আবার খেলে।

যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হলে কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব
১. রোযা অবস্থায় ইচ্ছাপূর্বক স্ত্রী সহবাস করলে। ২. ইচ্ছাপূর্বক পুং মৈথুন ও হস্ত মৈথুন করা বীর্যপাত করলে। ৩. ইচ্ছাপূর্বক কোনো খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করলে। ৪. শিঙ্গা নিয়ে এ ধারনায় ইচ্ছাপূর্বক পানাহার করলে যে, এখন তো রোযা নষ্ট হয়ে গেছে।

রোযাদারের জন্য যা জায়েয
১. স্ত্রীর সঙ্গে স্বাভাবিক মেলামেশা করা বা চুমু দেওয়া। যদি বীর্যপাতের আশঙ্কা না থাকে। ২. গোফে তেল ব্যবহার করা। ৩. চোখে সুরমা লাগানো। ৪. মেসওয়াক করা। ৫. এমনভাবে কুলি করা যাতে পেটে পানি প্রবেশের আশঙ্কা না থাকে। ৬. সাবধানতায় নাকে পানি দেওয়া যাতে ভেতরে পানি চলে না যায়। ৭. গোসল করা। ৮. শিঙ্গা লাগানো, যদি এর দ্বারা রোজাদার দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকে। ৯. শরীরে ঢুস ব্যবহার করা। ১০. স্বামীর অশালীন কথাবার্তা শুনার আশঙ্কা থাকলে তরকারীর স্বাদ গ্রহণ করা। ১১. মুসাফির অবস্থায় অসহ্য কষ্ট হলে রোযা ছেড়ে দেওয়া।
১২. সন্তানকে দুধ পান না করালে যদি সন্তানের স্বাস্থ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে রোযা ছেড়ে দেয়া বৈধ: কিন্তু পরবর্তীতে কাযা আদায় করতে হবে। ১৩. প্রয়োজন মনে করলে সন্তানের মুখে খাবার চিবিয়ে দেওয়া। ১৪. অনিচ্ছাকৃত বমি করা।

রোজাদারের জন্য নাজায়েয কাজ
১. যৌন সম্ভোগ ও হস্তমৈথুনের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটানো। ২. ইচ্ছাকৃত পানাহার করা।
৩. যথা খাদ্য মুখে দিয়ে স্বাদ গ্রহণ করা। ৪. শিঙ্গা লাগিয়ে রোযা নষ্ট হয়েছে মনে করে পানাহার করা। ৫. দাঁত থেকে কোনো খাদ্যকনা বের করে গিলে ফেলা। ৬. প্রয়োজন ছাড়া সন্তানের মুখে খাদ্য চিবিয়ে দেওয়া। ৭. মিথ্যা বলা, অশ্লীল কথা বা গালিগালাজ করা। ৮. ভুলক্রমে কিছু পানাহার শুরু করে রোযা ভঙ্গ হয়েছে মনে করে পেট পুরে পানাহার করা। ৯. সারাদিন রোযা শেষে ইফতারের সময় ইফতার না করা।

রোজা মাকরূহ হওয়ার কারণ
১. গড়গড়িয়ে কুলি করা। কেননা এতে পেটে পানি প্রবেশের আশঙ্কা থাকে।
২. শরীরে তেল ব্যবহার করা। কেননা এত পশমের গোড়া দিয়ে তেল শরীরের অভ্যন্তরে ঢুকতে পারে। ৩. শিঙ্গা লাগানো। ৪. স্ত্রীকে চুম্বন করা। কেননা অনেক সময় এটা রোযাদারকে সঙ্গমের প্রতি ধাবিত করে। ৫. দাঁত থেকে বের করে কিছু চিবিয়ে খাওয়া। ৬. মিথ্যা কথা বলা। কেননা হাদিসে এসেছে মিথ্যা সকল পাপের মূল। ৭. অশ্লীল কথাবার্তা বলা। ৮. কাউকে গালি দেওয়া। ৯. অন্যের দোষ ত্রোটি বর্ণনা করা। ১০. মুখ দিয়ে কোনো ব¯ু‘র স্বাদ গ্রহণ করা। ১১. গরম বা রোদে বারবার কুলি করা। ১২. অধিক উষ্ণতার কারণে গায়ে ভেজা কাপড় জড়িয়ে রাখা।

