ফেসবুকে পরিচয়, দুই বছরের প্রেম। পাড়ি দিতে হয়েছে প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার দূরত্ব। তবুও ভালোবাসার কাছে হার মানল সব বাধা। ধর্ম, দেশ, সংস্কৃতি—কোনোকিছুই তাদের প্রেমের পথে অন্তরায় হতে পারেনি।
ইউক্রেনের নাগরিক অ্যান্দ্রো প্রকিপ। এখন তিনি মোহাম্মদ প্রকিপ। আর তার জীবনসঙ্গিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার কালাছড়া গ্রামের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার, যিনি এখন পরিচিত বৃষ্টি প্রকিপ নামে।
ফেসবুকে শুরু হওয়া এ ভালোবাসার গল্পের শেষ অধ্যায় লিখিত হয়েছে বিয়ের মাধ্যমে। দুই বছর ধরে তারা একে অপরকে চেনার পর ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে এসে বৃষ্টির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন প্রকিপ।
বৃষ্টি জানান, ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠানোর পর থেকেই প্রকিপের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ হয়। ধীরে ধীরে তৈরি হয় গভীর সম্পর্ক। প্রকিপ প্রথম থেকেই তার প্রতি আন্তরিক ছিল। তিনি বারবার বলতেন, বৃষ্টি তার জীবনের অংশ হবে। এই প্রতিশ্রুতিই তাকে আকৃষ্ট করে।
অন্যদিকে প্রকিপ জানান, বৃষ্টির প্রতি তার ভালোবাসা এবং বাংলাদেশি সংস্কৃতি তাকে ভীষণ টানে। ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হওয়ার বিষয়টিও তাকে অনুপ্রাণিত করে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনার বিষয়ে বৃষ্টি জানান, প্রকিপের সঙ্গে বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তারা একে অপরের সঙ্গে জীবন কাটাতে প্রস্তুত। প্রকিপ বলেন, বাংলাদেশ খুবই সুন্দর। আমি এখানে ভালো আছি। বৃষ্টিকে পেয়ে আমি অনেক খুশি।
এদিকে কালাছড়া গ্রামের বাসিন্দারা এই প্রেমের গল্পকে ঘিরে বেশ উৎসাহী। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরহাদ আলী জানান, দূরদেশের মানুষ বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেছে এটা গ্রামের মানুষের জন্য একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। তাদের দেখতে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন ভিড় করছেন।
প্রেম যে সত্যিই সীমাহীন, প্রকিপ ও বৃষ্টির গল্প তারই প্রমাণ। এই দম্পতির সুখী জীবন কামনা করেন সবাই।