বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ নির্বাচনের ট্রেনের হুইসেল বেজে উঠেছে। যাত্রীদের জন্য তার অপেক্ষার পালা শেষ। ইঞ্জিন চালুর কাজটি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন তথা ইসি। সামনে থাকুক যতই প্রতিবন্ধকতা, এই ট্রেন সবকিছু মাড়িয়ে গতিবেগ বাড়িয়ে, স্টেশন ছাড়িয়ে ছুটে চলবেই। ধীরগতিতে যাত্রা শুরু হলেও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে তার গতি। ট্রেনযাত্রীরা যতই হম্বিতন্বি করুক না কেন, সখেদে উঠুক গেয়ে না হয় ভোটের গান, ট্রেন এগিয়ে যাবেই তার আপন গতিতে। ট্রেনকে বিপথে চালনা করার জন্য ওত পেতে আছে কত না জন। হয়তো সংঘবদ্ধ শক্তি দিয়ে থামিয়ে দিতে চাইবে তারা ট্রেন। রেলওয়ের সিপার তুলে ফেলে ট্রেনের যাত্রায় বিঘ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। ট্রেন লাইনচ্যুত করা যাদের লক্ষ্য, তারা নানা ওজর-আপত্তি ও উছিলায় দুর্ঘটনার পথ করবেই তৈরি। লক্ষ্য তাদের নির্বাচন বানচাল। তাতে লাভ-লোকসান একটা তো রয়েছে অবশ্যই।
দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে ক্রমশ। বিরোধী দলগুলো যতই হম্বিতন্বি করুক না কেন, ভোটের আগে যতই শর্তজুড়ে দিক বা নানা বাগাড়ম্বর করুক না কেন, ভোটের রাজনীতি ও সংস্কৃতির তাদের পুরনো চর্চা হিসেবেই তা হয়েছে। এই যে এক নামসর্বস্ব দলের প্রবীণ নেতা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যের জন্য গলা ফাটালেন, দেশ দরদী হওয়ার অভিনয় করে যাচ্ছেন জনসমর্থনহীন হলেও, তিনি আলটপকা গলা খাঁকারি দিয়ে একবার বলে উঠলেন, নির্বাচন হবে না। অলীক দুঃস্বপ্ন দেখে এমনটা বলা অসঙ্গত নয়। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার লৌকিক কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি অতীতে তার। বড় দল ও জোটের সমর্থন পেয়েও তিনি নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারেননি। পারার কথাও নয়। কারণ, জনগণ। এই শব্দ হতে তিনি যোজন যোজন দূরে সবসময় নিজের অবস্থান তৈরি করে রেখেছেন।
জনগণকে কীভাবে সংগঠিত করতে হয় সে ভাষা যেমন জানা নেই, নেই জনগণের ভাষা বোঝার মেধা। তাই গণভাষা ও চিন্তা-চেতনাকে জলাঞ্জলি দেয়া তার জন্য সবচেয়ে সহজ কাজ। কঠিন সাধনা বা আরাধনা তার ধাতে সয় না। তিনি বেশ উচ্চমার্গীয় বাক্যবাণ ছুড়ে দিতে পারেন। যেভাবে আইনজীবী হিসেবে সেই তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে কোনো বিষয়কেই স্পষ্ট করতে পারেননি। আদালতে দাঁড়িয়ে নানা বিষয় ব্যাখ্যা দেন, সেই একই ভাষা জনগণের বোঝার আশা দূর অস্ত বৈকি। নির্বাচন না হওয়া মানে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হওয়া। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিপরীতে অবস্থান নেয়া। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের বিধিবিধান সংবিধানেই লিপিবদ্ধ রয়েছে।
যে সংবিধান প্রণয়নে তিনিই আবার অবদান রেখেছিলেন বলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে আসছেন। সে সংবিধান পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে সামরিক জান্তা শাসকরা অবলীলায় কাটাছেঁড়া করেছেন, তখন তিনি ছিলেন নীরব। আদালতে দাঁড়িয়ে এসবের বিরুদ্ধে তিনি কোনো বাক্য ব্যয়ও করেননি। গণতান্ত্রিক বিধিবিধানকে ধ্বংস করার জন্য সামরিক শাসকরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তিনি তার