ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিয়ের আগে সন্তান জন্ম দেয়াই এখানকার ঐতিহ্য

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ আজকাল অবিবাহিত ছেলে-মেয়েদের প্রেম করা বা লিভ-ইন রিলেশনসিপে থাকা নতুন কিছু না। এই বিষয়গুলোই আমাদের সমাজে খারাপ নজরে দেখা হয়। কিন্তু এর থেকেও অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে ভারতে এমন জায়গা রয়েছে, যেখানে এসব কাজ খুবই স্বাভাবিক।

সামাজিক রীতিনীতি বা পরম্পরা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হয় এইটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কিছু স্থানের এই পরম্পরা আপনাকে বিস্মিত করবে। আসুন জেনে নেয়া যাক এরকমই অদ্ভুত পরম্পরার কথা-

ফাইল ছবি

লিভ-ইন করাই ঐতিহ্য
ভারতবর্ষের একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে লিভ-ইন সম্পর্কের মধ্যে বাস করা পাপ নয় কিন্তু একটি ঐতিহ্য। বিয়ে করার আগে একটি শিশুর জন্ম দেয়াও অপরাধ নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছা। এখানকার মেয়েদের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তার জীবনসঙ্গীকে ঠিকভাবে বুঝে নেয়ার এবং তারপর তাকে বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলা। কিন্তু আধুনিক যুগে এইসব কথা শুনলে মানুষ সত্যিই হয়রান হয়ে যাবে।

৭০ বছর বয়সী নানিয়া গরাসিয়া না্মের একজন মহিলা ৬০ বছর বয়সী কালীর সাথে বিয়ে করেন। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার এটাই ছিল যে, তারা বহু বছর ধরে লিভ-ইন রিলেশনসিপে ছিল এবং তাদের তিনটি সন্তানও রয়েছে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, তাদের এই তিন সন্তানেরই জন্ম হয় যখন তারা লিভ-ইন রিলেশনসিপে ছিল। এছাড়াও আপনাদের এটাও জানিয়ে রাখি যে, এই গ্রামের মেয়েদের বিয়ের আগে লিভ-ইন করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।

ফাইল ছবি

রাজস্থানের উদয়পুরেই রয়েছে এমন পরম্পরা
নানিয়া এবং কালীর যেদিন বিয়ে হয়, সেদিনই তাদের তিন ছেলেও তাদের লিভ-ইন করা সঙ্গীনিকে বিয়ে করে নেয়। এর থেকে একটা ব্যাপার পরিষ্কার যতদিন খুশি আপনি রিলেশনসিপে থাকতে পারেন এখানে। যতদিন আপনার সঙ্গীকে বিয়ে করার ইচ্ছা হবে না ততদিন একই ছাদের নিচে তার সঙ্গে দিব্যি কাটাতে পারবেন। রাজস্থানের উদয়পুরের সিরোহী আর পালী জেলায় গরাসিয়া নামক সম্প্রদায়ের মেয়েদের বিয়ের আগেই বাচ্চা জন্ম দেয়ার কথা বলা হয়।

গরাসিয়া উপজাতির মধ্যে এই প্রথা বা পরম্পরা প্রায় বিগত ১০০০ বছর ধরে চলে আসছে। লিভ-ইন করার সময় যদি কোনো মেয়ের বাচ্চা হয় তারপর মেয়েটির সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করে সে ছেলেটিকে বিয়ে করবে কি করবে না। এই ব্যাপারে পরিবারের সদস্য বা অন্যকেউ নাক গলায় না। এদের মতে, বিয়ে যদি বংশ চালানোর জন্য হয় তাহলে নাকি বাচ্চা হয় না, কিন্তু লিভ-ইন করলে বাচ্চা হয়।

ফাইল ছবি

মেলাতে মেয়েরা ছেলে পছন্দ করে তাকে নিয়ে পালিয়ে যায়
হ্যাঁ, এদের সমাজে এরকমই পরম্পরা রয়েছে। রাজস্থান আর গুজরাটের কিছু জায়গায় এই উপজাতির মানুষদের বিশেষ মেলা বসে যেখানে যুবক যুবতীরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয় এবং পালিয়ে যায়, তারপর স্বামী-স্ত্রীর মতো একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। এই প্রথাকে ‘দাপা প্রথা’ বলা হয়। এখানকার লোকেরা এটাই মনে করে যে, একজনের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তার জীবনসাথী বেছে নেয়ার এবং দুই পরিবার বা অন্যান্য ব্যক্তির এই ব্যাপারে দখলদারী দেখানো উচিৎ নয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বিয়ের আগে সন্তান জন্ম দেয়াই এখানকার ঐতিহ্য

