টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জুবায়ের ও সাদপন্থীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিনজন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।
আজ বুধবার ভোররাত ৪টার দিকে ইজতেমার ময়দান দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের আমিনুল ইসলাম বাচ্চু মিয়া (৭০)। ঢাকার দক্ষিণ খানের বেড়াইদ এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০) ও আরেকজন হলেন বগুড়া জেলার তাজুল ইসলাম (৭ি।
নিহত আমিনুল ইসলাম বাচ্চুর লাশ শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র ব্রাদার জানান, নিহত তিনজনের মধ্যে দুইজন হাসপাতালে এবং একজন ঢাকা নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে মারা যান।
আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে, তারা হলেন হান্নান (৫৫) বেগডুবি গাজীপুর, দেলোয়ার হোসেন (৫৬) চাঁদপুর, খোরশেদ আলম (৫০), ফয়সাল (১৮), মারকাজুল উলুম আস্বরিয়া মাদ্রাসার ছাত্র, আলাউদ্দিন (৩৫) পিতা নিজরুল ইসলাম, দেবিদ্বার কুমিল্লা ও রিশাদ (৩০)।
এদিকে জুবায়ের পন্থিদের মধ্যে আহতরা হলেন নুরুল হাকিম (৩০), সালাউদ্দিন ভূঁইয়া (৫০), সাদ (২১),ও সিয়াম( ২৪)।
তাবলিগ জামায়াত বাংলাদেশ (শুরায়ী নেজাম) জুবায়েরপন্থীর মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বুধবার ভোর ৪টায় আমাদের ঘুমন্ত মুসল্লি ও সাথী ভাইদের ওপর সাদপন্থীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের এক ভাইকে খুন করেছেন এবং অনেককে হত্যার উদ্দেশ্যে রক্তাক্ত করেছেন। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের নাম-পরিচয় গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’
ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসকান্দার হাবিবুর রহমান কে বলেন, ‘বুধবার চারটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে এতে এই পর্যন্ত কত জন মুসল্লি মারা গেছে তার সংখ্যা জানা যায়নি, বিস্তারিত পরে জানানো হবে। আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি হিসেবে ৩ ডিসেম্বর মাওলানা জোবায়েরপন্থীদের জোর ইজতেমা শেষ হয়েছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর সাদপন্থীদের জোর ইজতেমা আয়োজন করার উদ্দেশ্যে ইজতেমার মাঠ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনসহ জুবায়েরপন্থীদের অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা ইজতেমা মাঠ কোনো অবস্থাতেই সাদপন্থীদেরকে বুঝিয়ে দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিকবার হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।