বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ এদেশে পানীয় হিসাবে চায়ের কদর সবচেয়ে বেশি হলেও শহরাঞ্চলে কফির কদরও কিছু কম নয়। আর পশ্চিমের দেশে কফি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। ইউরোপ, আমেরিকায় কফি তৈরি হয় ঠিকই, তবে তার বেশিরভাগটাই আমদানি করা হয় আফ্রিকার দেশ থেকে। এবার ভারতে তৈরি হতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে দামী কফি। এবং তা তৈরি হবে কর্ণাটকের কুর্গে। তবে কী পদ্ধতিতে এই কফি তৈরি হচ্ছে তা শুনলে অনেকেই হয়তো খেতে চাইবেন না। এই কফি তৈরি হচ্ছে ভাম বিড়ালের মল থেকে।
ভাম বিড়ালের মল থেকে কফি। আজ্ঞে হ্যাঁ। ঠিকই শুনছেন। এই কফি লুয়ার্ক কফি নামে পরিচিত। অদ্ভুত পদ্ধতিতে তৈরি হওয়ায় তা বিশ্বের সবচেয়ে দামী কফির তকমা পেয়েছে। ভাম বিড়ালকে এই কফি খাইয়ে তা মল থেকে বেরোনোর পরে তা বেছে নিয়ে পরিশ্রুত করে এক অনন্য পদ্ধতিতে কফি তৈরি হয় যা অত্যন্ত দামী।
সবচেয়ে দামী এই কফির পুষ্টিগুণ অত্যন্ত বেশি বলে দাবি করা হয়। পাশাপাশি অন্যরকম পদ্ধতি হওয়ায় তার খরচও অনেক বেশি হয়। এই লুয়ার্ক কফির মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশে সবচেয়ে বেশি চল রয়েছে। প্রতি কেজির দাম ২০-২৫ হাজার টাকা।
কুর্গে প্রস্তুত কর্ণাটকের পাহাড়ি এলাকা কুর্গে ‘কুর্গ কনসোলিডেটেড কমোডিটিস’ নামে স্টার্ট-আপ ফার্ম তৈরি করে এই লাক্সারি কফি বানানো চলছে। খুব ছোট আকারে শুরু করে তা ধীরে ধীরে বড় আকার নিচ্ছে। প্রথম বছরে মাত্র ২০ কেজি কফি তৈরি হয়েছিল। তারপরে ৬০ কেজি ও গতবছরে ২০০ কেজি কফি উৎপাদিত হয়েছে। এবং অন্তত ৫০০ কেজি এই বিলালবহুল কফি উৎপাদিত হবে বলে আশা সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নরেন্দ্র হেব্বারের।
কফি ব্র্যান্ড এই কফির ব্র্যান্ড ‘এইনমানে’। স্থনীয় ক্লাব মাহিন্দ্রা মাদিকেড়ি রিসর্টে একটিমাত্র জায়গায় এই কফি বিক্রি করা হয়। পরে ‘কুর্গ লুয়ার্ক কফি’ নামে কাফে তৈরি করে তা আলাদা করে বিক্রি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এদেশে তার দাম ৮ হাজার টাকা প্রতি কেজি। তবে বিদেশে তা ২০-২৫ হাজার টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়।
গুনমানের রহস্য কুর্গের পাহাড়ি এলাকায় ভাম বিড়ালকে এই কফির চেরি খাওয়ানো হয়। পরে তাদের মল সংগ্রহ করা হয়। ভাম বিড়ালের পেটে গিয়ে স্বাভাবিক এনজাইম এই কফিচেরিগুলির স্বাদ ও গুনমান বাড়িয়ে তোলে। যার ফলে এই বিনস থেকে তৈরি কফি স্বাদে, পুষ্টিতে অনন্য হয়ে ওঠে।
ভাম বিড়াল
ভাম এবং খট্বাস বা খাটাশ হলো মার্জারপ্রতিম (বিড়ালের মতো) বা ফেলিফর্মিয়া উপবর্গের ভিভেরিডে গোত্রের শ্বাপদ বর্গের স্তন্যপায়ী প্রাণী। কিন্তু শ্বাপদ বর্গ হলেও এরা ফেলিডে (আসল বিড়াল) গোত্রের নয়। বৈজ্ঞানিক নাম Viverra civetta। এটি নিশাচর প্রাণী। এদের দেহাকৃতি বিড়ালের মতো। দেহ দীর্ঘ, পা ছোট। এদের দেহে সুগন্ধ গ্ল্যান্ড থাকে।