স্বাদ, পুষ্টিগুণ আর স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখলে পেয়ারা খেলে প্রচুর লাভ। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখা যেতে পারে। কারণ পেয়ারা একটি পুষ্টিকর ফল। এতে প্রচুর ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকায় অনেকেই একে ভিটামিনের খনি বলে। পাশাপাশি বহু রোগ প্রতিরোধ করতেও এটি ভূমিকা রাখে।
ভিটামিন ও খনিজের ভাণ্ডার : পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েডস, ফোলেট, পটাশিয়াম, আঁশ এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে। পেয়ারায় কমলার চেয়ে ৪ গুণ ভিটামিন সি আছে। এতে পর্যাপ্ত আয়রনও রয়েছে। এগুলো দেহের ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক : পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধক। বিশেষ করে প্রোস্টেট ক্যান্সার আক্রমণের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে পেয়ারা। এছাড়া পেয়ারা খেলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার শঙ্কাও কমে যায়।
পেটের সমস্যায় : পেয়ারা পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী ও সুগঠিত করে তোলে। এটি বিভিন্ন প্রকার সংক্রামক রোগ ও জীবাণুর আক্রমণকে প্রতিহত করে। আমাশয় নিরাময়ে পেয়ারা খুবই কার্যকর। পাকা পেয়ারা আতিরিক্ত আঁশ সমৃদ্ধ হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া পেয়ারা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
ওজন কমায় : পেয়ারায় প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকলেও তা দেহের ওজন বাড়তে দেয় না। পেয়ারাতে ডায়াটারি ফাইবারের আধিক্য রয়েছে। আরও রয়েছে স্বল্প ক্যালরি সমৃদ্ধ ও সহজে হজমযোগ্য জটিল শর্করা। ফলে পেয়ারা শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ঠাণ্ডা সমস্যা প্রতিরোধ : পেয়ারার বেশ কিছু ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান ঠাণ্ডা সমস্যা প্রতিরোধ করে। এছাড়া সর্দি-কাশিতে কচি পেয়ারার পাতা রস করে হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ক্যান্সার প্রতিরোধক : পেয়ারাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে রয়েছে ক্যারোটিনয়েডস, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, লুটেইন ও ক্রিপ্টোজ্যানথিন। এই উপাদানগুলো ফুসফুস ও মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। আর লাল পেয়ারার লাইকোপিন মূত্রনালী ও মূত্রথলির ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ : ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারা ভূমিকা রাখে। পেয়ারাতে ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার কারণে এটি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে আর তাই ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকি কমে।
চোখ ভালো রাখতে : পেয়ারাতে ভিটামিন এ আছে আর যার কারণে এটি খেলে এটি আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া এটি খেলে চোখের ছানি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়।
গর্ভবতী মা ও শিশুর সুস্থতায় : পেয়ারাতে আছে ফলিক এসিড আর ফলিক এসিড একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজন। সব গর্ভবতীদেরই ডাক্তাররা ফলিক এসিড দিয়ে থাকেন কারণ এটি বাচচার নার্ভাস সিস্টেমকে উন্নত করে। আর সেই সাথে এটি বাচচাদের নিউরোলোজিক ডিজঅর্ডার থেকে দূরে রাখে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ : পেয়ারা শরীরের সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ব্যালান্স বাড়ায়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। পেয়ারা ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এলডিএল নামে মন্দ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এতে হৃদরোগের শঙ্কা কমে যায়। পেয়ারা এইচডিএল নামে একটি কোলস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, যা হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।