ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাঁচা মরিচ: আমদানিমূল্য ৩২, বিক্রি ২০০

রান্নায় কাঁচামরিচ আর কত লাগে। কিন্তু এই উপাদানটির দাম মাঝেমধ্যে এতটাই লাফ দেয় যে, গণমাধ্যমে বড় খবর হয়ে উঠে তা।

এক মাসের ব্যবধানে ৪০ টাকা কেজি দরের মরিচ যদি নগরবাসীকে ১৬০ বা ২০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়, তাহলে এ নিয়ে সবাই কথা বলবে না কেন? ঈদের পরই এই পণ্যটি বিক্রি হয়েছে ৩০০ বা তার চেয়েও বেশি টাকা দরে।

এখন কিছুটা কমে আসলেও দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়ে গেছে। ঢাকাটাইমসের অনুসন্ধান বলছে, বৃষ্টির কারণে সরবরাহ সংকটের কথা বলা হলেও বাজারে কারসাজি রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন বাজারে যে মরিচ আছে তার একটি বড় অংশই আসছে ভারত থেকে। আমদানিকারকদের তথ্য বলছে, যে দরে মরিচ আমদানি করা হয়, তার পাঁচ গুণ বা তার চেয়ে বেশি দরে তা কিনছেন ক্রেতারা।

বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মরিচের মাঠ ডুবে গেছে, এটা সত্য। তবে যে দামে রাজধানীর পাইকারি বাজার কারওয়ানবাজারে মরিচ আসে, রাজধানীর ক্রেতারা সেই পণ্য কেনে তার চেয়ে অনেক বেশি দামে।

দেশে সংকট দেখা দিলে ভারত থেকেও আমদানি করা হয় মরিচ। আমাদের বেনাপোল প্রতিনিধি জানান, গত কয়েকদিনে যশোরের এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে যত মরিচ এসেছে তা ছাড় করা হয়েছে ৪০ সেন্ট দরে। এই হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৩২ টাকার মত।

এই মরিচ রাজধানীতে নিয়ে আসতে কিছু খরচ হয় বটে, কিন্তু তারপরও রাজধানীবাসী কেন পণ্যটি দেড়শ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে কিনে খাবে, সে প্রশ্নের যুক্তিসঙ্গত কোনো জবাব নেই কারও কাছে।

খুচরা ও পাইকারি বাজারের চালচিত্র

বুধবার রাজধানীর কমলাপুর, এজিবি কলোনি ও শান্তিনগর কাঁচাবাজারে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পণ্যটি এখন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন তারা।

এজিবি কলোনিতে আমিনা বেগম নামে এক ক্রেতাকে বিক্রেতার সঙ্গে তর্ক করতে দেখা গেলো। এই বাজারে বিক্রেতা মরিচের কেজি প্রতি দাম হাঁকছেন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। আমিনা বেগম বলেন, ‘সকালেই পাশের বাসার একজন সুপার শপ থেকে ১৫০ টাকায় কাঁচা মরিচ কিনেছেন। কিন্তু বাজারে বিক্রেতা বলছে দুইশ টাকার কমে বেচবে না। সুপার শপের চেয়ে বাজারে দাম বেশি হয় কীভাবে?’

ওই বাজারের খুচরা বিক্রেতা আসিফ মিয়া বলেন, বাজারে এখন যে মরিচ পাওয়া যায় প্রায় সবই ভারতের। এই মরিচ আনতে আনতে অনেক দাম পড়ে যায়। তার ওপর নষ্ট হয় অনেক। এ কারণে বেশি দাম রাখতে হচ্ছে তাদের।

কারওয়ানবাজারের পাইকারি মরিচ ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন বলেন, এই বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ তিনি বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এই মরিচ কীভাবে ১৬০ বা ২০০ টাকা হয়ে যাচ্ছে সে প্রশ্নের জবাব নেই তার কাছে।

আরেক পাইকার বাবলু বলেন, ‘আমি ভারত থেকে আসা মরিচ বিক্রি করি ৬০ টাকায়।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

