ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবজির বাজারে উত্তাপ

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে কাঁচা তরি-তরকারি পণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। বেশকিছু সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এ ছাড়া অতি বর্ষণে রাজধানীর বড় বড় পাইকারি বাজারগুলোয় পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশে বিঘ্ন ঘটায় অনেক স্থানে কাঁচা পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে এসব নিত্য পণ্যের দাম আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় কিছু কিছু সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আবার কিছু কিছু সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গ্রাম থেকে পণ্য আসতে দেরি হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিক্রেতারা জানান, টানা বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়ছে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা। বন্যায় অনেক সবজি খেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে চাহিদা মতো সবজির সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। সবজির উৎপাদন কম হচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তাঘাটেও যানজটের কারণে বাজারে সময়মতো সবজির ট্রাক পৌঁছাতে পারছে না। এর প্রভাব পড়েছে সবজির দামের ওপর। ভোক্তারা বলছেন, এই দেশে রোদ-বৃষ্টি-শীত থাকবেই। এগুলোকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে দাম বাড়ান ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কোনো পণ্যের দাম কমানো হয় না।
বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পিয়াজ ১০ টাকা বেড়ে কেজি প্রতি ৪০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পিয়াজ ২৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বেগুন কেজি প্রতি ৬০-৮০ টাকা; শিম ১২০ টাকা; হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা; দেশি টমেটো ১০০ টাকা; শসা ৫০ টাকা; চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা; কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা; পটোল ৫০-৬০ টাকা; ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা; ঝিঙ্গা ৬০ টাকা; চিচিঙ্গা ৫০-৬০ টাকা; করলা ৫০-৫৫ টাকা; কাঁকরোল ৫০ টাকা; পেঁপে ৪০-৫০ টাকা; কচুরমুখী ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আলু কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে টমেটোর দাম। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।
কারওয়ান বাজার ক্ষুদ্র আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি এটিএম ফারুক বলেন, প্রতিদিন এ বাজারে আড়াইশর বেশি ট্রাক সবজি নিয়ে প্রবেশ করে। বৃষ্টি ও পানির কারণে বেশির ভাগ ট্রাকই বাজারে ঢুকতে পারেনি। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা। এতে ভোক্তা ছাড়াও এ খাতে নিয়োজিত ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
ক্রেতা সামসুল আলম বলেন, সব ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষদের। একদিকে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় কষ্ট হচ্ছে; অন্যদিকে বর্ষার কারণে সবজির দাম বেড়ে গেছে।
মুদি বাজারে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। বাজারে কেজি প্রতি ছোলা ৮৫ টাকা; দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা; ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা; মাসকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা; ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল ২ টাকা কমে প্রতি কেজি ৪৪ টাকা, পারিজা চাল ৪৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারে আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ইলিশ ৮০০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ২০০০ টাকা। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ছোট দেশি মুরগির দাম গত সপ্তাহের বাড়তি দামে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ৫ টাকা বেড়ে ১৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

সবজির বাজারে উত্তাপ

আপডেট টাইম : ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে কাঁচা তরি-তরকারি পণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। বেশকিছু সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এ ছাড়া অতি বর্ষণে রাজধানীর বড় বড় পাইকারি বাজারগুলোয় পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশে বিঘ্ন ঘটায় অনেক স্থানে কাঁচা পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে এসব নিত্য পণ্যের দাম আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় কিছু কিছু সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আবার কিছু কিছু সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। গ্রাম থেকে পণ্য আসতে দেরি হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিক্রেতারা জানান, টানা বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়ছে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা। বন্যায় অনেক সবজি খেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে চাহিদা মতো সবজির সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। সবজির উৎপাদন কম হচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তাঘাটেও যানজটের কারণে বাজারে সময়মতো সবজির ট্রাক পৌঁছাতে পারছে না। এর প্রভাব পড়েছে সবজির দামের ওপর। ভোক্তারা বলছেন, এই দেশে রোদ-বৃষ্টি-শীত থাকবেই। এগুলোকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে দাম বাড়ান ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কোনো পণ্যের দাম কমানো হয় না।
বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পিয়াজ ১০ টাকা বেড়ে কেজি প্রতি ৪০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পিয়াজ ২৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বেগুন কেজি প্রতি ৬০-৮০ টাকা; শিম ১২০ টাকা; হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা; দেশি টমেটো ১০০ টাকা; শসা ৫০ টাকা; চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা; কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা; পটোল ৫০-৬০ টাকা; ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা; ঝিঙ্গা ৬০ টাকা; চিচিঙ্গা ৫০-৬০ টাকা; করলা ৫০-৫৫ টাকা; কাঁকরোল ৫০ টাকা; পেঁপে ৪০-৫০ টাকা; কচুরমুখী ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আলু কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে টমেটোর দাম। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।
কারওয়ান বাজার ক্ষুদ্র আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি এটিএম ফারুক বলেন, প্রতিদিন এ বাজারে আড়াইশর বেশি ট্রাক সবজি নিয়ে প্রবেশ করে। বৃষ্টি ও পানির কারণে বেশির ভাগ ট্রাকই বাজারে ঢুকতে পারেনি। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা। এতে ভোক্তা ছাড়াও এ খাতে নিয়োজিত ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
ক্রেতা সামসুল আলম বলেন, সব ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষদের। একদিকে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় কষ্ট হচ্ছে; অন্যদিকে বর্ষার কারণে সবজির দাম বেড়ে গেছে।
মুদি বাজারে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। বাজারে কেজি প্রতি ছোলা ৮৫ টাকা; দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা; ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা; মাসকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা; ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল ২ টাকা কমে প্রতি কেজি ৪৪ টাকা, পারিজা চাল ৪৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারে আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ইলিশ ৮০০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ২০০০ টাকা। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ছোট দেশি মুরগির দাম গত সপ্তাহের বাড়তি দামে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ৫ টাকা বেড়ে ১৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।