বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ মানুষ যত বড় গুনাহ করে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নিজেকে নিরাপদ ও শক্তিশালী মনে করা। এটি চিন্তা ও মননের গুনাহ। কুফুরীর অংশ। এর বিপরীতে ঈমানী চেতনা হচ্ছে প্রতিটি নিঃশ্বাস, প্রতিটি মুহূর্ত মানুষ আল্লাহর রহমত, দয়া ও অব্যাহত আনুক‚ল্যের ভিখারী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন মুসলিম বিশ্বের নানাস্থানে অমানবিক হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, নারী, শিশু, বৃদ্ধ, রোগী কেউ তাদের হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। যখন তারা নির্বিচারে হাসপাতালে, কিন্ডারগার্ডেনে, বরযাত্রীর ওপর, মসজিদ ও হেফজখানায় বোমাবর্ষণ করছে, তখন সারা মুসলিম বিশ্বে অসহায় মুসলিমরা কুনুতে নাজেলা পড়েছেন।
দুনিয়ার মানুষ কেবল দোয়া করেছে। মুসলমানদের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলেছিলেন, যাদের কেউ শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা রাখে না, মুজাহিদরা জিহাদ চালিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের গর্বকে খর্ব করবে। আল্লাহর সৈনিকরা-এর প্রতিউত্তর দিবে।
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, আর তোমার প্রভুর সৈনিকদের সম্পর্কে কেবল তিনিই জানেন। আর কেউ জানে না। (আল কোরআন)। নবী করিম সা. বলেছেন, দোয়া মুমিনদের অস্ত্র। (আল হাদিস)।
মুফাসসিরগণ বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আল্লাহর সৈনিক। তিনি জল, স্থল ও অন্তরীক্ষ ব্যবহার করে যুগে যুগে নাফরমান জাতিকে শাস্তি দিয়েছেন। বুঝিয়েছেন যে, মানুষ কোনো ক্ষমতাই রাখে না। ক্ষমতা তো দূরের কথা, আল্লাহ পরিবেশ বজায় না রাখলে বিশ্ব চরাচরে মানুষ জীবনধারণও করতে পারবে না। অনেক সময় অসহায় মানুষ জানে না সে কী করবে।
যদি বলা হয় দোয়া করো, তাহলে দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে চোখের পানি ফেলে কিছু মানুষ দোয়াও করতে চায় না। এদের মনে বস্তুবাদ বেশি প্রবল। আধ্যাত্মিকতা দুর্বল। আধুনিক মনা অনেক মুসলিম নেতাও দোয়ার গুরুত্ব বুঝতে চান না। অথচ, নবী সা. দোয়াকে বলেছেন, ঈমানদারের অস্ত্র।
এক হাদিসে আছে, আল্লাহ বলেন, আমি সেসব বন্দার জন্য নিজে কৌশল করি। যাদের জন্য কোনো কৌশলি নেই। এরপর এমনভাবে ফলাফল বের করে আনি, দুনিয়ার কৌশলকারীরা হতভম্ব হয়ে যায়। আমার কৌশলই জয়ী হয়। তবে, বন্দার কাছে মনে হয়, সবকিছু এত দেরীতে হচ্ছে কেন। (হাদিসে কুদসীর ভাবানুবাদ)।
আমাদের নবী সা.-এর বিশেষ মর্যাদা হচ্ছে, তার উম্মতের ওপর প্রতিকী শাস্তি আসবে, আবার তওবার সুযোগ দেয়া হবে। অতীত জাতিসমূহের মতো গজব দিয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়া হবে না।
কেনিয়ায় ফসলের ক্ষেতে পঙ্গপালের যে আক্রমণ তা এখন গোটা দেশকে আচ্ছন্ন করে ফেলছে। অস্ট্রেলিয়ায় কেয়ামত সদৃশ দাবানল পৃথিবীবাসীকে হতবাক করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে গত বিশ বছরে বড় বড় ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা তাদের সাজানো জীবনযাত্রাকে বার বার তছনছ করেছে।
বর্তমানে চলছে চীনসহ বিশ্বের বহু রাষ্ট্রে করোনা আতঙ্ক। একটি শহরেই দুই কোটি মানুষ পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন। অসহায়ের মতো বহু মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। তাদের লাশ নেয়ার লোকেরা ভীত সন্ত্রস্ত।
চীনের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বহু দেশের। দক্ষিণ কোরিয়ায় এ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। চীনের ৩৪টি প্রদেশই আতঙ্কের আওতায় এসে গেছে। ঈমানদাররা এসবে যত না ভয় পায়, তারচেয়ে বেশি ঈমানী উপলব্ধি তাদের বাড়ে। গুনাহ খাতা থেকে তারা তওবা করে।
জীবন মৃত্যু আল্লাহর হাতে এ বিশ্বাস থাকায় তাদের ততটা অসহায় বোধ হয় না। সমস্যা হয় অবিশ্বাসী নাস্তিকদের। তাদের জন্য এসব নিদর্শন আল্লাহর অপরিসীম শক্তি ও ক্ষমতার নিদর্শন। তাদের প্রতি এসব আল্লাহর সতর্কবাণী। উন্মুক্ত দাওয়াত। যেন তারা আল্লাহকে চিনে। তার প্রতি ঈমান আনে।