কাঁচা মরিচ: আমদানিমূল্য ৩২, বিক্রি ২০০

আপডেট টাইম : ০৬:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রান্নায় কাঁচামরিচ আর কত লাগে। কিন্তু এই উপাদানটির দাম মাঝেমধ্যে এতটাই লাফ দেয় যে, গণমাধ্যমে বড় খবর হয়ে উঠে তা।

এক মাসের ব্যবধানে ৪০ টাকা কেজি দরের মরিচ যদি নগরবাসীকে ১৬০ বা ২০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়, তাহলে এ নিয়ে সবাই কথা বলবে না কেন? ঈদের পরই এই পণ্যটি বিক্রি হয়েছে ৩০০ বা তার চেয়েও বেশি টাকা দরে।

এখন কিছুটা কমে আসলেও দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়ে গেছে। ঢাকাটাইমসের অনুসন্ধান বলছে, বৃষ্টির কারণে সরবরাহ সংকটের কথা বলা হলেও বাজারে কারসাজি রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন বাজারে যে মরিচ আছে তার একটি বড় অংশই আসছে ভারত থেকে। আমদানিকারকদের তথ্য বলছে, যে দরে মরিচ আমদানি করা হয়, তার পাঁচ গুণ বা তার চেয়ে বেশি দরে তা কিনছেন ক্রেতারা।

বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মরিচের মাঠ ডুবে গেছে, এটা সত্য। তবে যে দামে রাজধানীর পাইকারি বাজার কারওয়ানবাজারে মরিচ আসে, রাজধানীর ক্রেতারা সেই পণ্য কেনে তার চেয়ে অনেক বেশি দামে।

দেশে সংকট দেখা দিলে ভারত থেকেও আমদানি করা হয় মরিচ। আমাদের বেনাপোল প্রতিনিধি জানান, গত কয়েকদিনে যশোরের এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে যত মরিচ এসেছে তা ছাড় করা হয়েছে ৪০ সেন্ট দরে। এই হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৩২ টাকার মত।

এই মরিচ রাজধানীতে নিয়ে আসতে কিছু খরচ হয় বটে, কিন্তু তারপরও রাজধানীবাসী কেন পণ্যটি দেড়শ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে কিনে খাবে, সে প্রশ্নের যুক্তিসঙ্গত কোনো জবাব নেই কারও কাছে।

খুচরা ও পাইকারি বাজারের চালচিত্র

বুধবার রাজধানীর কমলাপুর, এজিবি কলোনি ও শান্তিনগর কাঁচাবাজারে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পণ্যটি এখন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন তারা।

এজিবি কলোনিতে আমিনা বেগম নামে এক ক্রেতাকে বিক্রেতার সঙ্গে তর্ক করতে দেখা গেলো। এই বাজারে বিক্রেতা মরিচের কেজি প্রতি দাম হাঁকছেন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। আমিনা বেগম বলেন, ‘সকালেই পাশের বাসার একজন সুপার শপ থেকে ১৫০ টাকায় কাঁচা মরিচ কিনেছেন। কিন্তু বাজারে বিক্রেতা বলছে দুইশ টাকার কমে বেচবে না। সুপার শপের চেয়ে বাজারে দাম বেশি হয় কীভাবে?’

ওই বাজারের খুচরা বিক্রেতা আসিফ মিয়া বলেন, বাজারে এখন যে মরিচ পাওয়া যায় প্রায় সবই ভারতের। এই মরিচ আনতে আনতে অনেক দাম পড়ে যায়। তার ওপর নষ্ট হয় অনেক। এ কারণে বেশি দাম রাখতে হচ্ছে তাদের।

কারওয়ানবাজারের পাইকারি মরিচ ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন বলেন, এই বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ তিনি বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এই মরিচ কীভাবে ১৬০ বা ২০০ টাকা হয়ে যাচ্ছে সে প্রশ্নের জবাব নেই তার কাছে।

আরেক পাইকার বাবলু বলেন, ‘আমি ভারত থেকে আসা মরিচ বিক্রি করি ৬০ টাকায়।’