বিরুদ্ধে ‘টুঁ’ শব্দটিও উচ্চারণ করেননি। বরং দেখা গেছে ১/১১-এর সময় অসাংবিধানিক ও অনির্বাচিত সরকার ব্যবস্থাকে দীর্ঘমেয়াদি করার পক্ষে সোচ্চার হতে। এখনও তাই চান, রাজনীতিকে বিরাজনীতিকরণের জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলেন সুশীল সমাজ নামধারীদের সঙ্গে নিয়ে। তার এসব অপতৎপরতার কারণে তিন মাস মেয়াদি কার্যক্রম চালানোর জন্য নিয়োগকৃত সরকারটি দু’বছর ক্ষমতার মসনদে আসীন হয়ে নানা গণবিরোধী ও সংবিধানবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছিল। তিনি এ সবকিছুর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। সে সময় তার লক্ষ্যই ছিল আওয়ামী লীগ যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য নানামুখী ষড়যন্ত্রকে সামনে নিয়ে আসা। পরিণত বয়সে তিনি আজ আবার হুঙ্কার দিচ্ছেন।
নির্বাচন যদি না হবে তবে দেশ শাসনে বর্তমান সরকারের মেয়াদ বাড়ার কথা। কিন্তু তিনি তা চান না। তার স্বপ্ন জনগণ সংগঠিত হয়ে তাকেই ক্ষমতায় বসাবে। এবার তিনি বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের সমর্থন লাভ শুধু নয়, তাদের নেতা বনে গেছেন। মালয়েশিয়া ও কর্ণাটকের সরকার পদ্ধতি তাকেসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের মধ্যে বেশ আলোড়ন তুলেছে বলা যায়। তাই তারা স্বপ্ন দেখছেন বড় দলের সমর্থনে ছোট দলের সরকার গঠনের ফর্মুলা এদেশেও বাস্তবায়ন করা। তাই বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের সমর্থন নিয়ে তিনি সরকার গঠন করবেন তার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ব্যক্তিসর্বস্ব দলবল নিয়ে। সেজন্য ঐক্যের ডাক দিয়ে ছিলেন। বলছেন তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এই ঐক্যের কাজটি কে করবে তা স্পষ্ট নয়। মনে করেন তিনি রাজনৈতিক দলগুলো স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ঐক্য গড়ে তুলবে। যেমন তিনি বলে আসছেন, ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত হতে হবে। শুনতে বেশ মধুরই মনে হবে। কিন্তু এই সংগঠিত করার কাজটি কারা করবেন, কারা দেবেন নেতৃত্ব, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেন না।
জনগণের কাছে গিয়ে জনগণের ভাষায় কথা বলা, জনগণের চাওয়া-পাওয়া উপলব্ধি করা তার ধাতে কখনও সয়নি। তিনি সে রকম কোন চেষ্টাই করেননি। গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা পাঠ তিনি করতে পারেননি জীবনভর। কৃষিজীবী মানুষের ইচ্ছে-অনিচ্ছের ধারণাটা তার আট দশকের জীবনেও হয়নি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাষী, গরিব, দরিদ্র, হতদরিদ্র, দিনমজুর, রিক্সাচালক, শ্রমজীবী মানুষ এ সবের কোনটাই তার নখদর্পণেও প্রতিভাত হয়নি, আর হবারও নয়। গ্রামের জীবন আগে কেমন ছিল, আর গত দশ বছরে পরিবর্তনটা কেমন হয়েছে তা তিনি জানার চেষ্টা করেছেন এমন অলুক্ষণে কথা কারও মুখে শোনা যায়নি। অসহায় মানুষ বিচারপ্রার্থী হয়ে তার দরোজার সামনের সিঁড়িতে পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছেন এমন কথা ঘুণাক্ষরেও কেউ বলেনি, শোনাও যায়নি। তবে বস্তিবাসীদের হতশ্রী চেহারা তিনি একবার দেখেছেন। বস্তি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে তিনি গত শতকের শেষে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে আদালতে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই বস্তিবাসীরা তার বেইলি রোডের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিল। টানা তিনদিন অবস্থান করেছিল।
