ঢাকা , রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার জিমগুলোতে বাড়ছে নারীদের ভিড়

রাজধানীসহ ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা জিম বা ফিটনেস সেন্টারগুলোতে নারীদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কম বয়সী থেকে শুরু করে বয়স্ক-অনেক নারীই এখন নিয়মিত জিম করছেন সুস্থ থাকার প্রত্যাশায়।

ঢাকায় এমন অনেক সেন্টারে পুরুষদের পাশাপাশি একই স্থানে শরীরচর্চা করেন নারীরাও। আবার কোন কোন সেন্টারে নারীদের জন্যে আছে আলাদা সেকশন।

ঢাকার মালিবাগে ফিটনেস বাংলাদেশ নামক এমন একটি প্রতিষ্ঠানে একই জায়গায় নানা ধরনের শারীরিক অনুশীলন করছিলেন বেশ কিছু নারী ও পুরুষ।

ট্রেড মিলে দৌঁড়াচ্ছিলেন শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা। তিনি বলছিলেন, “আমি যা আছে সবই করার চেষ্টা করি। ট্রেড মিল, সাইক্লিং করি। বডিতে যাতে ফ্যাট না জমে, বা স্লিম থাকার জন্য”।

তার পাশেই থাকা গৃহবধূ সেলিনা আলী বলেন, “পরিবেশ টা ভালো। সুন্দর। বাইরেতো এমন পরিবেশ পাওয়া যায়না। আমি এখানে সাইক্লিং, কার্ডিও, বিভিন্ন ধরনের ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করি”। তাদের পাশেই একি সময়ে অনুশীলন করছিলেন একজন যুবক ফাহিম শাকের।

মেয়েদের ফিটনেস সেন্টারে আসা এবং তাদের সাথেই অনুশীলন করাকে তারা কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা খুব ভালো যে ছেলে মেয়েরা একসাথে জিম করছে। এখানে অনেক মেয়ে


আসছে। প্রাইভেসিও আছে। পরস্পরের প্রতি একটা রেসপেক্ট সবার মধ্যেই আছে”।

ফিটনেস বাংলাদেশের মালিক ও এর প্রধান প্রশিক্ষক মোহাম্মদ মিন্টু বলেন এক সাথে পড়ালেখা বা চাকুরী করতে পারলে ছেলে মেয়েরা এক সাথে জিম করতে পারবেনা কেন। সেটি মাথায় রেখেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন প্রথম দিকে মেয়েরা না আসলেও এখন তার প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকই মেয়ে। আনুষ্ঠানিক কোন হিসেব না থাকলেও ফিটনেস বাংলাদেশের মতো অনেক জিম বা ফিটনেস সেন্টার রয়েছে ঢাকায়।

সিদ্ধেশ্বরীতে কমব্যাট জিমের মহিলা সেকশনের প্রশিক্ষক শামপা আল মজিদি বলছে প্রতিদিন তিনশর বেশি নানা বয়সী নারী তাদের কাছে অনুশীলন নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, “যা যা প্রয়োজন সব উপকরণ এখানে আছে। তিন থেকে সাড়ে তিনশ মহিলা প্রতিদিনই আসেন এখানে। ৬৪ বছর বয়স্ক নারীও যেমন আছে তেমনি আট দশ বছরের মেয়েও আছে এখানে এক্সারসাইজ করেন। কমব্যাট জিমেই অনুশীলন করছিলেন লায়লা জাহান ইতি।

তিনি বলেন, “দশ বছর ধরে জিম করছি। অনেক মোটা ছিলাম। বেশি ওজন ছিল। স্লিমিংয়ের জন্য ফ্রি হ্যান্ড সহ নানা কিছু করেছি। ওজন কমার পর ওয়েট লিফটিং করছি”।

তার পাশেই থাকা প্রিয়াংকা ভট্টাচার্য বলেন জিম করলে কাজের উদ্দীপনা বাড়ে। এজন্যই তিনি নিয়মিত জিম করেন বলে জানান তিনি।

