বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অধিক সময় ধরে সে খাবার সংরক্ষণ করা যায়। কিন্তু এ ধারণা সঠিক নয়। অনেক খাবার আছে যেগুলো ফ্রিজে রাখলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। আমরা খাবার গ্রহণ করি শুধু খুদা নিবারণের জন্য নয়। শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্যও।
জেনে নেওয়া যাক কোন খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ না করাই উত্তম।
পুদিনা পাতা: আপনি যদি পুদিনা পাতা ফ্রিজে রাখেন তাহলে সেগুলোর স্বাদ এবং গন্ধ নষ্ট হয়ে যাবে। ঠাণ্ডা তাপমাত্রা তাদের সতেজভাব দ্রুত নষ্ট করে এবং শুষ্ক করে তোলে। পুদিনা পাতা সংরক্ষণের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো সেগুলোকে পানিভর্তি জারে রাখা এবং সেই জারের মুখ খুলে রাখা।
আলু: আলু কখনো ফ্রিজে রাখার দরকার নেই। শুধু ছিদ্রযুক্ত রেখে সংরক্ষণ করুন। ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় রাখলে আলুতে থাকা শ্বেতসার সব সুগারে রুপান্তরিত হয়। ফলে রান্নার সময় আলুর রঙ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সুতরাং আলো থেকে দূরে এবং না ধুয়েই আলু সংরক্ষণ করুন। আর্দ্রতা আলুকে দ্রুত নষ্ট করে।
মধু: মধু কখনোই ফ্রিজে সংরক্ষণ করার দরকার নেই। ফ্রিজের বাইরে স্বাভাবিক তাপমাত্রায়ও মধু খুবই মসৃণ এবং তাজা থাকবে। তবে মধু যে পাত্রে রাখবেন তার মুখটি ভালো ভাবে আটকে রাখুন।
অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল বা যে কোনো ধরনের রান্নার তেল ফ্রিজে রাখবেন না। এতে সেগুলো জমে যেতে পারে এবং মাখনের মতো শক্ত রুপ ধারন করতে পারে। নারকেল তেলের বেলায়ও একথা সত্য। আপনার কিচেন ক্যাবিনেটের কোনো শীতল জায়গায় এগুলো সংরক্ষণ করুন কিন্তু তাপ থেকে অবশ্যই দূরে রাখবেন।
তরমুজ: জার্নাল অফ অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজ বা খরমুজ ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় রাখলে এর পু্ষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কারণ ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় তরমুজের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদানগুলো সব নষ্ট হয়ে যায়। ফলে খোলা জায়গায় ফলের র্যাকে সংরক্ষণ করলেই বেশি ভালো থাকবে।
রুটি: আপনি হয়তো এতদিন ফ্রিজেই সংরক্ষণ করে আসছিলেন রুটি। কিন্তু সময় এসেছে পরিবর্তনের। ফ্রিজে রুটি রাখলে তা শক্ত এবং রাবারের মতো হয়ে যেতে পারে। আর তাছাড়া ঠাণ্ডা এবং আর্দ্র তাপমাত্রা রুটি আরো দ্রুত বাসি হয়ে পড়তে পারে।
টমেটো: কাঁচা টমেটো স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা উচিত। যাতে সেগুলো আরো সুস্বাদু এবং রসালো হয়। অতিরিক্ত কম তাপমাত্রায় টমেটোর স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। পুরোপুরি পেকে গেলে এরপর আপনি টমেটো প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে ফ্রিজ রাখতে পারবেন। তবে ফ্রিজ থেকে বের করার পর আধা ঘন্টা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে তারপর রান্না করুন।
পেঁয়াজ: খোসাযুক্ত পেঁয়াজের বেঁচে থাকার জন্য দরকার হয় আলো-বাতাসের। আপনি যদি ফ্রিজে খোসাসহ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেন তাহলে সেগুলো অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে পঁচে যেতে পারে। ফলে ফ্রিজে পেঁয়াজ রাখতে গেলে তা সবসময়ই খোসা ছাড়িয়েই রাখবেন। পেঁয়াজ আপনি খোলা জায়গাও রাখতে পারেন কিন্তু তা যেন অবশ্যই সূর্যের্ আলো থেকে দূরে হয়। এছাড়া ছিদ্রযুক্ত কাগজের ব্যাগেও আপনি পেঁয়াজ রাখতে পারেন।
বাদাম এবং শুকনো ফল: আমাদের অনেকেই বাদাম এবং শুকনো ফল ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন এই আশায় যে এতে সেগুলোর স্বাদ ও গন্ধ নষ্ট হবে না বা পঁচে যাবে না। কিন্তু এতে বরং হিতে বিপরীত হয়। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় বরং তাদের স্বাদ ও গন্ধ নষ্ট হয়ে যায় এবং ফ্রিজে থাকা অন্যান্য গন্ধও তাদের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। এরচেয়ে বরং তাদেরকে বায়ুরোধী পাত্রে রেখে খোলা জায়গায় রাখুন।
রসুন: আপনি যদি ফ্রিজে রসুন সংরক্ষণ করেন তাহলে তা থেকে গেঁজ বের হতে শুরু করবে এবং তা রাবারের মতো হয়ে যেতে থাকবে। সুতরাং শুকনো এবং শীতল স্থানে রসুন সংরক্ষণ করুন।