ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইয়ামাহার ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বাংলাদেশ যাত্রা শুরু

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাপানের সুপরিচিত ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল সংযোজনের একটি কারখানা করেছে এসিআই মোটরস। এ কারখানা আগামীকাল শনিবার উদ্বোধন করা হবে। শুধু সংযোজন নয়, ছয় মাস পর একই কারখানায় ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনও হবে।

এর মাধ্যমেই মূলত বাংলাদেশে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হলো ইয়ামাহার। এসিআই কারখানাটি করেছে গাজীপুরের শ্রীপুরে। কারখানার জমির মোট পরিমাণ ৬ একর। এসিআই বলছে, আপাতত তারা সেখানে ১০০ কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ করেছে, যা পরে আরও বাড়বে। শুরুতে তারা ইয়ামাহার দুটি মডেলের মোটরসাইকেল সংযোজন শুরু করবে।

ছয় মাস পর তারা একটি মডেলের মোটরসাইকেল উৎপাদন করবে। তখন অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার (ওইএম) হিসেবে স্বীকৃতি মিলবে বলে আশা করছে এসিআই।

এসিআই বাংলাদেশে ইয়ামাহা মোটরসাইকেলের একমাত্র পরিবেশক। কারখানাটি করতে এসিআইকে কারিগরি সহায়তাও দিচ্ছে ইয়ামাহা। জানতে চাইলে এসিআই মোটরসের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস প্রথম আলোকে বলেন, ইয়ামাহা এই প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানকে তাদের মোটরসাইকেল সংযোজনের জন্য কারখানা করতে দিচ্ছে। বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের বাজার বড় হচ্ছে। এ বাজারে ইয়ামাহার মোটরসাইকেল বিক্রি আরও বাড়াতেই কারখানা করা হয়েছে। তিনি জানান, এ কারখানায় বিনিয়োগ করেছে এসিআই মোটরস। আর কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ইয়ামাহা।

ইয়ামাহা মোটর করপোরেশন ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। কোম্পানিটির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে তাদের মোট বিক্রির পরিমাণ ১ লাখ ৬৭ হাজার কোটি জাপানি ইয়েন, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির মোট আয়ের ৬১ শতাংশ আসে মোটরসাইকেল ও এর যন্ত্রাংশ বিক্রি করে। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি ইয়ামাহা শিল্প যন্ত্রপাতিও উৎপাদন করে। তাদের মোট ১১৩টি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রয়েছে। মূলধন বিনিয়োগ আছে আরও ৩০টি কোম্পানিতে।

এসিআইয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বাজারে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে ১৯ হাজারের কিছু বেশি। ২০১৯ সালে তারা ২৫ হাজারের মতো মোটরসাইকেল বিক্রি করার লক্ষ্য ঠিক করেছে। এসিআই এত দিন সংযোজিত অবস্থায় মোটরসাইকেল আমদানি করে বিক্রি করছিল। ফলে বাজারে দাম পড়ছিল অনেক বেশি। উল্লেখ্য, পূর্ণ সংযোজিত অবস্থায় মোটরসাইকেল আমদানি করলে মোট করভার দাঁড়ায় ১৫২ শতাংশ। সংযোজন করলে সেটা ৯২ শতাংশে নেমে আসবে।

সংযোজন কারখানা চালু হলে ইয়ামাহা মোটরসাইকেলের দাম কমবে কি না জানতে চাইলে সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, ‘বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে ইতিমধ্যে আমরা দাম বেশ কমিয়ে দিয়েছি।’

দেশে মোটরসাইকেল বাজার

২০১৮ সালে দেশে মোটরসাইকেল বিক্রি প্রায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির বাজার জরিপ অনুযায়ী, ২০১৮ সালে দেশে ৪ লাখ ৮৭ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে। আগের বছর বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৮০ হাজারটি। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে মোটরসাইকেলের বাজার বেড়েছে ১৩০ শতাংশ। অবশ্য এই বাজার জরিপ আনুষ্ঠানিক কোনো গবেষণা নয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

