ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রকৃতির রূপে সজ্জিত নামচি, দক্ষিণ সিকিম

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ নামচি-রাবংলা-ছালামথাং-সামাটার। কোথাও ‘চারধাম’, কোথাও মনকাড়া চা-বাগান, উপত্যকা, মনোরম নদী সঙ্গম। সিকিমের দক্ষিণ প্রান্ত আপনাকে মুগ্ধ করবেই। ৪৪০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত নামচি হল দক্ষিণ সিকিমের সদর শহর। স্বাভাবিকভাবেই স্কুল-কলেজ, দোকানপাট, রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল, হোটেল—সব মিলিয়ে এক জমজমাট পাহাড়ি শহরের রূপেই সজ্জিত নামচি। 

এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা সমেত অন্যান্য তুষারশৃঙ্গের অপরূপ দৃশ্য যেমন দেখা যায়, তেমনই চোখে পড়ে বিস্তীর্ণ সবুজ উপত্যকার এক সুন্দর দৃশ্য। নামচি ও তার আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখতে অন্তত একটা গোটা দিন সময় লাগবে।

শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত সামদ্রুপচে। এখানে ১৩৫ ফুট উঁচু গুরু পদ্মসম্ভবের মূর্তিটি সত্যিই দেখার মতো। সামদ্রুপচের ঠিক নীচের ঢালেই রয়েছে রক গার্ডেন। সুন্দর এই পিকনিক স্পটটিও দেখে নিন একযাত্রাতেই। এর পর আলে গুম্ফা, বাইচুং স্টেডিয়াম দেখে চলে যান সোলোফোকে। এখানেই গড়ে উঠেছে সেই বিখ্যাত ‘চারধাম’।

নামচি শহর থেকে দূরত্ব মাত্রই ৫ কিলোমিটার। ২০১১ সালে ৫৬ একর জমির উপর নির্মিত হয়েছিল এই চারধাম। ভারতের চারপ্রান্তের চারটি বিখ্যাত মন্দিরের অনুকরণে এখানে নির্মাণ হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ, গুজরাতের দ্বারকা, পুরীর জগন্নাথধাম (সব ক’টিই বিষ্ণুমন্দির) ও তামিলনাড়ুর রামেশ্বরম (শিবমন্দির) মন্দির। এছাড়া একটি ১০৮ ফুট উঁচু শিবমন্দির রয়েছে যার উপরে অধিষ্ঠিত আছেন ৮৭ ফুট উচ্চতার শিবমূর্তি। রকমারি ফুলের বাগান দিয়ে ঘেরা জায়গাটি বর্তমানে এক জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট হয়ে উঠেছে।

হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড থেকে নির্মেঘ আকাশে তুষারশৃঙ্গের এক মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে। সেখান থেকে চলে আসুন তারেভির। নামচি শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই তারেভির হল প্রকৃতপক্ষে মোরগঝুঁটির মতো দেখতে একটা ক্লিফ। এখান থেকে উন্মুক্ত চরাচরে বহু দূর পর্যন্ত চোখ চলে যায়। সবুজ নদী উপত্যকার মনোরম দৃশ্য, তিস্তা ও রঙ্গিত নদীর সঙ্গম, পাহাড়ের ঢালে চা-বাগানের সৌন্দর্য, সবই দেখতে পাবেন ভিউপয়েন্টে দাঁড়িয়ে। ক্লিফের উপর বাঁধানো রাস্তা ধরে (অনেকটা যেন চিনের প্রাচীর) শেষ প্রান্ত পর্যন্ত চলেও যেতে পারেন পায়ে হেঁটে। অপূর্ব দৃশ্য দেখতে পাবেন সেখান থেকেও।

নামচি থেকে খুব কাছেই অবস্থিত টেমি টি গার্ডেন। দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। পাহাড়ের ঢালে তরঙ্গায়িত চা-বাগানের চোখজুড়নো দৃশ্য আকৃষ্ট করবেই।

যেভাবে যাবেন: নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে নামচির দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ৩ ঘণ্টা। পুরো গাড়ি রিজার্ভ করলে ভাড়া পড়বে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। কম খরচে আসতে চাইলে শিলিগুড়ি এসএনটি বাসস্ট্যান্ড থেকে শেয়ার জিপে নামচি আসতে পারেন। মাথাপিছু ভাড়া পড়বে ১৫০-২০০ টাকা। নামচি থেকে রাবংলার দূরত্ব ২৬ কিলোমিটার, গ্যাংটকের দূরত্ব হল ৮০ কিলোমিটার।
Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