তিনি তাদের কাউকে আলিঙ্গন করেছেন বা হাতে বা কাঁধে-পিঠে হাত রেখে সান্ত¡না দিয়েছেন এমন দৃশ্য দেখা যায়নি। আশ্রিত বস্তিবাসীদের আহার যোগাতেও ব্যস্ত হয়ে ওঠেননি। বরং যারপর নাই তিনি বিরক্ত হয়ে সরকারের প্রতি রোষায়িত ভাষায় বাক্যবাণ ছুড়েছিলেন গরিবদের প্রতি ওই প্রথম ও শেষ এগিয়ে এসেছিলেন আইনের গ্রন্থ হাতে। এরপর আর তিনি দরিদ্র মানুষের কথা বলেননি। ভেবেছেন কি-না তা তার পরবর্তীকালের কোন বক্তব্যে ফুটে ওঠেনি।
গ্রামগুলো যে ক্রমশ শহর হয়ে উঠছে, বিদ্যুত এখন ঘরে ঘরে, টিনের ও ছনের ঘরগুলো যে এখন দালান কোঠায় পরিণত হয়েছে, প্রায় বাড়ির ছাদে যে পানির ট্যাঙ্ক দৃশ্যমান, ফ্রিজ টিভি প্রায় বাড়িতেই রয়েছে, সেসব ডক্টর কামাল হোসেনের জানার কথা নয়। গ্রামাঞ্চলে তিনি সফর করেছেন। কৃষকের বাড়িতে একবেলা ভাত খেয়েছেন, কিংবা কিষাণীর হাত থেকে সুপুরি দেয়া পান নিয়ে খেয়েছেন এমন কথা ভাবাও অকল্পনীয়। লাঙ্গল দিয়ে কীভাবে হালচাষ করা হয়, কিভাবে বীজ বপন করতে হয়, সেসব জেনে তার কোন জাগতিক লাভ নেই যে কারণে গ্রামবাংলা যে আজ হতশ্রী নয়, মানুষ যে দুই বেলা দুই মুঠো খেয়ে সঞ্চয় করছে সেসব তিনি জানবেন কী করে?
প্রায় সময় বিদেশ থাকা বিপুল আয়ের অধিকারী মানুষটি দেশের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য তেমন বাক্য ব্যয় না করলেও আওয়ামী লীগ সরকার যে মানুষের জন্য কিছুই করছে না সে কথা বলতে দ্বিধা করেন না। কিন্তু সেসব মানুষ শুনে হতবাক হয়। কারণ লোডশেডিং, মঙ্গা, কাঙালি, অনাহারি, অভাবি শব্দগুলো আজ আর ব্যবহার হয় না। কারণ ওসবের অস্তিত্ব ম্রিয়মাণ। কামাল হোসেন, কাঙাল বা অনাহারী মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ ইহজীবনে লাভ করেননি। সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করলেও জনগণের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইতে যেতে হয়নি। বিদ্যুতবিহীন খুঁটি তথা খাম্বা যুগের কথা তিনি ভুলে গেছেন। যেমন ভুলতে বসেছেন হাওয়া ভবন নামক সমান্তরাল সরকার ব্যবহার নামে কিভাবে দুর্নীতি, লুটপাট হয়েছে। প্রতিপক্ষ রাজনীতিকদের নিপীড়ন করার ঘটনা তিনি দ্রুত ভুলে যে গেছেন সেটাই স্বাভাবিক।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে তার কণ্ঠস্বর প্রায় স্তিমিত ছিল। মাঝে মধ্যে যা বলতেন তা বিরোধী দল আওয়ামী লীগের সরকারবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে। যা ছিল নেতিবাচক ভাষ্য। আর এখন তো তার একটাই লক্ষ্য আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার ধ্বংস। তাই ঐক্য গড়ার যে কাজ তিনি করেছেন, তা বিএনপি-জামায়াত পুনর্বাসন প্রকল্পের নামান্তর। এ ছাড়া মূলত ক্ষমতাসীন সরকারকে দেশে-বিদেশে কতভাবে হেয় করা যায়, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে। এই যে বিএনপি নেতারা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিবের তথাকথিত আমন্ত্রণে এবং সেখানে গিয়ে যে দেখা পাননি সে নিয়ে কামাল হোসেন নির্বাক। বাংলাদেশের সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে বিএনপি-জামায়াত যুক্তরাষ্ট্রে যে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন, তা নিয়ে আইনজীবী বা রাজনীতিক হিসেবে ওনার কোন বক্তব্য মেলে নি। বঙ্গবন্ধুর