ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষকদের হাতে ল্যাপটপ তুলে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষক জনাব আবেদা আক্তার জাহান মেডাম কে।

অনুষ্ঠানমঞ্চে বক্তব্য প্রদানকালে মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা জাতীয়করণের দাবি তোলায় রেগে মঞ্চ ছাড়লেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ৩১৫টি স্কুলে আইসিটি ল্যাব ও মাল্টি মিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের জন্য ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

মন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠগুলোকে আমরা মডেল স্কুল প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত করেছি। ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আজকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের জন্য ল্যাপটপ বিতরণ করা হচ্ছে।’

মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন দ্বিগুণ করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আপনাদের বেতন লাখ টাকা ছাড়াবে। আর কী চাই আপনাদের?’

এ সময় উপস্থিত ৩১০টি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা জাতীয়করণের জন্য সমস্বরে দাবি জানান।

তখন মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের আগে বলেছি সবুরে মেওয়া ফলে। উপজেলায় আরও স্কুল আছে। তার মধ্য থেকে আপনাদের স্কুলকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এত এত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আপনারা তার জন্য কোনো কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে উল্টো আবার দাবি জানাচ্ছেন।’

মন্ত্রী রেগে গিয়ে আরও বলেন, ‘আপনারা যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাবেন, নিজের দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকার করবেন, তা না করে আপনারা দাবি জানাচ্ছেন।’

নিজেকে সামলাতে না পেরে মন্ত্রী কঠোরভাবে বললেন, ‘জাতীয়করণ হবে তবে আপনাদের বাদ দিয়ে অন্য স্কুলকে জাতীয়করণ করা হবে। আমি আর কী বলব? আমার মানসিকতাই খারাপ করে দিয়েছেন আপনারা। আমার কিছু বলার নেই।’ এই কথা বলতে বলতে ডায়াস ছেড়ে চলে যান মন্ত্রী।

মন্ত্রীর এমন অগ্নিমূর্তি দেখে শিক্ষকরা তখন হাতজোড় করে ক্ষমা চান। এরপর সভাপতির বক্তব্য রাখেন মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

সভাপতির বক্তব্য শেষে শিক্ষকদের হাতে ৩১০টি ল্যাপটপ তুলে দেন মন্ত্রী। ৩১৫টি স্কুলে ল্যাপটপ বিতরণের কথা থাকলেও ৫টি স্কুলের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে ৩১০টি স্কুলে ল্যাপটপ দেওয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক কে এম রফিকুল ইসলাম, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. জিনাত ইমতিয়াজ আলী।

প্রসঙ্গত, ৩১৫টি উপজেলার সর্বশ্রেষ্ঠ স্কুলগুলোকে নিয়ে মডেল স্কুল প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি স্কুলে চার তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে। স্কুলগুলোতে ২২টি কম্পিউটার সংবলিত একটি করে আইসিটি ল্যাব, ৭টি মালটিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং এসব ক্লাসরুমের জন্য ৭টি ল্যাপটপ, ৭টি প্রজেক্টর ৭টি মোডেম দেওয়া হবে।

সবমিলিয়ে একটি আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবকিছুই বিদ্যালয়গুলোতে থাকবে বলে মাউশির মহাপরিচালক তার বক্তব্যে জানিয়েছেন। যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি ৮৮ লাথ ৭৪ হাজার টাকা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষকদের হাতে ল্যাপটপ তুলে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষক জনাব আবেদা আক্তার জাহান মেডাম কে।

আপডেট টাইম : ০৫:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০১৬

অনুষ্ঠানমঞ্চে বক্তব্য প্রদানকালে মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা জাতীয়করণের দাবি তোলায় রেগে মঞ্চ ছাড়লেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ৩১৫টি স্কুলে আইসিটি ল্যাব ও মাল্টি মিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের জন্য ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

মন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠগুলোকে আমরা মডেল স্কুল প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত করেছি। ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আজকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের জন্য ল্যাপটপ বিতরণ করা হচ্ছে।’

মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন দ্বিগুণ করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আপনাদের বেতন লাখ টাকা ছাড়াবে। আর কী চাই আপনাদের?’

এ সময় উপস্থিত ৩১০টি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা জাতীয়করণের জন্য সমস্বরে দাবি জানান।

তখন মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের আগে বলেছি সবুরে মেওয়া ফলে। উপজেলায় আরও স্কুল আছে। তার মধ্য থেকে আপনাদের স্কুলকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এত এত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আপনারা তার জন্য কোনো কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে উল্টো আবার দাবি জানাচ্ছেন।’

মন্ত্রী রেগে গিয়ে আরও বলেন, ‘আপনারা যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাবেন, নিজের দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকার করবেন, তা না করে আপনারা দাবি জানাচ্ছেন।’

নিজেকে সামলাতে না পেরে মন্ত্রী কঠোরভাবে বললেন, ‘জাতীয়করণ হবে তবে আপনাদের বাদ দিয়ে অন্য স্কুলকে জাতীয়করণ করা হবে। আমি আর কী বলব? আমার মানসিকতাই খারাপ করে দিয়েছেন আপনারা। আমার কিছু বলার নেই।’ এই কথা বলতে বলতে ডায়াস ছেড়ে চলে যান মন্ত্রী।

মন্ত্রীর এমন অগ্নিমূর্তি দেখে শিক্ষকরা তখন হাতজোড় করে ক্ষমা চান। এরপর সভাপতির বক্তব্য রাখেন মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

সভাপতির বক্তব্য শেষে শিক্ষকদের হাতে ৩১০টি ল্যাপটপ তুলে দেন মন্ত্রী। ৩১৫টি স্কুলে ল্যাপটপ বিতরণের কথা থাকলেও ৫টি স্কুলের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে ৩১০টি স্কুলে ল্যাপটপ দেওয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক কে এম রফিকুল ইসলাম, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. জিনাত ইমতিয়াজ আলী।

প্রসঙ্গত, ৩১৫টি উপজেলার সর্বশ্রেষ্ঠ স্কুলগুলোকে নিয়ে মডেল স্কুল প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি স্কুলে চার তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে। স্কুলগুলোতে ২২টি কম্পিউটার সংবলিত একটি করে আইসিটি ল্যাব, ৭টি মালটিমিডিয়া ক্লাসরুম এবং এসব ক্লাসরুমের জন্য ৭টি ল্যাপটপ, ৭টি প্রজেক্টর ৭টি মোডেম দেওয়া হবে।

সবমিলিয়ে একটি আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবকিছুই বিদ্যালয়গুলোতে থাকবে বলে মাউশির মহাপরিচালক তার বক্তব্যে জানিয়েছেন। যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি ৮৮ লাথ ৭৪ হাজার টাকা।