আপডেট টাইম : ০৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ আজকাল অবিবাহিত ছেলে-মেয়েদের প্রেম করা বা লিভ-ইন রিলেশনসিপে থাকা নতুন কিছু না। এই বিষয়গুলোই আমাদের সমাজে খারাপ নজরে দেখা হয়। কিন্তু এর থেকেও অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে ভারতে এমন জায়গা রয়েছে, যেখানে এসব কাজ খুবই স্বাভাবিক।

সামাজিক রীতিনীতি বা পরম্পরা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হয় এইটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কিছু স্থানের এই পরম্পরা আপনাকে বিস্মিত করবে। আসুন জেনে নেয়া যাক এরকমই অদ্ভুত পরম্পরার কথা-

ফাইল ছবি

লিভ-ইন করাই ঐতিহ্য
ভারতবর্ষের একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে লিভ-ইন সম্পর্কের মধ্যে বাস করা পাপ নয় কিন্তু একটি ঐতিহ্য। বিয়ে করার আগে একটি শিশুর জন্ম দেয়াও অপরাধ নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছা। এখানকার মেয়েদের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তার জীবনসঙ্গীকে ঠিকভাবে বুঝে নেয়ার এবং তারপর তাকে বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলা। কিন্তু আধুনিক যুগে এইসব কথা শুনলে মানুষ সত্যিই হয়রান হয়ে যাবে।

৭০ বছর বয়সী নানিয়া গরাসিয়া না্মের একজন মহিলা ৬০ বছর বয়সী কালীর সাথে বিয়ে করেন। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার এটাই ছিল যে, তারা বহু বছর ধরে লিভ-ইন রিলেশনসিপে ছিল এবং তাদের তিনটি সন্তানও রয়েছে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, তাদের এই তিন সন্তানেরই জন্ম হয় যখন তারা লিভ-ইন রিলেশনসিপে ছিল। এছাড়াও আপনাদের এটাও জানিয়ে রাখি যে, এই গ্রামের মেয়েদের বিয়ের আগে লিভ-ইন করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।

ফাইল ছবি

রাজস্থানের উদয়পুরেই রয়েছে এমন পরম্পরা
নানিয়া এবং কালীর যেদিন বিয়ে হয়, সেদিনই তাদের তিন ছেলেও তাদের লিভ-ইন করা সঙ্গীনিকে বিয়ে করে নেয়। এর থেকে একটা ব্যাপার পরিষ্কার যতদিন খুশি আপনি রিলেশনসিপে থাকতে পারেন এখানে। যতদিন আপনার সঙ্গীকে বিয়ে করার ইচ্ছা হবে না ততদিন একই ছাদের নিচে তার সঙ্গে দিব্যি কাটাতে পারবেন। রাজস্থানের উদয়পুরের সিরোহী আর পালী জেলায় গরাসিয়া নামক সম্প্রদায়ের মেয়েদের বিয়ের আগেই বাচ্চা জন্ম দেয়ার কথা বলা হয়।

গরাসিয়া উপজাতির মধ্যে এই প্রথা বা পরম্পরা প্রায় বিগত ১০০০ বছর ধরে চলে আসছে। লিভ-ইন করার সময় যদি কোনো মেয়ের বাচ্চা হয় তারপর মেয়েটির সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করে সে ছেলেটিকে বিয়ে করবে কি করবে না। এই ব্যাপারে পরিবারের সদস্য বা অন্যকেউ নাক গলায় না। এদের মতে, বিয়ে যদি বংশ চালানোর জন্য হয় তাহলে নাকি বাচ্চা হয় না, কিন্তু লিভ-ইন করলে বাচ্চা হয়।

ফাইল ছবি

মেলাতে মেয়েরা ছেলে পছন্দ করে তাকে নিয়ে পালিয়ে যায়
হ্যাঁ, এদের সমাজে এরকমই পরম্পরা রয়েছে। রাজস্থান আর গুজরাটের কিছু জায়গায় এই উপজাতির মানুষদের বিশেষ মেলা বসে যেখানে যুবক যুবতীরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয় এবং পালিয়ে যায়, তারপর স্বামী-স্ত্রীর মতো একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। এই প্রথাকে ‘দাপা প্রথা’ বলা হয়। এখানকার লোকেরা এটাই মনে করে যে, একজনের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তার জীবনসাথী বেছে নেয়ার এবং দুই পরিবার বা অন্যান্য ব্যক্তির এই ব্যাপারে দখলদারী দেখানো উচিৎ নয়।