খুনীচক্রকে বিদেশ থেকে দেখে ফিরিয়ে এনে আইনের হাতে তুলে দেবার জন্য তিনি কোন ভূমিকা পালন করেননি। বিদেশী সরকারগুলোর কাছে কোন দূতিয়ালীও করেননি। অথচ তিনি অধিকাংশ সময় বিদেশেই থাকেন। কার্যত তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেননি বিদেশে অবস্থান সত্ত্বেও। এই হত্যার বিচারের দাবিতে কখনও সোচ্চার হননি। বরং দেখতে পাই, ড. কামাল যখন আওয়ামী লীগ ত্যাগ করার কারণ উল্লেখ করে দলীয় সভানেত্রীকে চিঠি দেন তাতে বলেছিলেন, ‘এখন আমি জীবনের এমন এক সন্ধিক্ষণে এসে পৌঁছেছি, যখন প্রচলিত রাজনৈতিক ধারার পরিবর্তে আমি একটি ভিন্নধর্মী রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করতে চাই। এই উদ্দেশ্যে আমি কিছু সমমনা ব্যক্তির সঙ্গে মতবিনিময় করে ১৯৯২ সালের জুন মাসে গণতান্ত্রিক ফোরাম গঠনের উদ্যোগ নেই।’
তার স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে যে আওয়ামী লীগ থেকে অপর একটি দলগঠনের এই ছদ্মবেশী উদ্যোগকে সঙ্গত কারণেই আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করেছিল। বামপন্থী বলে পরিচিত গণতান্ত্রিক শক্তির একাংশ সেদিন গণফোরামে যোগ দিয়েছিল। এটা তার রাজনৈতিক নেতৃত্বের গুণে আকৃষ্ট হয়ে নয়, তার আওয়ামী লীগ বিরোধিতার কারণে। বিএনপি যে পেট্রোলবোমা মেরে জীবন্ত মানুষকে হত্যা করেছিল, সে সময় এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দূরে থাক সামান্য প্রতিবাদ করেননি কামাল হোসেন। হতাহতদের দেখতেও যাননি। বরং ওই সময় তিনি মান্না ও সুলতান মনসুরকে বগলদাবা করে বেগম জিয়ার গুলশান ‘অফিস কাম রেসিডেন্সে’ গিয়েছিলেন। সবাই ভেবেছিল, তিনি বেগম জিয়াকে মানুষ হত্যার, অবরোধ কর্মসূচী প্রত্যাহারের কথা বলবেন। কিন্তু হা হতোস্মি! বেগম জিয়ার গরম-নরম কথায় তিনি বিমোহিত হয়ে একেবারে আনুগত্যের তালিকায় যেন নাম লেখাতে চেয়েছেন। তার কন্যার জামাতা বরং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালায়। জামায়াতের পক্ষ নিয়ে এই জামাতাবাবাজি আদালত অবমাননাও করেছেন।
নির্বাচনে অংশ নিতে জাতিসংঘ যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিকদের কাছে ধর্ণা দিয়ে নিজেরা জাতে উঠতে চাইলেও কামাল হোসেন যে দেশে বিদেশী হস্তক্ষেপ চাইছেন, বিদেশীরা তাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এমনটা যদি ভাবেন, তবে তা গণবিরোধী ভাবনা বলা যায়। কামাল হোসেনও তার পৃষ্ঠপোষক জামায়াত-বিএনপি যাই বলুক না কেন, নির্বাচনে তারা গণমানুষের রায় নয়, গণরোষেরও শিকার হতে পারেন। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা উৎখাতের দুঃস্বপ্ন ছেড়ে কামাল হোসেন জন দাবি নিয়ে যদি সামনে না আসেন, তবে জনগণ বুঝিয়ে দিতে পারে গণরোষ কাকে বলে।
নির্বাচনের ট্রেনে কামাল হোসেন চড়ে বসতে চান, বসুন। জনগণের কথা বলুন। বিএনপির কাঁধে সওয়ার হয়ে এসে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন, এমনটাই বাস্তবসম্মত। কামাল হোসেন বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে যোগ দিয়ে প্রমাণ করতে পারেন জনগণ তার পক্ষে রয়েছেন কিনা? যে জনগণের নামে তিনি দাি দাওয়া পেশ করেছেন, সেই জনগণ নির্বাচনেই বুঝিয়ে দেবে তার ভাষ্য সঠিক না বেঠিক। নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার পর যত প্রতিবন্ধকতাই আসুক, নির্বাচন হবেই।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক