ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের যে গ্রামের জনসংখ্যা ৯৭ বছর ধরে একই রয়ে গেছে

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ শুনলে হয়তো বিশ্বাস হবে না! কিন্তু এটাই সত্যি, একটি গ্রামের জনসংখ্যা ৯৭ বছর ধরে একই রয়েছে। ভারতের মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার একটি গ্রাম ধনোরা। এখানে ১৯২২ সালে জনসংখ্যা ছিল মাত্র ১৭০০ জন। আর ২০১৯ সালেও ওই গ্রামের জনসংখ্যা ১৭০০ ই আছে। অর্থাৎ গত ৯৭ বছর ধরে গ্রামের জনসংখ্যা একই।

ধনোরা এমন একটি গ্রাম যেখানে ৯৭ বছর ধরে জনসংখ্যা একই রয়েছে, অর্থাৎ এত বছরে এই গ্রামের জনসংখ্যা কখনোই ১৭০০ ছাড়িয়ে যায় নি। এর পিছনে একটা মজার গল্প আছে। এস কে মহোবিয়া জানান, ১৯২২ সালে এখানে কংগ্রেসের একটি সভা হয়েছিল। যেখানে বক্তব্য রেখেছিলেন মহাত্মা গান্ধির স্ত্রী কস্তুরবা গান্ধি। তিনি একটি স্লোগান দিয়েছিলেন। যেখানে গ্রামবাসীদের জন্য সুখী জীবনের ফর্মুলা বলে দিয়েছিলেন তিনি, ‘সুখী জীবনের মানে ছোট পরিবার অর্থাৎ সুখী পরিবার’। সেদিনের কস্তুরবা গান্ধির বলা সেই কথাটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন গ্রামবাসীরা। শুরু করেছিলেন পরিবার পরিকল্পনা।

এই গ্রামের বড়রা জানালেন কস্তুরবা গান্ধির সেই কথা গ্রামবাসীদের মনে এবং মাথায় গেঁথে গিয়েছিল। তারপর থেকেই পরিবার পরিকল্পনার বিষয়টিতে অত্যন্ত সচেতনতা দেখা যায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। ওরা পরিবার পরিকল্পনা শুরু করে তখন থেকে, বলতে গেলে প্রত্যেকটি পরিবারেই একটি বা দুটি সন্তানের বেশি তারপর থেকে আর কখনোই নেননি। এভাবেই ধীরে ধীরে গ্রামের জনসংখ্যা স্থির হতে শুরু করে। ছেলের আশায় একের পর এক সন্তান নেওয়ার রীতির যে প্রচলন ছিল সেই রীতিকেও পিছনে ফেলে একটি বা দুটি কন্যা সন্তান হওয়ার পর সন্তান নেওয়া বন্ধ করে দেন এই গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয় সাংবাদিক মায়াঙ্ক ভার্গব জানিয়েছেন, পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এই গ্রামটি এখন মডেল। ছেলে হোক বা মেয়ে দুটি বাচ্চা মানেই সুখী পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের পর এখানে লিঙ্গের অনুপাত বা ছেলে মেয়ের অনুপাত অন্য জায়গা থেকে অনেক ভালো।

এই গ্রামের এক স্বাস্থ্যকর্মী জগদীশ সিং পরিহার জানান, তাকে কোনদিনও গ্রামবাসীদের পরিবার পরিকল্পনা করার জন্য বাধ্য করতে হয়নি। এখানকার গ্রামবাসীরা এতটাই সচেতন যে দুটি বাচ্চাতেই তাদের পরিবার পরিকল্পনা সম্পন্ন করেন। সূত্র: এনডিটিভি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ভারতের যে গ্রামের জনসংখ্যা ৯৭ বছর ধরে একই রয়ে গেছে

আপডেট টাইম : ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ শুনলে হয়তো বিশ্বাস হবে না! কিন্তু এটাই সত্যি, একটি গ্রামের জনসংখ্যা ৯৭ বছর ধরে একই রয়েছে। ভারতের মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার একটি গ্রাম ধনোরা। এখানে ১৯২২ সালে জনসংখ্যা ছিল মাত্র ১৭০০ জন। আর ২০১৯ সালেও ওই গ্রামের জনসংখ্যা ১৭০০ ই আছে। অর্থাৎ গত ৯৭ বছর ধরে গ্রামের জনসংখ্যা একই।

ধনোরা এমন একটি গ্রাম যেখানে ৯৭ বছর ধরে জনসংখ্যা একই রয়েছে, অর্থাৎ এত বছরে এই গ্রামের জনসংখ্যা কখনোই ১৭০০ ছাড়িয়ে যায় নি। এর পিছনে একটা মজার গল্প আছে। এস কে মহোবিয়া জানান, ১৯২২ সালে এখানে কংগ্রেসের একটি সভা হয়েছিল। যেখানে বক্তব্য রেখেছিলেন মহাত্মা গান্ধির স্ত্রী কস্তুরবা গান্ধি। তিনি একটি স্লোগান দিয়েছিলেন। যেখানে গ্রামবাসীদের জন্য সুখী জীবনের ফর্মুলা বলে দিয়েছিলেন তিনি, ‘সুখী জীবনের মানে ছোট পরিবার অর্থাৎ সুখী পরিবার’। সেদিনের কস্তুরবা গান্ধির বলা সেই কথাটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন গ্রামবাসীরা। শুরু করেছিলেন পরিবার পরিকল্পনা।

এই গ্রামের বড়রা জানালেন কস্তুরবা গান্ধির সেই কথা গ্রামবাসীদের মনে এবং মাথায় গেঁথে গিয়েছিল। তারপর থেকেই পরিবার পরিকল্পনার বিষয়টিতে অত্যন্ত সচেতনতা দেখা যায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। ওরা পরিবার পরিকল্পনা শুরু করে তখন থেকে, বলতে গেলে প্রত্যেকটি পরিবারেই একটি বা দুটি সন্তানের বেশি তারপর থেকে আর কখনোই নেননি। এভাবেই ধীরে ধীরে গ্রামের জনসংখ্যা স্থির হতে শুরু করে। ছেলের আশায় একের পর এক সন্তান নেওয়ার রীতির যে প্রচলন ছিল সেই রীতিকেও পিছনে ফেলে একটি বা দুটি কন্যা সন্তান হওয়ার পর সন্তান নেওয়া বন্ধ করে দেন এই গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয় সাংবাদিক মায়াঙ্ক ভার্গব জানিয়েছেন, পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এই গ্রামটি এখন মডেল। ছেলে হোক বা মেয়ে দুটি বাচ্চা মানেই সুখী পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের পর এখানে লিঙ্গের অনুপাত বা ছেলে মেয়ের অনুপাত অন্য জায়গা থেকে অনেক ভালো।

এই গ্রামের এক স্বাস্থ্যকর্মী জগদীশ সিং পরিহার জানান, তাকে কোনদিনও গ্রামবাসীদের পরিবার পরিকল্পনা করার জন্য বাধ্য করতে হয়নি। এখানকার গ্রামবাসীরা এতটাই সচেতন যে দুটি বাচ্চাতেই তাদের পরিবার পরিকল্পনা সম্পন্ন করেন। সূত্র: এনডিটিভি।