ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুল ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা কমিউনিটি সেন্টার

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  কমিউনিটি সেন্টারের মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন রাজধানীর ফুল ব্যবসায়ীরা। সামান্য টাকায় ফুল সাজানোর কাজটি করছে কমিউনিটি সেন্টার। ফলে ফুল ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন।

ফুল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া দেয়ার সময় ফুল সজ্জিতকরণের কাজ কমিউনিটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ করবেন এমন শর্ত জুড়ে দেয়া হচ্ছে। অনেকটাই বাধ্য করে ফুল সজ্জিতকরণের কাজ বাবদ নেয়া হয় মোটা অংকের টাকাও।

কিন্তু সামান্য টাকা দিয়ে ফুল সাজানোর কাজটি করছেন কমিউনিটি সেন্টারের লোকেরা।

জম্নদিন, বিয়ে, বিয়েবার্ষিকীসহ নানা পার্টিতে এখন রাজধানীবাসী কমিউনিটি সেন্টার বা পার্টি হাউজ ভাড়া নিয়ে থাকেন। ভাড়া নেয়ার পর সেখানে ফুল ও আলোজসজ্জাকরণের বিষয়টি সামনে এসে দাঁড়ায়। উৎসব অনুষ্ঠানে কমিউনিটি সেন্টারে ফুলসজ্জা যেন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাজধানীর বেশিরভাগ কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া দেয়ার সময় বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেয়। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত হচ্ছে ফুল ও আলোকসজ্জার কাজটি তারা করে দেবেন। অনেকে বাইরে থেকে ফুলসজ্জার কাজ করানোর কথা বললেও তাতে বাধ সাধেন কমিউনিটি সেন্টারের মালিকরা। নানা কৌশলে তারা শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে কব্জাবন্দি করে তাদের দিয়েই ফুলসজ্জার কাজ করাতে বাধ্য করেন।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে এর সত্যতা মিলেছে। রাজধানীর শাহবাগ, কাঁটাবন, মালিবাগসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক ফুল ব্যবসায়ী এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, কমিউনিটি সেন্টারের কারণে তারা ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা সরাসরি কোনো কমিউনিটি সেন্টারে কাজ করতে পারছেন না। কমিউনিটি সেন্টার মালিকরা মোটা অংকের টাকায় চুক্তি করে খুচরা ফুল ব্যবসায়ীদের দিয়ে অল্প টাকায় কাজটি করে নিচ্ছেন। লাভ তো দূরের কথা অনেক ক্ষেত্রে চালান বাঁচানো দুস্কর হয়ে পড়ে বলে তাদের অভিযোগ।

শাহবাগ ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, কমিউনিটি সেন্টারের মালিকরা তাদেরকে পথে বসিয়ে দিচ্ছেন। বেশি টাকায় চুক্তি করে তাদেরকে আসল টাকাও অনেক সময় দিচ্ছেন না কমিউনিটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, একদিকে সেন্টার ভাড়াকারী ব্যক্তিকে, অন্যদিকে ফুল ব্যবসায়ীকে লোকসান করাচ্ছেন তারা। সরাসরি কাজটি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া গেলে ফুল ব্যবসায়ীর পাশাপাশি জনগণও উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। ফলে তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তবে ফুল ব্যবসায়ীদের এ অভিযোগ মানতে নারাজ কমিউনিটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ। রোববার রাজধানীর মহাখালী কমিউনিটি সেন্টার, মালিবাগের হোসাফ কমিউনিটি সেন্টারে সরেজমিনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়।

মহাখালী কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপক আব্দুল হালিম বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, তারা কাউকে ফুল সজ্জিতকরণে কাজ করতে বাধ্য করেন না। তবে বেশিরভাগ লোকই ঝামেলায় না গিয়ে তাদের দিয়েই ফুলসজ্জার কাজ করিয়ে থাকেন।

হোসাফ কমিউনিটি সেন্টারের পক্ষে কেউ কথা বলতে চাননি। তবে মগবাজারের সিলিবারেশন কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশিরভাগ মানুষই একসঙ্গে সব চুক্তি করেন। আলাদাভাবে কেউ ঝামেলা করতে চান না। তাদের কাছ থেকে সজ্জিতকরণের কাজ করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বলেও দাবি তার।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ফুল ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা কমিউনিটি সেন্টার

আপডেট টাইম : ০১:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  কমিউনিটি সেন্টারের মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন রাজধানীর ফুল ব্যবসায়ীরা। সামান্য টাকায় ফুল সাজানোর কাজটি করছে কমিউনিটি সেন্টার। ফলে ফুল ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন।

ফুল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া দেয়ার সময় ফুল সজ্জিতকরণের কাজ কমিউনিটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ করবেন এমন শর্ত জুড়ে দেয়া হচ্ছে। অনেকটাই বাধ্য করে ফুল সজ্জিতকরণের কাজ বাবদ নেয়া হয় মোটা অংকের টাকাও।

কিন্তু সামান্য টাকা দিয়ে ফুল সাজানোর কাজটি করছেন কমিউনিটি সেন্টারের লোকেরা।

জম্নদিন, বিয়ে, বিয়েবার্ষিকীসহ নানা পার্টিতে এখন রাজধানীবাসী কমিউনিটি সেন্টার বা পার্টি হাউজ ভাড়া নিয়ে থাকেন। ভাড়া নেয়ার পর সেখানে ফুল ও আলোজসজ্জাকরণের বিষয়টি সামনে এসে দাঁড়ায়। উৎসব অনুষ্ঠানে কমিউনিটি সেন্টারে ফুলসজ্জা যেন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাজধানীর বেশিরভাগ কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া দেয়ার সময় বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেয়। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত হচ্ছে ফুল ও আলোকসজ্জার কাজটি তারা করে দেবেন। অনেকে বাইরে থেকে ফুলসজ্জার কাজ করানোর কথা বললেও তাতে বাধ সাধেন কমিউনিটি সেন্টারের মালিকরা। নানা কৌশলে তারা শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে কব্জাবন্দি করে তাদের দিয়েই ফুলসজ্জার কাজ করাতে বাধ্য করেন।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে এর সত্যতা মিলেছে। রাজধানীর শাহবাগ, কাঁটাবন, মালিবাগসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক ফুল ব্যবসায়ী এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, কমিউনিটি সেন্টারের কারণে তারা ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা সরাসরি কোনো কমিউনিটি সেন্টারে কাজ করতে পারছেন না। কমিউনিটি সেন্টার মালিকরা মোটা অংকের টাকায় চুক্তি করে খুচরা ফুল ব্যবসায়ীদের দিয়ে অল্প টাকায় কাজটি করে নিচ্ছেন। লাভ তো দূরের কথা অনেক ক্ষেত্রে চালান বাঁচানো দুস্কর হয়ে পড়ে বলে তাদের অভিযোগ।

শাহবাগ ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, কমিউনিটি সেন্টারের মালিকরা তাদেরকে পথে বসিয়ে দিচ্ছেন। বেশি টাকায় চুক্তি করে তাদেরকে আসল টাকাও অনেক সময় দিচ্ছেন না কমিউনিটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, একদিকে সেন্টার ভাড়াকারী ব্যক্তিকে, অন্যদিকে ফুল ব্যবসায়ীকে লোকসান করাচ্ছেন তারা। সরাসরি কাজটি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া গেলে ফুল ব্যবসায়ীর পাশাপাশি জনগণও উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। ফলে তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তবে ফুল ব্যবসায়ীদের এ অভিযোগ মানতে নারাজ কমিউনিটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ। রোববার রাজধানীর মহাখালী কমিউনিটি সেন্টার, মালিবাগের হোসাফ কমিউনিটি সেন্টারে সরেজমিনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়।

মহাখালী কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপক আব্দুল হালিম বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, তারা কাউকে ফুল সজ্জিতকরণে কাজ করতে বাধ্য করেন না। তবে বেশিরভাগ লোকই ঝামেলায় না গিয়ে তাদের দিয়েই ফুলসজ্জার কাজ করিয়ে থাকেন।

হোসাফ কমিউনিটি সেন্টারের পক্ষে কেউ কথা বলতে চাননি। তবে মগবাজারের সিলিবারেশন কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশিরভাগ মানুষই একসঙ্গে সব চুক্তি করেন। আলাদাভাবে কেউ ঝামেলা করতে চান না। তাদের কাছ থেকে সজ্জিতকরণের কাজ করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বলেও দাবি তার।