ঢাকা , রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

জেলায় জেলায় একাধিক এসপি

পুলিশ সুপারে (এসপি) ভারাক্রান্ত দেশের বেশ কয়েকটি জেলা। পুলিশ প্রশাসনের কাঠামোয় প্রতি জেলায় একটি পুলিশ সুপার পদ থাকলেও বর্তমানে কোনো জেলায় তিনজন, কোনো জেলায় দুজন পুলিশ সুপার কাজ করছেন। সম্প্রতি পুলিশ সুপার পদে ৭০ জনকে পদোন্নতি দেয়ায় এ ভারাক্রান্ত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

গত ৫ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুরাইয়া পারভীন শেলীর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) থেকে ৭০ জন কর্মকর্তাকে পুলিশ সুপার হিসেবে  পদোন্নতি  দেয়া হয়। কিন্তু দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও তারা ওই পদের দায়িত্ব পাননি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মল হক খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, “পুলিশ বাহিনীর যোগ্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আর তাদের পদায়ন কাজ করবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার। এরপর আমরা বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেব।”

কিন্তু এই পদোন্নতির সময় অনেক ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘনের ঘটনাও আছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ২১-২২ ব্যাচের কর্মকর্তাদের ডিঙিয়ে ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে।

জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পদে (এসপি) পদোন্নতি দেয়ায় পুলিশ প্রশাসনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঞ্চিত কয়েকজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি জেলায় তিনজন পুলিশ সুপার রয়েছেন। দুজন করে পুলিশ সুপার রয়েছেন নরসিংদী, রাজবাড়ী, বরিশাল, পিরোজপুর, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বেশ কিছু জেলায়।

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-অর রশিদকে প্রত্যাহার করার পর সেখানে দায়িত্ব দেয়া হয় দেলোয়ার হোসেনকে। নির্বাচনের এক সপ্তাহ পর আবার হারুন-অর রশিদকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এখন সেখানে পুলিশ সুপার পদ রয়েছেন তিনজন। এসপি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পরও গাজীপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালন করছেন মো. মিজানুর রহমান ও মো. দেলোয়ার হোসেন।

নরসিংদী জেলায় বর্তমানে পুলিশ সুপার পদে রয়েছেন আমেনা বেগম। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে এসপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার। দুজনই কাজ করছেন একই জেলায়।

মাদারীপুরে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাল পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে সেখানেই কাজ করছেন।

রাজবাড়ীতে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবিরের পাশাপাশি কাজ করছেন  পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ, যিনি অতিরিক্ত এসপি থেকে পদোন্নতি পেয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জে কাজ করছেন তিন এসপি মো. মোখলেসুর রহমান, মোহাম্মদ জাকারিয়া, মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান। তিনজনই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হয়েছেন।

একই জেলা দুই পুলিশ সুপারের কাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী বর্তমান পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বলেন, “ভালো কাজ করলে পদোন্নতি পাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে দায়িত্ব পেতে কিছুটা সময় লাগে।”

আমেনা বেগম বলেন, “আমি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার ৫-৬ মাস পর দায়িত্ব পেযেছি। দায়িত্ব পাওয়া বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করে।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পাওয়া এক কর্মকতা জানান, পদোন্নতি পাওয়া এসব কর্মকর্তা তাদের দায়িত্ব পালন করতে সমস্যায় পড়ছেন। জেলায় দুই-তিনজন করে পুলিশ সুপার থাকা সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ। আসলে আমরা পদোন্নতি পেয়েছি সান্ত্বনা পুরুস্কার হিসেবে।”

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

রাজধানীর ১৫টি খাল খননে দূর হবে ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা

জেলায় জেলায় একাধিক এসপি

আপডেট টাইম : ০৭:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ মে ২০১৬
পুলিশ সুপারে (এসপি) ভারাক্রান্ত দেশের বেশ কয়েকটি জেলা। পুলিশ প্রশাসনের কাঠামোয় প্রতি জেলায় একটি পুলিশ সুপার পদ থাকলেও বর্তমানে কোনো জেলায় তিনজন, কোনো জেলায় দুজন পুলিশ সুপার কাজ করছেন। সম্প্রতি পুলিশ সুপার পদে ৭০ জনকে পদোন্নতি দেয়ায় এ ভারাক্রান্ত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

গত ৫ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুরাইয়া পারভীন শেলীর স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) থেকে ৭০ জন কর্মকর্তাকে পুলিশ সুপার হিসেবে  পদোন্নতি  দেয়া হয়। কিন্তু দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও তারা ওই পদের দায়িত্ব পাননি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মল হক খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, “পুলিশ বাহিনীর যোগ্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আর তাদের পদায়ন কাজ করবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার। এরপর আমরা বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেব।”

কিন্তু এই পদোন্নতির সময় অনেক ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘনের ঘটনাও আছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ২১-২২ ব্যাচের কর্মকর্তাদের ডিঙিয়ে ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে।

জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পদে (এসপি) পদোন্নতি দেয়ায় পুলিশ প্রশাসনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঞ্চিত কয়েকজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি জেলায় তিনজন পুলিশ সুপার রয়েছেন। দুজন করে পুলিশ সুপার রয়েছেন নরসিংদী, রাজবাড়ী, বরিশাল, পিরোজপুর, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বেশ কিছু জেলায়।

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-অর রশিদকে প্রত্যাহার করার পর সেখানে দায়িত্ব দেয়া হয় দেলোয়ার হোসেনকে। নির্বাচনের এক সপ্তাহ পর আবার হারুন-অর রশিদকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এখন সেখানে পুলিশ সুপার পদ রয়েছেন তিনজন। এসপি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পরও গাজীপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালন করছেন মো. মিজানুর রহমান ও মো. দেলোয়ার হোসেন।

নরসিংদী জেলায় বর্তমানে পুলিশ সুপার পদে রয়েছেন আমেনা বেগম। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে এসপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার। দুজনই কাজ করছেন একই জেলায়।

মাদারীপুরে পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাল পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে সেখানেই কাজ করছেন।

রাজবাড়ীতে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবিরের পাশাপাশি কাজ করছেন  পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ, যিনি অতিরিক্ত এসপি থেকে পদোন্নতি পেয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জে কাজ করছেন তিন এসপি মো. মোখলেসুর রহমান, মোহাম্মদ জাকারিয়া, মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান। তিনজনই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হয়েছেন।

একই জেলা দুই পুলিশ সুপারের কাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী বর্তমান পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বলেন, “ভালো কাজ করলে পদোন্নতি পাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে দায়িত্ব পেতে কিছুটা সময় লাগে।”

আমেনা বেগম বলেন, “আমি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার ৫-৬ মাস পর দায়িত্ব পেযেছি। দায়িত্ব পাওয়া বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করে।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পাওয়া এক কর্মকতা জানান, পদোন্নতি পাওয়া এসব কর্মকর্তা তাদের দায়িত্ব পালন করতে সমস্যায় পড়ছেন। জেলায় দুই-তিনজন করে পুলিশ সুপার থাকা সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ। আসলে আমরা পদোন্নতি পেয়েছি সান্ত্বনা পুরুস্কার হিসেবে।”