বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সাগরে, নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারি ঘাট এলাকার চিত্র। এখান থেকে মাছ যায় নগরের খুচরা বাজারে। ভাদ্র মাসের পূর্ণিমার ‘জো’তে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। এতে জেলেদের পাশাপাশি ক্রেতাদের মুখেও হাসি। আকারভেদে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে ইলিশের স্বাদ নিতে পারছে মানুষ।
নগরের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। এ ছাড়া আরও বড় আকারের ইলিশের দাম ৭০০ টাকা কিংবা আরেকটু বেশি। মাছের স্বাদও ভালো বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ক্রেতা।
গত ২৭ আগস্ট ছিল পূর্ণিমা। পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে চার দিন আগে থেকে জো (ইলিশ ধরার প্রাকৃতিক মৌসুম) শুরু হয়। পূর্ণিমার পরের চার দিনও জো থাকে। ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা অমাবস্যায় সবচেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়ে।
উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎস্যজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি লিটন দাশ বলেন, ভাদ্র মাসের পূর্ণিমার দিকে সব জেলে তাকিয়ে থাকেন। এবারও ইলিশ ধরা পড়েছে। যদিও তা অন্যবারের চেয়ে তুলনামূলক কম। তবে দাম কমেছে।
সমুদ্র উপকূল কাট্টলী এলাকায় ছোট আকারের অর্থাৎ ৫০০ গ্রামের নিচের ইলিশগুলো প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশের দাম ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎস্যজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ ফেডারেশনের অধীনে পতেঙ্গা থেকে সীতাকুণ্ড উপকূল পর্যন্ত ৩৮টি গ্রামের প্রায় ৫২ হাজার পরিবার মৎস্য পেশার সঙ্গে যুক্ত। তারা প্রতিদিন ছোট ছোট নৌকাযোগে সমুদ্র, নদী উপকূলে মাছ ধরতে যায়। বিকেল নাগাদ মাছ নিয়ে উপকূলে ফিরে আসে। সেখানে আড়তদারদের কাছে এসব মাছ জমা দেয়। ক্ষুদ্র জেলেদের মাছ আড়তদারদের পাশাপাশি খুচরা ব্যবসায়ীরাও কিনে নেন।
নগরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র হচ্ছে ফিশারি ঘাট। গতকাল ফিশারি ঘাট বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ঠেলাগাড়ি, পিকআপযোগে নগর ও বিভিন্ন স্থান থেকে ইলিশ আসছে আড়তে। ইলিশ নামিয়ে টুকরিতে ভরে রাখা হয়েছে। এরপর আকার অনুযায়ী নিলামে উঠছে ইলিশ। খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন কাঁচাবাজারে।
পাইকারিতে ৫০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।
খুচরা বাজারেও কমে গেছে দাম। নগরের সিরাজউদ্দৌলা সড়কের কাঁচাবাজারে গতকাল শাহাবুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেনেন ৬০০ টাকা কেজি দরে।
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রজনন মৌসুমের কারণে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেবে মৎস্য দপ্তর। এর আগে আরও দুটি জো পাবেন জেলেরা।
মৎস্য দপ্তর জানায়, গতবার সারা দেশে প্রায় পাঁচ লাখ টন ইলিশ পাওয়া গিয়েছিল। এবারও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী মাছ ধরা পড়ছে।