প্রকৃতির রূপে সজ্জিত নামচি, দক্ষিণ সিকিম

আপডেট টাইম : ০১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ নামচি-রাবংলা-ছালামথাং-সামাটার। কোথাও ‘চারধাম’, কোথাও মনকাড়া চা-বাগান, উপত্যকা, মনোরম নদী সঙ্গম। সিকিমের দক্ষিণ প্রান্ত আপনাকে মুগ্ধ করবেই। ৪৪০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত নামচি হল দক্ষিণ সিকিমের সদর শহর। স্বাভাবিকভাবেই স্কুল-কলেজ, দোকানপাট, রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল, হোটেল—সব মিলিয়ে এক জমজমাট পাহাড়ি শহরের রূপেই সজ্জিত নামচি। 

এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা সমেত অন্যান্য তুষারশৃঙ্গের অপরূপ দৃশ্য যেমন দেখা যায়, তেমনই চোখে পড়ে বিস্তীর্ণ সবুজ উপত্যকার এক সুন্দর দৃশ্য। নামচি ও তার আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখতে অন্তত একটা গোটা দিন সময় লাগবে।

শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত সামদ্রুপচে। এখানে ১৩৫ ফুট উঁচু গুরু পদ্মসম্ভবের মূর্তিটি সত্যিই দেখার মতো। সামদ্রুপচের ঠিক নীচের ঢালেই রয়েছে রক গার্ডেন। সুন্দর এই পিকনিক স্পটটিও দেখে নিন একযাত্রাতেই। এর পর আলে গুম্ফা, বাইচুং স্টেডিয়াম দেখে চলে যান সোলোফোকে। এখানেই গড়ে উঠেছে সেই বিখ্যাত ‘চারধাম’।

নামচি শহর থেকে দূরত্ব মাত্রই ৫ কিলোমিটার। ২০১১ সালে ৫৬ একর জমির উপর নির্মিত হয়েছিল এই চারধাম। ভারতের চারপ্রান্তের চারটি বিখ্যাত মন্দিরের অনুকরণে এখানে নির্মাণ হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ, গুজরাতের দ্বারকা, পুরীর জগন্নাথধাম (সব ক’টিই বিষ্ণুমন্দির) ও তামিলনাড়ুর রামেশ্বরম (শিবমন্দির) মন্দির। এছাড়া একটি ১০৮ ফুট উঁচু শিবমন্দির রয়েছে যার উপরে অধিষ্ঠিত আছেন ৮৭ ফুট উচ্চতার শিবমূর্তি। রকমারি ফুলের বাগান দিয়ে ঘেরা জায়গাটি বর্তমানে এক জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট হয়ে উঠেছে।

হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড থেকে নির্মেঘ আকাশে তুষারশৃঙ্গের এক মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে। সেখান থেকে চলে আসুন তারেভির। নামচি শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই তারেভির হল প্রকৃতপক্ষে মোরগঝুঁটির মতো দেখতে একটা ক্লিফ। এখান থেকে উন্মুক্ত চরাচরে বহু দূর পর্যন্ত চোখ চলে যায়। সবুজ নদী উপত্যকার মনোরম দৃশ্য, তিস্তা ও রঙ্গিত নদীর সঙ্গম, পাহাড়ের ঢালে চা-বাগানের সৌন্দর্য, সবই দেখতে পাবেন ভিউপয়েন্টে দাঁড়িয়ে। ক্লিফের উপর বাঁধানো রাস্তা ধরে (অনেকটা যেন চিনের প্রাচীর) শেষ প্রান্ত পর্যন্ত চলেও যেতে পারেন পায়ে হেঁটে। অপূর্ব দৃশ্য দেখতে পাবেন সেখান থেকেও।

নামচি থেকে খুব কাছেই অবস্থিত টেমি টি গার্ডেন। দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। পাহাড়ের ঢালে তরঙ্গায়িত চা-বাগানের চোখজুড়নো দৃশ্য আকৃষ্ট করবেই।

যেভাবে যাবেন: নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে নামচির দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ৩ ঘণ্টা। পুরো গাড়ি রিজার্ভ করলে ভাড়া পড়বে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। কম খরচে আসতে চাইলে শিলিগুড়ি এসএনটি বাসস্ট্যান্ড থেকে শেয়ার জিপে নামচি আসতে পারেন। মাথাপিছু ভাড়া পড়বে ১৫০-২০০ টাকা। নামচি থেকে রাবংলার দূরত্ব ২৬ কিলোমিটার, গ্যাংটকের দূরত্ব হল ৮০ কিলোমিটার।