বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বেসিক ব্যাংকের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একইসঙ্গে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, টানা তিন বছর ধরে লোকসান দিয়ে আসা শাখাগুলোকে বন্ধ করে দেয়া হবে। যাদের কারণে ব্যাংকটির ‘এই দুরাবস্থা’ হয়েছে তাদের খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে সেনা কল্যাণ ভবনে বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, বেসিক ব্যাংককে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। ব্যাংকটির পূর্বের গৌরব ফিরিয়ে আনা হবে।
“আমরা অর্থমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্যাংকটির বিশেষ অডিট করছি। সেই অডিটের আলোকে যারা ব্যাংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ঋণ নিয়ে ফেরত দেয়নি। তাদের সবাইকে খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঋণ আদায় করা হবে।”
লোকসানী শাখা বন্ধ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, “ব্যাংকটিকে লাভজনক করতে হবে। আমানতকারী ও গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। আর সেজন্য যে সব শাখা টানা তিন বছর ধরে লোকসান দেবে সেগুলোকে বন্ধ করে দেয়া হবে। এক্ষেত্রে কোন ধরনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ শুনবো না; জানতেও চাইবো না।
“সেসব শাখা এখন আর লাভ করতে পারছে না। ওইসব শাখাগুলোর মধ্যে যেগুলো গত দুই বছর এবং বর্তমান বছরে লাভ দেখাতে ব্যর্থ হবে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। যারা দুই বছর ধরে লোকসানে আছেন তারা এই বছর সতর্ক হয়ে যান,” বলেন মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটিতে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। সে সময়ে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অনেক ব্যাংক কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং বেনামে ঋণ দেওয়া হয়েছে। অডিটের মাধ্যমে সব বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সারা দেশে ব্যাংকটির মোট ৭২ টি শাখা রয়েছে। এরমধ্যে অর্ধেকই লোকসানে রয়েছে বলে জানা গেছে।
সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকার পাঁচ বছরে (২০০৯-১৪) অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল মোট বিতরণ করা ঋণের ৫ শতাংশ। ২০১৪ সাল শেষে তা দাঁড়ায় ৬৮ শতাংশ।
এক সময় লাভজনক থাকা বেসিক ব্যাংকে ২০০৯ সালে আবদুল হাই বাচ্চুকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে লোকসানের দিকে যেতে থাকে।
চাপের মুখে থাকা বাচ্চু ২০১৪ সালে পদত্যাগ করেন।
আলোচনায় অন্যদের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক, বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন এ মজীদ, নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আলম বক্তব্য রাখেন।