ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক দশকে ভারতের চেয়ে ধনী হবে বাংলাদেশ: গবেষণা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আন্তর্জাতিক একটি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বলছে, অর্থনীতির বিচারে আগামী দশক হবে এশিয়ার এবং এই মহাদেশের দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান হবে খুবই উল্লেখযোগ্য। তারা বলছে, দুহাজার কুড়ির দশকে এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে সাত শতাংশ এবং পুরো দশক ধরে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। সম্প্রতি প্রকাশিত স্ট্যানচার্টের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এশিয়ার এই দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার ও ফিলিপিন।

ব্যাংকের ভারত-ভিত্তিক গবেষণা শাখার প্রধান মাধুর ঝা এবং সারা বিশ্বে ব্যাংকটির প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভিড ম্যান এই গবেষণা পরিচালনা করেছেন।

বিশাল জনসংখ্যার সুবিধা

তারা তাদের গবেষণায় বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটবে সবচেয়ে বেশি কারণ এসব দেশের লোকসংখ্যা হবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশ।

এই বিশাল জনসংখ্যা ভারতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতের বিনিয়োগ থেকে সুফল পেতে শুরু করবে বাংলাদেশ যা তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, এশিয়াতে এই পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছে ২০১০ সাল থেকে। তখন থেকেই স্ট্যানডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক এশিয়ার এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নজর রাখতে শুরু করে।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, মাথাপিছু আয়ের হিসেবে আগামী এক দশকে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।

ভারতের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

তারই এক হিসাব দিতে গিয়ে ব্যাংকটি বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় যেখানে ১,৬০০ ডলার সেখানে ২০৩০ সালে এই আয় দাঁড়াবে ৫,৭০০ ডলার।

এই একই সময়ে ভারতে মাথাপিছু আয় হবে ৫,৪০০ ডলার। যদিও বর্তমানে ভারতে মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের চেয়েও বেশি। ২০১৮ সালে ভারতে মাথাপিছু আয় ছিল ১,৯০০ ডলার।

এই মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি ঘটবে ভিয়েতনামে। বলা হচ্ছে, তাদের হিসাবে, ২০৩০ সালে দেশটির মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১০,৪০০ ডলার যেখানে গতবছর এই আয় ছিল ২,৫০০ ডলার।

মিয়ানমারে বর্তমানে মাথাপিছু আয় ১,৩০০ ডলার এবং ২০৩০ সালে তাদের এই আয় দাঁড়াবে ৪,৮০০ ডলার।

সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেশগুলোর এই ক্লাবে গত চার দশক ধরেই ছিল চীন। কিন্তু এবার যে তালিকা করা হয়েছে তাতে চীন বাদ পড়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আগের তুলনায় শ্লথ হয়ে পড়েছে।

স্ট্যানচার্ট গবেষকরা বলছেন, চীন যেভাবে উচ্চ আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সেখানে দ্রুত হারে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হবে।

তারা বলছে, আগামী এক দশকে বিশ্ব অর্থনীতির দুই নম্বর এই দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

গবেষক মাধুর ঝা এবং ডেভিড ম্যান বলছেন, দ্রুত এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে দেশগুলোতে আয়ের বৈষম্য, অপরাধ, দূষণ এসব ব্যাপারেও ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে।

‘দ্রুত প্রবৃদ্ধি যে লোকজনকে শুধু চরম দারিদ্র থেকে বের করে আনতে সাহায্য করে তা নয়, এর সাথে সাথে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাতেও ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে।’

‘দ্রুত প্রবৃদ্ধির ফলে মানুষের আয় বেড়ে যাওয়ার কারণে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও কমে আসে। এর ফলে অনেক ধরনের সংস্কারের কাজও সহজ হয়ে পড়ে।’ –বিবিসি বাংলা

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

এক দশকে ভারতের চেয়ে ধনী হবে বাংলাদেশ: গবেষণা

আপডেট টাইম : ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আন্তর্জাতিক একটি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বলছে, অর্থনীতির বিচারে আগামী দশক হবে এশিয়ার এবং এই মহাদেশের দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান হবে খুবই উল্লেখযোগ্য। তারা বলছে, দুহাজার কুড়ির দশকে এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে সাত শতাংশ এবং পুরো দশক ধরে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। সম্প্রতি প্রকাশিত স্ট্যানচার্টের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এশিয়ার এই দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার ও ফিলিপিন।

ব্যাংকের ভারত-ভিত্তিক গবেষণা শাখার প্রধান মাধুর ঝা এবং সারা বিশ্বে ব্যাংকটির প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভিড ম্যান এই গবেষণা পরিচালনা করেছেন।

বিশাল জনসংখ্যার সুবিধা

তারা তাদের গবেষণায় বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটবে সবচেয়ে বেশি কারণ এসব দেশের লোকসংখ্যা হবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশ।

এই বিশাল জনসংখ্যা ভারতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতের বিনিয়োগ থেকে সুফল পেতে শুরু করবে বাংলাদেশ যা তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, এশিয়াতে এই পরিবর্তন ঘটতে শুরু করেছে ২০১০ সাল থেকে। তখন থেকেই স্ট্যানডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক এশিয়ার এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নজর রাখতে শুরু করে।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, মাথাপিছু আয়ের হিসেবে আগামী এক দশকে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।

ভারতের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

তারই এক হিসাব দিতে গিয়ে ব্যাংকটি বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় যেখানে ১,৬০০ ডলার সেখানে ২০৩০ সালে এই আয় দাঁড়াবে ৫,৭০০ ডলার।

এই একই সময়ে ভারতে মাথাপিছু আয় হবে ৫,৪০০ ডলার। যদিও বর্তমানে ভারতে মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের চেয়েও বেশি। ২০১৮ সালে ভারতে মাথাপিছু আয় ছিল ১,৯০০ ডলার।

এই মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি ঘটবে ভিয়েতনামে। বলা হচ্ছে, তাদের হিসাবে, ২০৩০ সালে দেশটির মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১০,৪০০ ডলার যেখানে গতবছর এই আয় ছিল ২,৫০০ ডলার।

মিয়ানমারে বর্তমানে মাথাপিছু আয় ১,৩০০ ডলার এবং ২০৩০ সালে তাদের এই আয় দাঁড়াবে ৪,৮০০ ডলার।

সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেশগুলোর এই ক্লাবে গত চার দশক ধরেই ছিল চীন। কিন্তু এবার যে তালিকা করা হয়েছে তাতে চীন বাদ পড়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আগের তুলনায় শ্লথ হয়ে পড়েছে।

স্ট্যানচার্ট গবেষকরা বলছেন, চীন যেভাবে উচ্চ আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সেখানে দ্রুত হারে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হবে।

তারা বলছে, আগামী এক দশকে বিশ্ব অর্থনীতির দুই নম্বর এই দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

গবেষক মাধুর ঝা এবং ডেভিড ম্যান বলছেন, দ্রুত এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে দেশগুলোতে আয়ের বৈষম্য, অপরাধ, দূষণ এসব ব্যাপারেও ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে।

‘দ্রুত প্রবৃদ্ধি যে লোকজনকে শুধু চরম দারিদ্র থেকে বের করে আনতে সাহায্য করে তা নয়, এর সাথে সাথে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাতেও ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে।’

‘দ্রুত প্রবৃদ্ধির ফলে মানুষের আয় বেড়ে যাওয়ার কারণে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও কমে আসে। এর ফলে অনেক ধরনের সংস্কারের কাজও সহজ হয়ে পড়ে।’ –বিবিসি বাংলা