সম্প্রতি গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁয় হামলাকারীদের একজন আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে হওয়ায় তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে দেশে বিদেশে। বিষয়টিকে ‘শর্ষের মধ্যেই ভূত’ বলে আখ্যায়িত করেছে ভারতীয় বাংলা গণমাধ্যম ‘সংবাদ প্রতিদিন’। এ নিয়ে আজ সংবাদ প্রতিদিনে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হল।
শর্ষের মধ্যেই ভূত! পুলিশ জানিয়েছে জঙ্গিদের মধ্যে নাকি রয়েছে শাসক দল আওয়ামী লীগের নেতা এস এম ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে রোহন ইবনে ইমতিয়াজও।
আমাক নিউজকে উদ্ধৃত করে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা পাঁচ মৃত জঙ্গির ছবি প্রকাশ করলে সেগুলি ঘিরেই এই বিতর্ক দানা বাঁধে। আমাক নিউজে হত্যার দায় স্বীকার করেছে আইএস। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এর পিছনে জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশের হাত রয়েছে বলে জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হোসেন তৌফিক ইমাম ঘটনায় পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও জামাতের যোগসাজশকে দায়ী করেন। পুলিশ প্রধান শহিদুল হকও আওয়ামী লীগ সদস্যদের সুরে সুর মেলান।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত জঙ্গিদের নাম আকাশ, বিকাশ, ডন, বন্ধন ও রিপন। অন্যদিকে আমাককে উদ্ধৃত করে সাইটে প্রকাশিত জঙ্গিদের ছবিতে তাদের নাম লেখা ছিল– আবু ওমর, আবু সালাম, আবু রহিম, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব আল বাঙ্গালি। প্রকাশিত ওই ছবি দেখে মৃত জঙ্গির বন্ধুরা তাদের শনাক্তও করে। তারা এমন সব নাম উল্লেখ করে যার সঙ্গে সাইট বা পুলিশের উল্লেখ করা নামের কোন মিল নেই। আর এখানেই দানা বেঁধেছে ধোঁয়াশা।
ফেসবুক-সহ অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মৃত জঙ্গিদের ছবি দেখে মন্তব্য করে তাদের সহপাঠী-বন্ধুরা। তারা জানায়, একেবারে ডানপাশে দাঁড়ানো ছেলেটির রোহন ইবনে ইমতিয়াজ। তার বাবা বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা। ক্রীড়াজগতের এক অতি পরিচিত মুখও। স্কলাস্টিকার পড়ুয়া রোহন নিখোঁজ ছিল বেশ কিছুদিন। নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবা ছেলের সঙ্গে তোলা একটি ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করেন। মা-বাবা-সহ রোহনের একটি ছবি আমাক প্রকাশিত ছবিটির পাশে রেখে পোস্ট করেন তার বন্ধুরা।
যেখানে আওয়ামী লীগ সদস্যরা খোদ বিএনপি ঘনিষ্ঠ জামাতকে হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করছে, সেখানে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে রোহনের নাম এভাবে জড়িয়ে যাওয়ায় বিস্মিত সকলেই। সন্দেহ, আওয়ামী লীগের জঙ্গি-ছোঁয়াচ বাঁচাতেই কী আওয়ামী লীগের নেতারা জামায়াত ইসলামি ও বিএনপির নাম সামনে আনছেন? তবে পুলিশের প্রকাশিত মৃত জঙ্গিদের ছবি বা সাইট প্রকাশিত ছবির একটিতেও রোহন নেই বলে দাবি তার পরিবারবর্গের।