সাহরি খাওয়ার বিধান
রোজা রাখার নিয়তে শেষ রাতে বরকত লাভের জন্য কিছু খাওয়াকে সাহরি বলা হয়। ইমাম তাবারানী (রহ.) বর্ণনা করেছেন রাসুল (সা.) বলেন, ‘সাহরি গ্রহণকারীর খাবারের হিসাব হবে না’। তাছাড়া সাহরি খাওয়া রাসুল (সা.) এর একটি সুন্নত। রাসুল (সা.) এর হাদীস শরীফে সাহরি খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। হজরত আনাস (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, কেননা তাতে বরকত রয়েছে’। (বোখারী: ১৯২৩) রোজাদারের জন্য বরকতময় খাবার হল সাহরি খাওয়া। সাহরি খাওয়া সুন্নত। কোন কারণে সাহরি খেতে না পারলে সাহরি খাওয়া ছাড়াই রোযার নিয়ত করবেন। এতে রোজার ক্ষতি হবে না। অর্ধ রাতের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময়ে সাহরি খাওয়া হলে সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। শেষ রাতে সাহরি খাওয়াই উত্তম। রাসুল (সা.) সাধারণত দেরি করে সাহরি খেতেন, তাই রাতের শেষ প্রহরে সাহরি খাওয়া সুন্নাত। রাসুল (স.) বলেন, ‘আমার উম্মত কল্যাণের সাথে থাকবে যতদিন তারা তাড়াতাড়ি ইফতারি করবে এবং সাহরি দেরি করে করবে’। (আহমদ)

ইফতারের বিধান
ইফতার শব্দের অর্থ ভঙ্গ করা বা ভেঙ্গে ফেলা। আমিমুল ইহসান (র:) বলেন, রোজাদারের জন্য ইফতার হল তার পানাহার করা। শরীয়তের পরিভাষায় সারাদিন রোজা পালন শেষে সূর্যাস্ত হওয়ার পর পর পানি, শরবত, খেজুরসহ প্রয়োজনীয় খাবারের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করাকে ইফতার বলা হয়। রাসুল (সা.) বলেন, রোজাদারের জন্য দুইটি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে ১. ইফতারের সময় ২. আখারাতে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সময়’। (বোখারী ও মুসলিম) ইফতার খেজুর দিয়ে করা সুন্নাত। আবু ইয়ালা (রহ.) বলেন, “রাসুল (সা:) তিনটি খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। খেজুর ব্যতিত অন্যান্য ফলমূল দ্বারা ইফতার করা যাবে তবে খেজুর দ্বারা ইফতার করা ভাল। রাসুল (সা:) বলেন, “তোমাদের কেউ যখন ইফতার করে সে যেন খেজুর দিয়ে করে কেননা তা বরকতময় যদি খেজুর না থাকে তবে পানি দিয়ে কেননা তা পবিত্র”। (আবু দাউদ, ২৩৫৬-পৃষ্ঠা)

ইফতারির পূর্বে রোজাদারের দোয়া মহান আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন। হজরত ওমর (রা:) হতে বর্ণিত রাসুল (সা:) বলেন, “ ইফতারির সময় রোজাদারের দোয়া কবুল করা হয়। তাই ইফতারির সময় দোয়া পড়তে হয় “আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়াআলা রিযকিকা আফতারতু”। (আবু দাউদ)

তারাবির বিধান
২০ রাকাত তারাবি পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ আর তারাবির নামাজ জামাতে পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। যে ব্যক্তি পরে যোগ দেয়ার কারণে কিছু তারাবিহ রয়ে গেছে তিনি ইমামের সাথে বিতর পরে নিবেন, অতপর অবশিষ্ট তারাবির নামাজ আদায় করবেন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেকে হাফেজ হোক বা না হোক ইমাম বানানো ঠিক নয়। বালেগ ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করতে হবে। যে তারাবি পড়াবে তার নিকট থেকে আয়াতের অর্থ কিংবা সারসংক্ষেপ জেনে নেওয়া ভাল। যখন থেকে সাহাবিরা এই পড়া শুরু করেন তখন থেকে তারা দুই সালামের পর অর্থাৎ চার রাকাত নামাজের পর বিশ্রাম নিতেন। তাই এই নামাজের নাম তারাবি নামাজ করা হয়েছে। (ফতহুল বারী)

