পাঁচ বছরেও খালাস না নেয়া বিভিন্ন ধরনের ৫৮৭টি গাড়ি নিলামে তুলতে চায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এসব গাড়ি আমদানি করা হয়। তবে শুল্ক পরিশোধ করে আমদানিকারকরা গাড়িগুলো নিচ্ছে না।
বিশাল জায়গাজুড়ে বছরের পর বছর গাড়িগুলো পড়ে থাকায় স্বাভাবিক পণ্য হ্যান্ডলিং ব্যাহত হচ্ছে। কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে এসব গাড়ির তালিকা করে সম্প্রতি নিলাম শাখায় পাঠানো হয়েছে। গাড়িগুলোর সর্বশেষ অবস্থা যাচাই-বাছাই করছে নিলাম শাখা।
কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, আমদানিকারকরা খালাস না নিয়ে বন্দরের ভেতরে বছরের পর বছর গাড়ি ফেলে রাখেন। বন্দরকে তারা একরকম গুদাম হিসেবে ব্যবহার করেন। ক্রেতা পেলে শুল্ক পরিশোধ করে অনেক আমদানিকারক গাড়ি ছাড়িয়ে নেন।
ক্রেতা না পাওয়া পর্যন্ত গাড়ি বন্দরেই রাখা হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায়, নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করলে আমদানিকারকরা মামলা ঠুকে দেন। নিলামে তোলার আগেই শুল্ক পরিশোধ করে তারা গাড়ি নিয়ে যান।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার নুর উদ্দিন মিলন যুগান্তরকে বলেন, নিলামযোগ্য ৫৮৭টি গাড়ির তালিকা তৈরি করেছি। ১৪ আগস্ট তালিকাটি কমিশনার অফিসে পাঠানো হয়েছে।
এ তালিকায় রয়েছে- প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশা, ইলেকট্রিক বাইক ও বাইসাইকেল। উপ-কমিশনার মিলন জানান, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১৬টি বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে বিভিন্ন সময় এসব গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়। কিন্তু আমদানিকারক শুল্ক পরিশোধ করেনি।
গাড়িও ডেলিভারি নেয়নি। বাজারদর পড়ে গেলে লোকসানের আশঙ্কায় অনেক আমদানিকারক পণ্য ডেলিভারি নেয় না। দাম বাড়লে তারা আবার ডেলিভারি নেন।
কাস্টমস সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে আসা পণ্য একটি নির্দিষ্ট সময়ে ছাড়িয়ে না নিলে তা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে কাস্টমস সেই পণ্য নিলামে তোলে।
গাড়ির নিলাম প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (নিলাম শাখা) মাজেদুল হক যুগান্তরকে বলেন, কাস্টম হাউসের সংশ্লিষ্ট শাখা পাঁচ শতাধিক নিলামযোগ্য গাড়ির একটি তালিকা তৈরি করেছে।
কিন্তু ওইসব গাড়ির বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রিমোভাল লিস্ট পাওয়া যায়নি। এ তালিকা ছাড়া নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করা যায় না। তিনি আরও বলেন, গাড়ির নিলাম একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।
এ ক্ষেত্রে প্রায় আইনি জটিলতা দেখা দেয়। অনেক সময় নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করলে আমদানিকারক মামলা করে। পরে শুল্ক পরিশোধ করে ডেলিভারি নেয়। এ ধরনের ঘটনা প্রায় ঘটছে বলে তিনি জানান।