ফিটনেস বাংলাদেশ ও কমব্যাটের জিমের চেয়েও বড় পরিসরে ফিটনেস সেন্টার রয়েছে ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলে।

সেখানে অ্যাডোনাইজ ফিটসেন সেন্টারে দুটি আলাদা সেকশনে নারী ও পুরুষদের জন্যে রয়েছে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক।

নারী সেকশনের প্রশিক্ষক মাইশা দেওয়ান বলছেন শারীরিক নানা অসুস্থতার নিরাময় পেতেও অনেকে তাদের কাছে আসছেন।

তিনি বলেন, “ষাটোর্ধ দের হরমোনাল, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা সমস্যা থাকে। এগুলো ভালো করতে নানা এক্সারসাইজ করে অনেকে। ওয়েট লিফটিং হাড় শক্ত করে স্ট্যামিনা বাড়ায়, কার্ডিও ভ্যাসকুলার হরমোনে কাজ করে। সুইমিং ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস, হাঁটু ও ঘাড়ে সমস্যা তাদের জন্য।”

এখানকার ফিটনেস সেন্টারটির পরিচালক রুহুল আমিন বলছেন সমাজের সব স্তরের নারীদের মধ্যেই জিমে আসার প্রবণতা বাড়ছে।

তিনি বলেন সব বয়সের মহিলারাই আসছে। এর মধ্যে চাকুরীজীবী, রাজনীতিবিদ, ডক্টর সহ অনেকেই রয়েছেন এর মধ্যে।

এসব ফিটনেস সেন্টারগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী একেক সেন্টারে একেক ধরনের ফি দিতে হয় ব্যবহারকারীদের।

কেউ বছর ভিত্তিক আবার কেউ বা তিন বা ছয় মাসের জন্যে এগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ঢাকার জিমগুলোতে বাড়ছে নারীদের ভিড়

আপডেট টাইম : ১২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ জুলাই ২০১৬

রাজধানীসহ ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা জিম বা ফিটনেস সেন্টারগুলোতে নারীদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কম বয়সী থেকে শুরু করে বয়স্ক-অনেক নারীই এখন নিয়মিত জিম করছেন সুস্থ থাকার প্রত্যাশায়।

ঢাকায় এমন অনেক সেন্টারে পুরুষদের পাশাপাশি একই স্থানে শরীরচর্চা করেন নারীরাও। আবার কোন কোন সেন্টারে নারীদের জন্যে আছে আলাদা সেকশন।

ঢাকার মালিবাগে ফিটনেস বাংলাদেশ নামক এমন একটি প্রতিষ্ঠানে একই জায়গায় নানা ধরনের শারীরিক অনুশীলন করছিলেন বেশ কিছু নারী ও পুরুষ।

ট্রেড মিলে দৌঁড়াচ্ছিলেন শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা। তিনি বলছিলেন, “আমি যা আছে সবই করার চেষ্টা করি। ট্রেড মিল, সাইক্লিং করি। বডিতে যাতে ফ্যাট না জমে, বা স্লিম থাকার জন্য”।

তার পাশেই থাকা গৃহবধূ সেলিনা আলী বলেন, “পরিবেশ টা ভালো। সুন্দর। বাইরেতো এমন পরিবেশ পাওয়া যায়না। আমি এখানে সাইক্লিং, কার্ডিও, বিভিন্ন ধরনের ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করি”। তাদের পাশেই একি সময়ে অনুশীলন করছিলেন একজন যুবক ফাহিম শাকের।

মেয়েদের ফিটনেস সেন্টারে আসা এবং তাদের সাথেই অনুশীলন করাকে তারা কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা খুব ভালো যে ছেলে মেয়েরা একসাথে জিম করছে। এখানে অনেক মেয়ে


