বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে অধিকাংশ আম বাগান। ঝড়ের বাতাসে আম পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। সেই আমা বিক্রি হচ্ছে মাত্র দেড় টাকা কেজি দরে। এতে মাথায় হাত আমচাষিদের।
বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যায় জেলায় কালবৈশাখী আঘাত হানে। প্রায় ১০ মিনিট চলা ঝড়ে জেলার সদর উপজেলা, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট, নাচোল ও শিবগঞ্জে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অধিকাংশ বাগানের আম পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
শিবগঞ্জ সেলিমাবাদ এলাকার ৬ বছরের শিশু নিয়ামত জানায়, বুধবার রাতের ঝড়ে সে ৩ মণ আম কুড়িয়েছে। দেড় টাকা কেজি করে পাইলিং মোড়ের এক আম ব্যবসায়ীর কাছে সকালে বিক্রি করে।
একই কথা জানান বাঁশ মহল গ্রামের নয়ন ও কালুপুর গ্রামের সাদিকুল ইসলাম। তারাও ঝড়ের মধ্যে বাগানে গিয়ে প্রায় ১০ মণ আম কুড়িয়ে বাজারে বিক্রি করতে আসেন।
তাদের দাবি, উপজেলার অনেক মানুষ ঝড়ে বস্তায় ভরে আম কুড়িয়েছে। কেও আমের আচার বানাচ্ছে। আবার কেও আমসত্ত্বসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করছে।
চামার হাট এলাকার আম বাগান মালিক তোহরুল ইসলাম জানান, ঝড়ে তার বাগানের আশ্বিনা ফজলিসহ বিভিন্ন জাতের প্রায় সবগুলো আম পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। একই কথা জানান মোবারকপুর ও শাহবাজপুর এলাকার আম চাষিরা।
কাঁদতে কাঁদতে ধোবড়া এলাকার আম চাষি এখলাসুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক বছরের প্রচুর লোকসানের পর এবার স্বপ্ন ছিল আমের ভাল দাম পাব। কিন্তু কালবৈশাখী ঝড়ে আমার বাগানের সব আম পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। বাগানটিতে প্রায় ২২-২৫ লাখ টাকার আম ছিল। এখন ২ লাখ টাকা দাম পাব কিনা সন্দেহ রয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ভোরে কথা হয় পাইলিং মোড়ের আম ক্রেতা নাইমুল ও রফিকের সঙ্গে। তারা জানান, ঝড়ে পড়া আম প্রায় প্রতি বাড়ির লোকজন বিক্রি করতে আসছেন। ভোর রাত থেকে দেড় টাকা কেজি দরে তারা প্রায় ৫০০ মণ আম কিনেছেন। তাদের কেনা আমগুলো পাঠানো হবে, চট্রগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্নস্থানে।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম আমিনুজ্জামান জানান, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে এ উপজেলাতে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুধু শিবগঞ্জে ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমির আম বাগানের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার ৭৪০ হেক্টর বাগানের আম ঝড়ে পড়েছে।’
তার দাবি, কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় কয়েক কোটি টাকার আম নষ্ট হয়ে গেছে।