ঢাকা , বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমনের ক্ষেতে ইঁদুর আর কারেন্ট পোকার আক্রমণ, দিশেহারা কৃষক

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলাজুড়ে আমন ধান ক্ষেতে একদিকে ইঁদুর আর অন্যদিকে কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেও প্রতিরোধ করতে পারছেন না তারা। চোখের সামনে সোনার ফসল শেষ হতে দেখে অনেকেই ভেঙে পড়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাওড়ের ফসলের মাঠে যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই হাওয়ার তালে দুলছে আমন ধানের শীষ। এর মাঝে বেশ কিছু জমিতে দেখা গেছে,  ইঁদুর আর কারেন্ট পোকার ধংসযজ্ঞ। একদিকে ইঁদুর কেটে প্রায় পরিপক্ক হয়ে আসা গাছের ধান সাবাড় করছে অপরদিকে কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধানগাছ শুকিয়ে মাটিতে নুয়ে পড়ছে ফসলের মাঠে।

প্রকৃতি অনুকূল থাকায় ভাল ফলনের আশা করছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু হঠাৎ করেই উপজেলার কারেন্ট পোকা আর ইঁদুরের আক্রমণে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিরূপ পরিস্থিতিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

কেন্দুয়া কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে।

মাসকা ইউপির বাইগনি কৃষক আবু সাদেক বলেন, মাঠের বেশিরভাগ খেতেই কমবেশি পোকার আক্রমণ হয়েছে। ইঁদুরে কাটছে। কীটনাশক ব্যবসায়ী ও কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে নানা ধরনের ওষুধ স্প্রে করছি কিন্তু কোনো কিছুই কাজে আসছে না।

বিপ্রবর্গ গ্রামের মাইন উদ্দিন জানান, তিনি ২০ কাঠা (২০০ শতক) জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। প্রায় ৮ কাঠা জমিতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে ধানগাছ শুকিয়ে মাটিতে নুয়ে পড়ছে। জমিগুলো এতোদিন ভালই ছিল, এখন খারাপ অবস্থা। কোনো কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ফসলের মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উৎপাদনও কমে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় পোকার আক্রমণের কথা শোনা যাচ্ছে। কারেন্ট পোকা বাদামি ঘাসফড়িং প্রজাতির। গাছের গোড়া থেকে গাছের রস চুষে নেয়। ফলে গাছ শুকিয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ে। প্রত্যেক এলাকায় আমাদের উপ-সহকারী কৃষি অফিসারগণ কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করছেন। আশাকরি উৎপাদনে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

আমনের ক্ষেতে ইঁদুর আর কারেন্ট পোকার আক্রমণ, দিশেহারা কৃষক

আপডেট টাইম : ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলাজুড়ে আমন ধান ক্ষেতে একদিকে ইঁদুর আর অন্যদিকে কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেও প্রতিরোধ করতে পারছেন না তারা। চোখের সামনে সোনার ফসল শেষ হতে দেখে অনেকেই ভেঙে পড়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাওড়ের ফসলের মাঠে যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই হাওয়ার তালে দুলছে আমন ধানের শীষ। এর মাঝে বেশ কিছু জমিতে দেখা গেছে,  ইঁদুর আর কারেন্ট পোকার ধংসযজ্ঞ। একদিকে ইঁদুর কেটে প্রায় পরিপক্ক হয়ে আসা গাছের ধান সাবাড় করছে অপরদিকে কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধানগাছ শুকিয়ে মাটিতে নুয়ে পড়ছে ফসলের মাঠে।

প্রকৃতি অনুকূল থাকায় ভাল ফলনের আশা করছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু হঠাৎ করেই উপজেলার কারেন্ট পোকা আর ইঁদুরের আক্রমণে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিরূপ পরিস্থিতিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

কেন্দুয়া কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে।

মাসকা ইউপির বাইগনি কৃষক আবু সাদেক বলেন, মাঠের বেশিরভাগ খেতেই কমবেশি পোকার আক্রমণ হয়েছে। ইঁদুরে কাটছে। কীটনাশক ব্যবসায়ী ও কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে নানা ধরনের ওষুধ স্প্রে করছি কিন্তু কোনো কিছুই কাজে আসছে না।

বিপ্রবর্গ গ্রামের মাইন উদ্দিন জানান, তিনি ২০ কাঠা (২০০ শতক) জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। প্রায় ৮ কাঠা জমিতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে ধানগাছ শুকিয়ে মাটিতে নুয়ে পড়ছে। জমিগুলো এতোদিন ভালই ছিল, এখন খারাপ অবস্থা। কোনো কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ফসলের মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উৎপাদনও কমে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় পোকার আক্রমণের কথা শোনা যাচ্ছে। কারেন্ট পোকা বাদামি ঘাসফড়িং প্রজাতির। গাছের গোড়া থেকে গাছের রস চুষে নেয়। ফলে গাছ শুকিয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ে। প্রত্যেক এলাকায় আমাদের উপ-সহকারী কৃষি অফিসারগণ কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করছেন। আশাকরি উৎপাদনে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না।