আসছে। প্রাইভেসিও আছে। পরস্পরের প্রতি একটা রেসপেক্ট সবার মধ্যেই আছে”।

ফিটনেস বাংলাদেশের মালিক ও এর প্রধান প্রশিক্ষক মোহাম্মদ মিন্টু বলেন এক সাথে পড়ালেখা বা চাকুরী করতে পারলে ছেলে মেয়েরা এক সাথে জিম করতে পারবেনা কেন। সেটি মাথায় রেখেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন প্রথম দিকে মেয়েরা না আসলেও এখন তার প্রতিষ্ঠানের অর্ধেকই মেয়ে। আনুষ্ঠানিক কোন হিসেব না থাকলেও ফিটনেস বাংলাদেশের মতো অনেক জিম বা ফিটনেস সেন্টার রয়েছে ঢাকায়।

সিদ্ধেশ্বরীতে কমব্যাট জিমের মহিলা সেকশনের প্রশিক্ষক শামপা আল মজিদি বলছে প্রতিদিন তিনশর বেশি নানা বয়সী নারী তাদের কাছে অনুশীলন নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, “যা যা প্রয়োজন সব উপকরণ এখানে আছে। তিন থেকে সাড়ে তিনশ মহিলা প্রতিদিনই আসেন এখানে। ৬৪ বছর বয়স্ক নারীও যেমন আছে তেমনি আট দশ বছরের মেয়েও আছে এখানে এক্সারসাইজ করেন। কমব্যাট জিমেই অনুশীলন করছিলেন লায়লা জাহান ইতি।

তিনি বলেন, “দশ বছর ধরে জিম করছি। অনেক মোটা ছিলাম। বেশি ওজন ছিল। স্লিমিংয়ের জন্য ফ্রি হ্যান্ড সহ নানা কিছু করেছি। ওজন কমার পর ওয়েট লিফটিং করছি”।

তার পাশেই থাকা প্রিয়াংকা ভট্টাচার্য বলেন জিম করলে কাজের উদ্দীপনা বাড়ে। এজন্যই তিনি নিয়মিত জিম করেন বলে জানান তিনি।

ফিটনেস বাংলাদেশ ও কমব্যাটের জিমের চেয়েও বড় পরিসরে ফিটনেস সেন্টার রয়েছে ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলে।

সেখানে অ্যাডোনাইজ ফিটসেন সেন্টারে দুটি আলাদা সেকশনে নারী ও পুরুষদের জন্যে রয়েছে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক।

নারী সেকশনের প্রশিক্ষক মাইশা দেওয়ান বলছেন শারীরিক নানা অসুস্থতার নিরাময় পেতেও অনেকে তাদের কাছে আসছেন।

তিনি বলেন, “ষাটোর্ধ দের হরমোনাল, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা সমস্যা থাকে। এগুলো ভালো করতে নানা এক্সারসাইজ করে অনেকে। ওয়েট লিফটিং হাড় শক্ত করে স্ট্যামিনা বাড়ায়, কার্ডিও ভ্যাসকুলার হরমোনে কাজ করে। সুইমিং ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিস, হাঁটু ও ঘাড়ে সমস্যা তাদের জন্য।”

এখানকার ফিটনেস সেন্টারটির পরিচালক রুহুল আমিন বলছেন সমাজের সব স্তরের নারীদের মধ্যেই জিমে আসার প্রবণতা বাড়ছে।

তিনি বলেন সব বয়সের মহিলারাই আসছে। এর মধ্যে চাকুরীজীবী, রাজনীতিবিদ, ডক্টর সহ অনেকেই রয়েছেন এর মধ্যে।

এসব ফিটনেস সেন্টারগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী একেক সেন্টারে একেক ধরনের ফি দিতে হয় ব্যবহারকারীদের।

কেউ বছর ভিত্তিক আবার কেউ বা তিন বা ছয় মাসের জন্যে এগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন।