ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদকে ঘিরে লবণের দাম বাড়ে, চামড়া নষ্টের আশঙ্কা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে কেন্দ্র করে সরব হয়ে উঠছে ট্যানারিপাড়া, কাঁচা চামড়া ও লবণ ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, দেশের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করা হয় কোরবানির ঈদে। তবে প্রতিবছর ঈদকে ঘিরে লবণের দাম বাড়ে, ফলে বিপাকে পড়তে হয় চামড়া সংরক্ষণকারীদের। কারণ কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে কয়েক ধাপে ব্যবহৃত হয় লবণ। দাম বাড়লে অনেক ব্যবসায়ী চামড়ায় কম লবণ ব্যবহার করেন। ফলে চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যায়।

এদিকে, আসন্ন ঈদেও লবণের দাম বাড়লে চামড়া শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। আর এবার ঈদে লবণের দাম বাড়বে না বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ।

সমিতির তথ্য অনুযায়ী, আসন্ন কোরবানির ঈদে দেশে লবণের চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে বাজারে, ৭৪ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা লবণ বিক্রি হচ্ছে ৮৮০-৯০০ টাকায়। কিন্তু বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, বর্তমানে প্রতিবস্তা লবণ কিনতে ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে ৯৪০-৯৫০ টাকা। যা ঈদের আগে বেড়ে এক হাজার ২০০-৩০০ টাকায় ঠেকতে পারে।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য উপকরণ হলো লবণ। প্রতিটি চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য গড়ে ১০-১২ কেজি লবণের প্রয়োজন হয়। দেশের বাজারের চাহিদার ৮০ শতাংশ কাঁচা চামড়াই কোরবানির ঈদের পশু থেকে  সংগ্রহ করা। সুতরাং এই সময়ে এক সঙ্গে প্রচুর লবণের চাহিদা থাকে। আর এই সুযোগে একটি চক্র হঠাৎ করেই লবণের দাম বস্তাপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা বাড়িয়ে দেয়। ফলে বিপাকে পড়তে হয় কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের, ক্ষতিগ্রস্থ হয় চামড়া শিল্প।

এ বিষয়ে হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিককে বলেন, ‘কোনো বছরই চাহিদার তুলনায় লবণের সংকট থাকে না। দেশে উৎপাদনের পাশাপাশি বাইরের দেশ থেকেও লবণ আমদানি করা হয়। তারপরও ঈদের আগে কারসাজি করে বাজারে লবণের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়। ওই সময়ে লবণের দাম কিছুটা বাড়তি থাকে। এ সময় অনেক চামড়া সংগ্রহকারীরা প্রয়োজনের তুলনায় চামড়ায় কম লবণ ব্যবহার করেন। ফলে চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে পুরো চামড়া শিল্পে।’

কিন্তু কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ। সমিতির সভাপতি নুরুল কবীর সাংবাদিককে বলেন, ‘দাম বাড়ার জন্য বরাবরই চামড়া ব্যবসায়ীরা লবণ ব্যবসায়ীদের ওপর দোষ চাপান। যা সত্য নয়। তবে আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে লবণের দাম বাড়বে না বলে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি। ইতোমধ্যে বাজার মনিটরিং শুরু হয়েছে। যদি এ ধরণের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে যথেষ্ট পরিমান লবণ সরবরাহ আছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ঈদকে ঘিরে লবণের দাম বাড়ে, চামড়া নষ্টের আশঙ্কা

আপডেট টাইম : ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে কেন্দ্র করে সরব হয়ে উঠছে ট্যানারিপাড়া, কাঁচা চামড়া ও লবণ ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, দেশের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করা হয় কোরবানির ঈদে। তবে প্রতিবছর ঈদকে ঘিরে লবণের দাম বাড়ে, ফলে বিপাকে পড়তে হয় চামড়া সংরক্ষণকারীদের। কারণ কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে কয়েক ধাপে ব্যবহৃত হয় লবণ। দাম বাড়লে অনেক ব্যবসায়ী চামড়ায় কম লবণ ব্যবহার করেন। ফলে চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যায়।

এদিকে, আসন্ন ঈদেও লবণের দাম বাড়লে চামড়া শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। আর এবার ঈদে লবণের দাম বাড়বে না বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ।

সমিতির তথ্য অনুযায়ী, আসন্ন কোরবানির ঈদে দেশে লবণের চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে বাজারে, ৭৪ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা লবণ বিক্রি হচ্ছে ৮৮০-৯০০ টাকায়। কিন্তু বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, বর্তমানে প্রতিবস্তা লবণ কিনতে ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে ৯৪০-৯৫০ টাকা। যা ঈদের আগে বেড়ে এক হাজার ২০০-৩০০ টাকায় ঠেকতে পারে।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য উপকরণ হলো লবণ। প্রতিটি চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য গড়ে ১০-১২ কেজি লবণের প্রয়োজন হয়। দেশের বাজারের চাহিদার ৮০ শতাংশ কাঁচা চামড়াই কোরবানির ঈদের পশু থেকে  সংগ্রহ করা। সুতরাং এই সময়ে এক সঙ্গে প্রচুর লবণের চাহিদা থাকে। আর এই সুযোগে একটি চক্র হঠাৎ করেই লবণের দাম বস্তাপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা বাড়িয়ে দেয়। ফলে বিপাকে পড়তে হয় কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের, ক্ষতিগ্রস্থ হয় চামড়া শিল্প।

এ বিষয়ে হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিককে বলেন, ‘কোনো বছরই চাহিদার তুলনায় লবণের সংকট থাকে না। দেশে উৎপাদনের পাশাপাশি বাইরের দেশ থেকেও লবণ আমদানি করা হয়। তারপরও ঈদের আগে কারসাজি করে বাজারে লবণের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়। ওই সময়ে লবণের দাম কিছুটা বাড়তি থাকে। এ সময় অনেক চামড়া সংগ্রহকারীরা প্রয়োজনের তুলনায় চামড়ায় কম লবণ ব্যবহার করেন। ফলে চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে পুরো চামড়া শিল্পে।’

কিন্তু কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ। সমিতির সভাপতি নুরুল কবীর সাংবাদিককে বলেন, ‘দাম বাড়ার জন্য বরাবরই চামড়া ব্যবসায়ীরা লবণ ব্যবসায়ীদের ওপর দোষ চাপান। যা সত্য নয়। তবে আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে লবণের দাম বাড়বে না বলে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি। ইতোমধ্যে বাজার মনিটরিং শুরু হয়েছে। যদি এ ধরণের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে যথেষ্ট পরিমান লবণ সরবরাহ আছে।