ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখার দাবি আন্দোলনকারীদের

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখার দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র অন্যতম সমন্বয়ক সার্জিস আলম এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

“আমাদের আজকের সংবাদ সম্মেলনের মূলকথা:

১. আমরা সর্বোচ্চ ৫% কোটার কথা প্রস্তাব করেছি। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে৷কোনোভাবেই নাতিপুতি নামক পোষ্যকোটা ছাত্রসমাজ মানবে না৷(জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ও সেবা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে অধিক সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন হলে আমরা সেটিকে শতভাগ সমর্থন করি। ) অন্যান্য কোটাগুলোকে এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশের পার্সপেক্টিভে প্রাসঙ্গিক মনে করিনা৷

২. আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে, সরকারের কাছে৷যখনই সরকার কিংবা নির্বাহী বিভাগ কোনো ত্রুটিমুক্ত নির্বাহী আদেশ বা পরিপত্র জারির মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে কমিশন গঠন করার নির্দেশ দিবেন এবং যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তখনই আমরা রাজপথ ছেড়ে পড়ার টেবিলে ফিরে আসবো৷

৩. আমরা হাইকোর্টে কোনো রিট করিনি৷যারা করেছেন তারা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ নয়৷তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ও সংক্ষুব্ধ হয়ে রিট করেছে৷চাইলে আমরাও করতে পারতাম৷কিন্তু একবার হাইকোর্টে গেলে তার রায় না আসা পর্যন্ত হাইকোর্টের উপর আস্থা রেখে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করতে হতো৷কিন্তু হাইকোর্ট থেকে শুধু ‘১৮’র পরিপত্র বহাল আমাদের প্রাণের দাবিটিকে ধারন করে না৷

৪. হাইকোর্টে যদি ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালও করা হয় তারপরও সেটি আমাদের এক দফা দাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটায় না৷কারণ আমরা কথা বলছি সরকারি চাকরির সকল গ্রেড নিয়ে৷আর ২০১৮’র পরিপত্রটি শুধু ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরি নিয়ে৷

তাছাড়া এই পরিপত্রটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল বলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও হাইকোর্ট সেটি অবৈধ ঘোষণা করতে পেরেছে৷ভবিষ্যতে যে সেটা আবার অন্য কারো রিটের মাধ্যমে অবৈধ ঘোষণা হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই৷তাছাড়া সাংবিধানিকভাবে অনগ্রসর বলতে যে প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে আমরা বোঝাচ্ছি তাদের জন্যও কোনো কোটা সেখানে নেই৷ফলে ভবিষ্যতে এই ত্রুটিগুলোতে আঘাত করে আবার এই পরিপত্রটাকে অবৈধ ঘোষণা করা হতে পারে৷

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: অমাদের একটাই দাবি৷সকল গ্রেডে কোটা সংস্কার৷আমাদের দেশে ১ম ও ২য় শ্রেণিতে যে জব রয়েছে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিতে সে তুলনায় জব অনেক বেশি৷আবার ৩য়, ৪র্থ শ্রেণিতে কোটাও অনেক বেশি৷ তার মানে এখানে সম্পৃক্ত মানুষের সংখ্যা অনেক অনেক বেশি৷এতো বড় একটি জনসংখ্যাকে ভুলে গিয়ে শুধু ১ম ও ২য় শ্রেণির পরিপত্র বহাল নিয়ে আমরা যদি খুশি হয়ে যাই তাহলে এটা হবে স্বার্থপর ও অবিবেচকের মতো আচরণ৷ যেটা আমরা করবো না, করতে পারি না৷

আমরা চাই ২০১৮ কিংবা ২০২৪ আর ফিরে না আসুক৷কোটা নিয়ে সকল সমস্যা চিরদিনের জন্য সমাহিত হোক৷ মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে উঠুক৷

আমাদের এক দফা দাবি: সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে (সর্বোচ্চ ৫%) এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।”