ইতিকাফের বিধান
রমজানের শেষ দশদিন মহল্লার মসজিদে ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া।
মহল্লার কেউ যদি ইতিকাফ না করে তাহলে সকলেই গুনাহগার হবে। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ইতিকাফ করা বা করানো ঠিক নহে, এতে ইতিকাফের আদায় হবে না। খালিস দিলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইতেকাফ করাতে হবে।

ফিতরা আদায়ের বিধান
রোযার ঈদের দিন সুবহে সাদিকের হওয়ার পূর্বে যদি কোন মুসলমান আকেল ও বালেগ ব্যক্তির নিকট প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য পোশাক পরিচ্ছদ ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্রের অতিরিক্ত সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা সমমূল্যের যে কোন সম্পদ থাকে তবে তার উপর ফিতরা ওয়াজিব। যার উপর ফিতরা ওয়াজিব তিনি নিজের ফিতরা দিবেন এবং স্বীয় নাবালেগ ছেলে মেয়েদের ফিতরাও দিবেন। ফিতরার পরিমান হলো সাধারণত ১৪০.৫০ তোলা যা প্রায় ১৬৩৬ গ্রাম গম বা তার মূল্য গরীব মিসকিনকে দান করা অথবা খেজুর বা কিসমিস দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ২৭২ গ্রাম খেজুর বা কিসমিশ কিংবা তার মূল্য ধরে ফিতরা আদায় করতে হবে।

যাকাতের বিধান
সকল প্রকার সম্পদের ওপর যাকাত ফরজ নহে। যাকাত পাঁচ প্রকার সম্পদে ফরজ: যেমন-১. গৃহপালিত পশু, ২.স্বর্ন-রৌপ্য বা নগদ ক্যাশ, ৩. ব্যবসায়ের পণ্য, ৪. খনিজ সম্পদ, ৫. ফল ও ফসল। যে পরিমান সম্পদ থাকলে যে পরিমান যাকাত দিতে হবে তা হল ১. অর্থ সম্পদ ব্যবসায়িক সম্পদের যাকাত শতকরা আড়াই টাকা হারে। ২. জমিতে উৎপন্ন ফসলের যাকাত পানি সেচের প্রয়োজন না হলে দশ ভাগের একভাগ এবং পানি সেচের প্রয়োজন হলে বিশ ভাগের একভাগ। ৩. স্বর্নের নিসাব সাড়ে সাত ভরি এবং রৌপ্যের নিসাব সাড়ে বায়ান্ন ভরি। ৪. গরুর নিসাব ৩০ টিতে ১টি বাছুর, ছাগলের নিসাব ৪০ টিতে ১টি ছাগল এবং উটের নেসাব ৫ টিতে ১ টি উট ৫. মাটির তলদেশ থেকে খনিজ সম্পদে পাঁচ ভাগের একভাগ। সবার ওপর যাকাত ফরজ করা হয়নি। যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য নয়টি শর্ত রয়েছে। সে গুলো হল ১. মুসলিম হওয়া ২. জ্ঞানবান হওয়া ৩.স্বাধীন হওয়া ৪. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া ৫. ঋনমুক্ত হওয়া ৬. নেসাবের মালিক হওয়া ৭. মালিকানায় এক বছর থাকা ৮. সম্পদ মৌলিক প্রয়োজনীয় না হওয়া ৯. সম্পদ প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ভাবে বর্ধন শীল হওয়া, যেমন পশু, স্বর্ন, রোপ্য ইত্যাদি। (আনওয়ারুল কোরআন) ইসলামে যাকাত বণ্টনের জন্য নির্দিষ্ট খাত রয়েছে। যাকে মাসারিফুস যাকাত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে যাকাত বণ্টনের আটটি খাতের বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “সদকা (যাকাত) কেবল ফকির, মিসকিন, যাকাত আদায়ের কর্মচারী যাদের চিত্তাকর্ষন করা প্রয়োজন তাদের জন্য এবং দাসমুক্তি, ঋণগ্রস্থ, আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী ও মুশাফিরদের জন্য। এটা মহান আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত বিধান। আর আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়” (সূরা তাওবা-৬০) (সূত্র: ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, তানবীরুল কোরআন: ২৮৮-২৯২ পৃষ্ঠা)

