বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কাঠের সেতু। মানুষ উঠলে নড়তে থাকে। ধরার কোনো রেলিং নেই। তাও পাটাতন ভাঙা। ভয়ে ভয়ে চলে পারাপার। আবার সেতু পাটাতনে পা ঢুকে ও পড়ে আহত হয়েছেন অনেকে। এই হাল গফরগাঁওয়ের রসুলপুর ইউনিয়নের সান্দিয়াইন গ্রামের শীলা নদীর উপর নির্মিত সেতুর। এ নড়বড়ে সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন সাত গ্রামের মানুষ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় এই চিত্র।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রসুলপুর ইউনিয়নের সান্দিয়াইন, পাড়া সান্দিয়াইন, রসুলপুর, ছয়ানী রসুলপুর, নামা লক্ষনপুর, বাড়া ও চিলাকান্দা গ্রামের লোকজন চলাচল করে থাকেন। এছাড়াও স্থানীয় সান্দিয়াইন বুলবুলের বাজার, সান্দিয়াইন ও পাড়া সান্দিয়াইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসুলপুর ও বাড়বাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বখুরা দাখিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা সদরে যেতে এই কাঠের সেতু পার হতে হয়।
সান্দিয়াইন গ্রামের হাবিবুর রহমান (৭০), আক্কাছ আলী (৫৫) এবং সূর্যত আলী (৬০) জানান, তিন বছর আগে নিন্ম মানের কাঠ দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর পর আর সংস্কার হয়নি। ফলে পাটাতন ও রেলিং ভেঙ্গে পড়েছে অনেক আগেই। সেতুটিতে উঠার পর হেলতে ও দুলতে থাকে। সেতুর কোন কোন স্থানে অনেকটা জায়গাজুড়ে পাটাতন না থাকায় কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের লাফিয়ে পার হতে হয়। এতে করে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
একই গ্রামের বাসিন্দা মোজ্জাম্মেল হক (৬০) ও মাজহারুল ইসলাম (৫০) বলেন, এখানকার স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা পড়–য়া শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের হাটবাজারসহ বিভিন্নস্থানে যাতায়াত করতে ঝুঁকিপূর্ণ এই কাঠের সেতুই ভরসা।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সূত্র জানা যায়, ২০১৫ সালে ইউনিয়ন এলজিএসপির বরাদ্ধ থেকে কাঠের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এরপর আর সংস্কার হয়নি।
পাড়া সান্দিয়াইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, সেতুর বেশির ভাগেই পাটতন ভেঙ্গে গেছে। যতটুকু বাকি আছে সেসব কাঠগুলো নরম হয়ে গেছে। তাই আমরা শিক্ষকরাও ওই সেতু দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভয়ে থাকি।
স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, প্রতিদিন অনেক শিশু-কিশোর সেতুর ওপারে উত্তর সান্দিয়াইন ও পাড়া সান্দিয়াইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসুলপুর ও বাড়বাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বখুরা দাখিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পড়ালেখা করছে। তারা প্রতিদিন চরম ঝুঁকি নিয়ে কাঠের সেতুটি পার হয়। দীর্ঘদিন যাবত এখানে স্থায়ী একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবী আসলেও এখনো কিছুই হয়নি।
এ প্রসঙ্গে রসুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সেতুটি মেরামতের কোন উদ্যোগে নেয়া হয়নি। সেতুটি নির্মাণকালে নিন্ম মানের কাঠ দিয়ে তৈরি করায় সেতুর পাটাতন, পালা ও রেলিং পচে গেছে। চলতি এলজিএসপি থেকে সেতুটি মেরামতের জন্য প্রকল্প দেয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগির মেরামত কাজ শুরু হবে।