বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল৷ বাজেট বক্তৃতা পড়তে পড়তে তিনি অসুস্থ বোধ করলে বাকি অংশ পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ বাজেটের কোন অংশটি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে? বার্তা সংস্থা ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন ছিল চার বিশেষজ্ঞের কাছে৷
অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে ঘোষিত বাজেটের চেয়ে কীভাবে বাস্তবায়ন হয় সেই দিকেই আমার মনোযোগ বেশি৷ গত বছরের বাজেটে কী ছিল, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কেন অর্জিত হয়নি সেটা যদি বুঝতে পারি তাহলে এবারের বাজেট হয়ত আরও ভালো বুঝতে পারব৷ আর কর কীভাবে পরিবর্তন হলো সেটা তো বোঝা গেল না৷ একটা জিনিস আমার ভালো লেগেছে, করের হার না বাড়িয়ে কীভাবে আওতা বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা করা হয়েছে৷ এটা নীতিগতভাবে ভালো দিক।’
অধ্যাপক কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘আমার ভালো লেগেছে তারুণ্যের ব্যবহার৷ আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের ইশতেহারে এটাকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি৷’
‘আমাদের এখানে পাঁচ কোটি ২৮ লাখের মতো তরুণ প্রজন্ম আছে, এদেরকে ব্যবহার করার ওপর খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ বারবার বলা হয়েছে, এটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে৷ আরেকটা জিনিস ভালো লেগেছে, ইশতেহারেও ছিল, আমার গ্রাম আমার শহর, মানে গ্রামগুলোকে শহরের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা৷ এটাও একটা উল্লেখযোগ্য দিক৷ এবারও অন্য বছরের মতো শিক্ষার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেটাও ভালো দিক৷ কিন্তু বাস্তবায়ন করতে করতে সময় লেগে যায়, খুবই ধীরে শুরু হয় বাস্তবায়ন৷ এবার আগে থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে আশা করব৷’
‘আরেকটা জিনিস ব্যাংকিং খাতে যে বিশৃঙ্খলা আছে, সেটা দূর করার জন্য কিছু প্রস্তাবনা আছে, সেই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে৷ দ্রুত কমিশন গঠন করে যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো চিহ্নিত হরে সমাধান করতে হবে৷ কিছু সমস্যা তো আগে থেকেই চিহ্নিত আছে, সেগুলো সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে৷ আর বাজেটে প্রতি বছরই রাজস্ব আদায় ঘাটতি থাকে৷ এবার আগে থেকে চেষ্টা করলে সেটা হয়ত পূরণ করা সম্ভব৷’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘বাজেট আসলে গতানুগতিক হয়েছে৷ এর মধ্যে এমন কোনো বিশেষ বিষয় নেই৷ তবে ভ্যাট বাস্তবায়ন করতে পেরেছে এটাই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক৷ যদিও ভ্যাটের নিয়ম অনুযায়ী একটি হার হওয়া উচিত ছিল সেটা হয়নি৷ তবুও অনেক ঝামেলার পর এটি বাস্তবায়ন হয়েছে৷’
‘আরেকটি জিনিস হলো তরুণ-যুবকদের জন্য একটা মূলধনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ যদিও এটা খুবই কম তারপরও যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সেটি বড় দিক৷ এই দুটি জিনিস আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে৷’
গবেষণা সংস্থা সেন্টার পর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এবারের বাজেটে সরকার ধারাবাহিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে৷ সেটার ব্যাপারে নিরাপত্তাবলয় বাড়ছে৷ কোন কোন ক্ষেত্রে ভাতাও বেড়েছে এবং অন্যান্য যে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী আছে তাদের জন্যও বরাদ্দ বেড়েছে৷ বিশেষ করে এর আগে নারী বাজেটের সাথে এখন শিশু বাজেট যুক্ত হচ্ছে৷ প্রবীণদের ব্যাপারেও কথা আছে, এই মানবিকতার দিকটি আমার কাছে পছন্দ হয়েছে।