ইয়ামাহার ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বাংলাদেশ যাত্রা শুরু

আপডেট টাইম : ১১:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাপানের সুপরিচিত ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল সংযোজনের একটি কারখানা করেছে এসিআই মোটরস। এ কারখানা আগামীকাল শনিবার উদ্বোধন করা হবে। শুধু সংযোজন নয়, ছয় মাস পর একই কারখানায় ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনও হবে।

এর মাধ্যমেই মূলত বাংলাদেশে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হলো ইয়ামাহার। এসিআই কারখানাটি করেছে গাজীপুরের শ্রীপুরে। কারখানার জমির মোট পরিমাণ ৬ একর। এসিআই বলছে, আপাতত তারা সেখানে ১০০ কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ করেছে, যা পরে আরও বাড়বে। শুরুতে তারা ইয়ামাহার দুটি মডেলের মোটরসাইকেল সংযোজন শুরু করবে।

ছয় মাস পর তারা একটি মডেলের মোটরসাইকেল উৎপাদন করবে। তখন অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার (ওইএম) হিসেবে স্বীকৃতি মিলবে বলে আশা করছে এসিআই।

এসিআই বাংলাদেশে ইয়ামাহা মোটরসাইকেলের একমাত্র পরিবেশক। কারখানাটি করতে এসিআইকে কারিগরি সহায়তাও দিচ্ছে ইয়ামাহা। জানতে চাইলে এসিআই মোটরসের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস প্রথম আলোকে বলেন, ইয়ামাহা এই প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানকে তাদের মোটরসাইকেল সংযোজনের জন্য কারখানা করতে দিচ্ছে। বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের বাজার বড় হচ্ছে। এ বাজারে ইয়ামাহার মোটরসাইকেল বিক্রি আরও বাড়াতেই কারখানা করা হয়েছে। তিনি জানান, এ কারখানায় বিনিয়োগ করেছে এসিআই মোটরস। আর কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ইয়ামাহা।

ইয়ামাহা মোটর করপোরেশন ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। কোম্পানিটির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে তাদের মোট বিক্রির পরিমাণ ১ লাখ ৬৭ হাজার কোটি জাপানি ইয়েন, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটির মোট আয়ের ৬১ শতাংশ আসে মোটরসাইকেল ও এর যন্ত্রাংশ বিক্রি করে। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি ইয়ামাহা শিল্প যন্ত্রপাতিও উৎপাদন করে। তাদের মোট ১১৩টি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি রয়েছে। মূলধন বিনিয়োগ আছে আরও ৩০টি কোম্পানিতে।

এসিআইয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বাজারে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে ১৯ হাজারের কিছু বেশি। ২০১৯ সালে তারা ২৫ হাজারের মতো মোটরসাইকেল বিক্রি করার লক্ষ্য ঠিক করেছে। এসিআই এত দিন সংযোজিত অবস্থায় মোটরসাইকেল আমদানি করে বিক্রি করছিল। ফলে বাজারে দাম পড়ছিল অনেক বেশি। উল্লেখ্য, পূর্ণ সংযোজিত অবস্থায় মোটরসাইকেল আমদানি করলে মোট করভার দাঁড়ায় ১৫২ শতাংশ। সংযোজন করলে সেটা ৯২ শতাংশে নেমে আসবে।

সংযোজন কারখানা চালু হলে ইয়ামাহা মোটরসাইকেলের দাম কমবে কি না জানতে চাইলে সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, ‘বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে ইতিমধ্যে আমরা দাম বেশ কমিয়ে দিয়েছি।’

দেশে মোটরসাইকেল বাজার

২০১৮ সালে দেশে মোটরসাইকেল বিক্রি প্রায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির বাজার জরিপ অনুযায়ী, ২০১৮ সালে দেশে ৪ লাখ ৮৭ হাজার মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে। আগের বছর বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৮০ হাজারটি। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে মোটরসাইকেলের বাজার বেড়েছে ১৩০ শতাংশ। অবশ্য এই বাজার জরিপ আনুষ্ঠানিক কোনো গবেষণা নয়।