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

রোজার যতো বিধির-বিধান

আপডেট টাইম : ০৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ মে ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রহমত, বরকত, নাজাতের মাস মাহে রমজান। মাসব্যাপী ইবাদত বন্দেগির মাঝ দিয়ে পালন হবে এ মাস। এ মাসের অন্যতম বিধান রোজা পালন। ফলে রোজা রাখার বিধানাবলী জানা থাকা সকলের জন্য খুবই প্রয়োজন। রোজাকে আরবিতে সাওম বলা হয়। সাওম শব্দের অভিধানিক অর্থ কোন কিছু থেকে বিরত থাকা। আল্লামা রাগেব ইস্পাহানী এর মতে, কাজ থেকে বিরত থাকা। পারিভাষিক সংজ্ঞায় আল্লামা মুহাম্মদ আলী সুবনী তার রওয়িউল বয়ান গ্রন্থে বলেন, ইবাদতের নিয়তে ফজরের উদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার এবং স্ত্রী সহবাস হতে বিরত থাকাকে রোজা বলা হয়। নিম্নে রোজার কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল দেওয়া হল,

রোজার রোকন: সাওমের রোকন একটি তা হলো রোজা ভঙ্গ করে এমন বস্তু পরিহার করা।
রোজার তিনটি শর্ত রয়েছে। ১. রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত ৩টি যথা- ক. মুসলমান হওয়া, ২. জ্ঞানবান হওয়া ৩. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া ২. রোজা আদায় হওয়ার শর্ত ২টি- ক. সুস্থ হওয়া খ. মুকীম হওয়া। রোজা আদায় শুদ্ধ হওয়ার শর্ত ২টি ক. মহিলাদের ক্ষেত্রে মিনস ও নেফাস থেকে পবিত্র হওয়া। খ. নিয়ত করা।

রোজার প্রকার
রোজা মোট ছয় প্রকার ১. ফরজ রোজা, যেমন রমজান মাসের । ২. ওয়াজিব রোজা, যেমন মান্নতের রোজা । ৩. সুন্নত রোজা, যেমন, আশুরার রোজা ৪. মুস্তহাব রোজা, যেমন আইয়ামে বীযের রোজা প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা। রাখা। ৫. মাকরুহ রোজা, আশুরার ১টি রোজা রাখা। ৬. হারাম রোজা, যেমন দুই ঈদের দিনে রোজা এবং কুরবানির ঈদের পরের তিন দিন রোজা রাখা।

যেসব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়
১. ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কিছু পানাহার করা। ২. স্ত্রী চুম্বন বা সহবাস দ্বারা বীর্যপাত হওয়া।
৩. ইচ্ছাকরে মুখভর্তি বমি করা। ৪. পাথর লোহার টুকরা বা ফলের আটি ইত্যাদি গিলে ফেলা। ৫. ইচ্ছাকৃতভাবে গুহ্যদ্বার বা ও যৌন পথ দিয়ে যৌন সঙ্গম করা বা ঢুস নেয়া। ৬. ইচ্ছাপূর্বক এমন জিনিস পানাহার করা যা খাদ্য বা ওষুধ রুপে ব্যবহার হয়। ৭. কান বা নাকের ভিতর ওষুধ দেয়া।

যেসব কারণে রোজা ভেঙ্গে ফেললে কাযা ওয়াজিব হয়
১. ইচ্ছাকরে মুখভর্তি বমি করা। ২. কোনো অখাদ্য বস্তু খেয়ে ফেললে। ৩. স্ত্রীকে চুম্বন বা স্পর্শ করায় বীর্যপাত হলে। ৪. কুলি করার সময় অনিচ্ছায় পানি পেটে চলে গেলে। ৫. সন্ধ্যা বিবেচনায় সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে। ৬. ঢুস নিলে। ৭. জোরপূর্বক রোযাদারকে কেউ পানাহার করালে। ৮. কেউ যৌনাঙ্গ ব্যতিরেকে সঙ্গম করায় তাতে বীর্যপাত হলে। ৯. তরল ওষুধ লাগানোর কারনে তা পেটে বা মস্তিষ্কে পৌঁছে গেলে। ১০. সুবহে সাদেক মনে করে ভোরে পানাহার করলে। ১১. ঘুমন্ত অবস্থায় কিছু খেয়ে ফেললে। ১২. দাঁত থেকে ছোলা পরিমান কোনো কিছু বের করে গিলে ফেললে।
১৩. ভুলবসত কিছু খেয়ে রোযা ভঙ্গ হয়েছে ধারনা করে ইচ্ছাপূর্বক আবার খেলে।

যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হলে কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব
১. রোযা অবস্থায় ইচ্ছাপূর্বক স্ত্রী সহবাস করলে। ২. ইচ্ছাপূর্বক পুং মৈথুন ও হস্ত মৈথুন করা বীর্যপাত করলে। ৩. ইচ্ছাপূর্বক কোনো খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করলে। ৪. শিঙ্গা নিয়ে এ ধারনায় ইচ্ছাপূর্বক পানাহার করলে যে, এখন তো রোযা নষ্ট হয়ে গেছে।

রোযাদারের জন্য যা জায়েয
১. স্ত্রীর সঙ্গে স্বাভাবিক মেলামেশা করা বা চুমু দেওয়া। যদি বীর্যপাতের আশঙ্কা না থাকে। ২. গোফে তেল ব্যবহার করা। ৩. চোখে সুরমা লাগানো। ৪. মেসওয়াক করা। ৫. এমনভাবে কুলি করা যাতে পেটে পানি প্রবেশের আশঙ্কা না থাকে। ৬. সাবধানতায় নাকে পানি দেওয়া যাতে ভেতরে পানি চলে না যায়। ৭. গোসল করা। ৮. শিঙ্গা লাগানো, যদি এর দ্বারা রোজাদার দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকে। ৯. শরীরে ঢুস ব্যবহার করা। ১০. স্বামীর অশালীন কথাবার্তা শুনার আশঙ্কা থাকলে তরকারীর স্বাদ গ্রহণ করা। ১১. মুসাফির অবস্থায় অসহ্য কষ্ট হলে রোযা ছেড়ে দেওয়া।
১২. সন্তানকে দুধ পান না করালে যদি সন্তানের স্বাস্থ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে রোযা ছেড়ে দেয়া বৈধ: কিন্তু পরবর্তীতে কাযা আদায় করতে হবে। ১৩. প্রয়োজন মনে করলে সন্তানের মুখে খাবার চিবিয়ে দেওয়া। ১৪. অনিচ্ছাকৃত বমি করা।

রোজাদারের জন্য নাজায়েয কাজ
১. যৌন সম্ভোগ ও হস্তমৈথুনের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটানো। ২. ইচ্ছাকৃত পানাহার করা।
৩. যথা খাদ্য মুখে দিয়ে স্বাদ গ্রহণ করা। ৪. শিঙ্গা লাগিয়ে রোযা নষ্ট হয়েছে মনে করে পানাহার করা। ৫. দাঁত থেকে কোনো খাদ্যকনা বের করে গিলে ফেলা। ৬. প্রয়োজন ছাড়া সন্তানের মুখে খাদ্য চিবিয়ে দেওয়া। ৭. মিথ্যা বলা, অশ্লীল কথা বা গালিগালাজ করা। ৮. ভুলক্রমে কিছু পানাহার শুরু করে রোযা ভঙ্গ হয়েছে মনে করে পেট পুরে পানাহার করা। ৯. সারাদিন রোযা শেষে ইফতারের সময় ইফতার না করা।

রোজা মাকরূহ হওয়ার কারণ
১. গড়গড়িয়ে কুলি করা। কেননা এতে পেটে পানি প্রবেশের আশঙ্কা থাকে।
২. শরীরে তেল ব্যবহার করা। কেননা এত পশমের গোড়া দিয়ে তেল শরীরের অভ্যন্তরে ঢুকতে পারে। ৩. শিঙ্গা লাগানো। ৪. স্ত্রীকে চুম্বন করা। কেননা অনেক সময় এটা রোযাদারকে সঙ্গমের প্রতি ধাবিত করে। ৫. দাঁত থেকে বের করে কিছু চিবিয়ে খাওয়া। ৬. মিথ্যা কথা বলা। কেননা হাদিসে এসেছে মিথ্যা সকল পাপের মূল। ৭. অশ্লীল কথাবার্তা বলা। ৮. কাউকে গালি দেওয়া। ৯. অন্যের দোষ ত্রোটি বর্ণনা করা। ১০. মুখ দিয়ে কোনো ব¯ু‘র স্বাদ গ্রহণ করা। ১১. গরম বা রোদে বারবার কুলি করা। ১২. অধিক উষ্ণতার কারণে গায়ে ভেজা কাপড় জড়িয়ে রাখা।