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখার দাবি আন্দোলনকারীদের

আপডেট টাইম : ০৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখার দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র অন্যতম সমন্বয়ক সার্জিস আলম এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

“আমাদের আজকের সংবাদ সম্মেলনের মূলকথা:

১. আমরা সর্বোচ্চ ৫% কোটার কথা প্রস্তাব করেছি। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে৷কোনোভাবেই নাতিপুতি নামক পোষ্যকোটা ছাত্রসমাজ মানবে না৷(জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ও সেবা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে অধিক সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন হলে আমরা সেটিকে শতভাগ সমর্থন করি। ) অন্যান্য কোটাগুলোকে এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশের পার্সপেক্টিভে প্রাসঙ্গিক মনে করিনা৷

২. আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে, সরকারের কাছে৷যখনই সরকার কিংবা নির্বাহী বিভাগ কোনো ত্রুটিমুক্ত নির্বাহী আদেশ বা পরিপত্র জারির মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে কমিশন গঠন করার নির্দেশ দিবেন এবং যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তখনই আমরা রাজপথ ছেড়ে পড়ার টেবিলে ফিরে আসবো৷

৩. আমরা হাইকোর্টে কোনো রিট করিনি৷যারা করেছেন তারা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ নয়৷তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ও সংক্ষুব্ধ হয়ে রিট করেছে৷চাইলে আমরাও করতে পারতাম৷কিন্তু একবার হাইকোর্টে গেলে তার রায় না আসা পর্যন্ত হাইকোর্টের উপর আস্থা রেখে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করতে হতো৷কিন্তু হাইকোর্ট থেকে শুধু ‘১৮’র পরিপত্র বহাল আমাদের প্রাণের দাবিটিকে ধারন করে না৷

৪. হাইকোর্টে যদি ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালও করা হয় তারপরও সেটি আমাদের এক দফা দাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটায় না৷কারণ আমরা কথা বলছি সরকারি চাকরির সকল গ্রেড নিয়ে৷আর ২০১৮’র পরিপত্রটি শুধু ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরি নিয়ে৷

তাছাড়া এই পরিপত্রটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল বলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও হাইকোর্ট সেটি অবৈধ ঘোষণা করতে পেরেছে৷ভবিষ্যতে যে সেটা আবার অন্য কারো রিটের মাধ্যমে অবৈধ ঘোষণা হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই৷তাছাড়া সাংবিধানিকভাবে অনগ্রসর বলতে যে প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে আমরা বোঝাচ্ছি তাদের জন্যও কোনো কোটা সেখানে নেই৷ফলে ভবিষ্যতে এই ত্রুটিগুলোতে আঘাত করে আবার এই পরিপত্রটাকে অবৈধ ঘোষণা করা হতে পারে৷

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: অমাদের একটাই দাবি৷সকল গ্রেডে কোটা সংস্কার৷আমাদের দেশে ১ম ও ২য় শ্রেণিতে যে জব রয়েছে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিতে সে তুলনায় জব অনেক বেশি৷আবার ৩য়, ৪র্থ শ্রেণিতে কোটাও অনেক বেশি৷ তার মানে এখানে সম্পৃক্ত মানুষের সংখ্যা অনেক অনেক বেশি৷এতো বড় একটি জনসংখ্যাকে ভুলে গিয়ে শুধু ১ম ও ২য় শ্রেণির পরিপত্র বহাল নিয়ে আমরা যদি খুশি হয়ে যাই তাহলে এটা হবে স্বার্থপর ও অবিবেচকের মতো আচরণ৷ যেটা আমরা করবো না, করতে পারি না৷

আমরা চাই ২০১৮ কিংবা ২০২৪ আর ফিরে না আসুক৷কোটা নিয়ে সকল সমস্যা চিরদিনের জন্য সমাহিত হোক৷ মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে উঠুক৷

আমাদের এক দফা দাবি: সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে (সর্বোচ্চ ৫%) এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।”