প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন বিএনপির তৎকালীন সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস অালী। তবে এখনো স্বামীকে ফিরে পাওয়ার আশায় তিন সন্তানকে নিয়ে পথ চেয়ে আছেন স্ত্রী তাহসিনা রুশদি লুনা।
তিনি মনে করেন, সরকার আন্তরিক হলে ইলিয়াস আলীকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব। গুম-নিখোঁজ হওয়ায় অনেক ব্যক্তিই তো তাদের পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন। আমরাও বিশ্বাস করি ইলিয়াস আলী ফিরে আসবেন! আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত প্রিয় মানুষটির (ইলিয়াস আলীর) অপেক্ষায় থাকবো।
আন্তর্জাতিক গুম দিবসে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে স্বামীর কথা বলতে গিয়ে আবেগ আল্পুত হয়ে পড়েন লুনা। তার একটাই দাবি যেকোনো কিছুর বিনিময়ে স্বামীকে ফেরত চান তিনি।
তিনি এখনো মনে করেন তার স্বামী বেঁচে আছেন, পরিবারের মাঝে আবার ফিরে আসবেন। এখন তিনি শুধু আল্লাহর ওপর ভরসা করে ইলিয়াস ফিরে আসার পথে চেয়ে রয়েছেন।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকার বনানী থেকে ব্যক্তিগত গাড়িচালক আনসার আলীসহ রহস্যজনকভাবে ‘নিখোঁজ’ হন এম ইলিয়াস আলী। এরপর দেশব্যাপি গড়ে ওঠে তুমুল আন্দোলন। ইলিয়াসের ভালোবাসায় প্রাণ দেন সিলেটের বিশ্বনাথের বিএনপির তিন কর্মী।
তবে ইলিয়াসের সন্ধান না মিললেও সেদিন গভীর রাতে বনানীর ২ নম্বর রোডের সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ইলিয়াসের গাড়িটি উদ্ধার করেছিল বনানী থানা পুলিশ।
স্বামী ছাড়া সংসারে গত সাড়ে চার বছর কেমন কেটেছে জানতে চাইলে লুনা বলেন, দিন যেহেতু থেমে থাকে না, সেহেতু চলছে আর কি। নিরানন্দ-ভালোবাসাহীন জীবন আমাদের কাটছে।
আবরার ইলিয়াস, শাইয়ারা নাওয়াল ও নাবিদ শাহারা (৩ সন্তান) কেমন আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারাও বাবার ফিরে আসবে সেই পথ চেয়ে বসে আছে। মাঝে মাঝে তাদেরকে ফিরে আসার নানা গল্প শুনাই।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ বিএনপির নতুন ৫০২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে তাহসিনা রুশদীর লুনাকে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবনে তিনি কুয়েত মৈত্রী হলের সাবেক এজিএসের দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাহসিনা রুশদি লুনা।