সাহরি খাওয়ার বিধান
রোজা রাখার নিয়তে শেষ রাতে বরকত লাভের জন্য কিছু খাওয়াকে সাহরি বলা হয়। ইমাম তাবারানী (রহ.) বর্ণনা করেছেন রাসুল (সা.) বলেন, ‘সাহরি গ্রহণকারীর খাবারের হিসাব হবে না’। তাছাড়া সাহরি খাওয়া রাসুল (সা.) এর একটি সুন্নত। রাসুল (সা.) এর হাদীস শরীফে সাহরি খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। হজরত আনাস (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, কেননা তাতে বরকত রয়েছে’। (বোখারী: ১৯২৩) রোজাদারের জন্য বরকতময় খাবার হল সাহরি খাওয়া। সাহরি খাওয়া সুন্নত। কোন কারণে সাহরি খেতে না পারলে সাহরি খাওয়া ছাড়াই রোযার নিয়ত করবেন। এতে রোজার ক্ষতি হবে না। অর্ধ রাতের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময়ে সাহরি খাওয়া হলে সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। শেষ রাতে সাহরি খাওয়াই উত্তম। রাসুল (সা.) সাধারণত দেরি করে সাহরি খেতেন, তাই রাতের শেষ প্রহরে সাহরি খাওয়া সুন্নাত। রাসুল (স.) বলেন, ‘আমার উম্মত কল্যাণের সাথে থাকবে যতদিন তারা তাড়াতাড়ি ইফতারি করবে এবং সাহরি দেরি করে করবে’। (আহমদ)

ইফতারের বিধান
ইফতার শব্দের অর্থ ভঙ্গ করা বা ভেঙ্গে ফেলা। আমিমুল ইহসান (র:) বলেন, রোজাদারের জন্য ইফতার হল তার পানাহার করা। শরীয়তের পরিভাষায় সারাদিন রোজা পালন শেষে সূর্যাস্ত হওয়ার পর পর পানি, শরবত, খেজুরসহ প্রয়োজনীয় খাবারের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করাকে ইফতার বলা হয়। রাসুল (সা.) বলেন, রোজাদারের জন্য দুইটি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে ১. ইফতারের সময় ২. আখারাতে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সময়’। (বোখারী ও মুসলিম) ইফতার খেজুর দিয়ে করা সুন্নাত। আবু ইয়ালা (রহ.) বলেন, “রাসুল (সা:) তিনটি খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। খেজুর ব্যতিত অন্যান্য ফলমূল দ্বারা ইফতার করা যাবে তবে খেজুর দ্বারা ইফতার করা ভাল। রাসুল (সা:) বলেন, “তোমাদের কেউ যখন ইফতার করে সে যেন খেজুর দিয়ে করে কেননা তা বরকতময় যদি খেজুর না থাকে তবে পানি দিয়ে কেননা তা পবিত্র”। (আবু দাউদ, ২৩৫৬-পৃষ্ঠা)

ইফতারির পূর্বে রোজাদারের দোয়া মহান আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন। হজরত ওমর (রা:) হতে বর্ণিত রাসুল (সা:) বলেন, “ ইফতারির সময় রোজাদারের দোয়া কবুল করা হয়। তাই ইফতারির সময় দোয়া পড়তে হয় “আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়াআলা রিযকিকা আফতারতু”। (আবু দাউদ)

তারাবির বিধান
২০ রাকাত তারাবি পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ আর তারাবির নামাজ জামাতে পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। যে ব্যক্তি পরে যোগ দেয়ার কারণে কিছু তারাবিহ রয়ে গেছে তিনি ইমামের সাথে বিতর পরে নিবেন, অতপর অবশিষ্ট তারাবির নামাজ আদায় করবেন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেকে হাফেজ হোক বা না হোক ইমাম বানানো ঠিক নয়। বালেগ ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করতে হবে। যে তারাবি পড়াবে তার নিকট থেকে আয়াতের অর্থ কিংবা সারসংক্ষেপ জেনে নেওয়া ভাল। যখন থেকে সাহাবিরা এই পড়া শুরু করেন তখন থেকে তারা দুই সালামের পর অর্থাৎ চার রাকাত নামাজের পর বিশ্রাম নিতেন। তাই এই নামাজের নাম তারাবি নামাজ করা হয়েছে। (ফতহুল বারী)

ইতিকাফের বিধান
রমজানের শেষ দশদিন মহল্লার মসজিদে ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া।
মহল্লার কেউ যদি ইতিকাফ না করে তাহলে সকলেই গুনাহগার হবে। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ইতিকাফ করা বা করানো ঠিক নহে, এতে ইতিকাফের আদায় হবে না। খালিস দিলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইতেকাফ করাতে হবে।

ফিতরা আদায়ের বিধান
রোযার ঈদের দিন সুবহে সাদিকের হওয়ার পূর্বে যদি কোন মুসলমান আকেল ও বালেগ ব্যক্তির নিকট প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য পোশাক পরিচ্ছদ ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্রের অতিরিক্ত সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা সমমূল্যের যে কোন সম্পদ থাকে তবে তার উপর ফিতরা ওয়াজিব। যার উপর ফিতরা ওয়াজিব তিনি নিজের ফিতরা দিবেন এবং স্বীয় নাবালেগ ছেলে মেয়েদের ফিতরাও দিবেন। ফিতরার পরিমান হলো সাধারণত ১৪০.৫০ তোলা যা প্রায় ১৬৩৬ গ্রাম গম বা তার মূল্য গরীব মিসকিনকে দান করা অথবা খেজুর বা কিসমিস দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ২৭২ গ্রাম খেজুর বা কিসমিশ কিংবা তার মূল্য ধরে ফিতরা আদায় করতে হবে।

যাকাতের বিধান
সকল প্রকার সম্পদের ওপর যাকাত ফরজ নহে। যাকাত পাঁচ প্রকার সম্পদে ফরজ: যেমন-১. গৃহপালিত পশু, ২.স্বর্ন-রৌপ্য বা নগদ ক্যাশ, ৩. ব্যবসায়ের পণ্য, ৪. খনিজ সম্পদ, ৫. ফল ও ফসল। যে পরিমান সম্পদ থাকলে যে পরিমান যাকাত দিতে হবে তা হল ১. অর্থ সম্পদ ব্যবসায়িক সম্পদের যাকাত শতকরা আড়াই টাকা হারে। ২. জমিতে উৎপন্ন ফসলের যাকাত পানি সেচের প্রয়োজন না হলে দশ ভাগের একভাগ এবং পানি সেচের প্রয়োজন হলে বিশ ভাগের একভাগ। ৩. স্বর্নের নিসাব সাড়ে সাত ভরি এবং রৌপ্যের নিসাব সাড়ে বায়ান্ন ভরি। ৪. গরুর নিসাব ৩০ টিতে ১টি বাছুর, ছাগলের নিসাব ৪০ টিতে ১টি ছাগল এবং উটের নেসাব ৫ টিতে ১ টি উট ৫. মাটির তলদেশ থেকে খনিজ সম্পদে পাঁচ ভাগের একভাগ। সবার ওপর যাকাত ফরজ করা হয়নি। যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য নয়টি শর্ত রয়েছে। সে গুলো হল ১. মুসলিম হওয়া ২. জ্ঞানবান হওয়া ৩.স্বাধীন হওয়া ৪. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া ৫. ঋনমুক্ত হওয়া ৬. নেসাবের মালিক হওয়া ৭. মালিকানায় এক বছর থাকা ৮. সম্পদ মৌলিক প্রয়োজনীয় না হওয়া ৯. সম্পদ প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ভাবে বর্ধন শীল হওয়া, যেমন পশু, স্বর্ন, রোপ্য ইত্যাদি। (আনওয়ারুল কোরআন) ইসলামে যাকাত বণ্টনের জন্য নির্দিষ্ট খাত রয়েছে। যাকে মাসারিফুস যাকাত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে যাকাত বণ্টনের আটটি খাতের বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “সদকা (যাকাত) কেবল ফকির, মিসকিন, যাকাত আদায়ের কর্মচারী যাদের চিত্তাকর্ষন করা প্রয়োজন তাদের জন্য এবং দাসমুক্তি, ঋণগ্রস্থ, আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী ও মুশাফিরদের জন্য। এটা মহান আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত বিধান। আর আল্লাহ তায়ালা সর্বজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়” (সূরা তাওবা-৬০) (সূত্র: ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, তানবীরুল কোরআন: ২৮৮-২৯২ পৃষ্ঠা)