ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়মিত মিষ্টি আলু কেন খাবেন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনেকেই মিষ্টি আলু খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু কতজনই বা জানেন মিষ্টি আলু স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী।

মিষ্টি আলু শুধু সাদা নয় বেগুনী, লাল, হালকা হলুদ ও কমলা রঙেরও হয়। মিষ্টি আলু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ। সবজি হিসেবেও মিষ্টি আলুর তুলনা হয় না।

মিষ্টি আলু নিয়মিত খেলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি উঠে এসেছে মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ।

১. শ্বাসকষ্ট কমে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সপ্তাহে কয়েক দিন মিষ্টি আলু খেলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া ঠিক মতো হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শ্বাসকষ্ট থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

২. ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকে
স্বাদে মিষ্টি হলেও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এই সবজিটির বেশ কার্যকর। মিষ্টি আলুতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে একেবারে নিচের দিকে রয়েছে। তাই এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরে সুগারের মাত্রা তো বাড়েই না, উল্টো ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বাড়ে
আয়রন হলো এমন একটি খনিজ যা শ্বেত এবং লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে ইমিউন সিস্টেমের ক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজে আসে। আর এই খনিজটি প্রচুর পরিমাণে আছে মিষ্টি আলুতে। ফলে সপ্তাহে এক থেকে দুবার এই সবজিটি খাওয়ার অভ্যাস করলে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না।

৪. ওজন বৃদ্ধি পায়
অপেক্ষাকৃত বেশি চিকন মানুষদের জন্য মিষ্টি আলুর খুবই উপকারী। প্রতিদিন মিষ্টি আলুকে খেলে শরীরে কমপ্লেক্স স্টার্চ, ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না।

৫. স্মৃতিশক্তি বাড়ে
মানব মস্তিষ্কের ভেতরে থাকা নার্ভ সেলগুলো নিজেদের মধ্যে যত সুন্দরভাবে সংকেত আদান-প্রদান করবে, তত স্মৃতিশক্তি বাড়তে শুরু করবে। সেই সঙ্গে বাড়বে বুদ্ধি, মনোযোগ এবং মনে রাখার ক্ষমতাও। এক্ষেত্রে পটাশিয়াম কাজে আসতে পারে। আর এই খনিজটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে মিষ্টি আলুতে। তাই স্মৃতিশক্তি বাড়াতে মিষ্টি আলু নিয়মিত রাখুন খাদ্য তালিকায়।

৬. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
মিষ্টি আলুতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটিনয়েড এবং ভিটামিন এ ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়, এই উপাদানগুলো দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

৭. ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর হয়
দাঁত এবং হাড়কে শক্ত করার পাশাপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং একাধিক সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে ভিটামিন সি-এর কোনো বিকল্প নেই। এখানেই শেষ নয়, এছাড়া ব্লাড সেলের ফর্মেশানেও ভিটামিন সি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৮. ভিটামিন বি৬-এ চাহিদা মেটায়
এই ভিটামিনটি শরীরে একাধিক ক্ষতিকর ক্যামিকেলের প্রভাব কমিয়ে দেয়। ফলে একাধিক ডিজেনারেটিভ ডিজিজ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে হার্টেরও উন্নতি ঘটায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

৯. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
প্রচুর মাত্রায় ফাইবার থাকার কারণে নিয়মিত এই সবজিটি খেলে পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যে মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে।

১০. বিষণ্নতা কমে
মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। এই খনিজটি আর্টারি এবং হার্টের পেশির কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিষণ্নতা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

নিয়মিত মিষ্টি আলু কেন খাবেন

আপডেট টাইম : ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ জুন ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনেকেই মিষ্টি আলু খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু কতজনই বা জানেন মিষ্টি আলু স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী।

মিষ্টি আলু শুধু সাদা নয় বেগুনী, লাল, হালকা হলুদ ও কমলা রঙেরও হয়। মিষ্টি আলু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ। সবজি হিসেবেও মিষ্টি আলুর তুলনা হয় না।

মিষ্টি আলু নিয়মিত খেলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি উঠে এসেছে মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ।

১. শ্বাসকষ্ট কমে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সপ্তাহে কয়েক দিন মিষ্টি আলু খেলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া ঠিক মতো হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শ্বাসকষ্ট থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

২. ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকে
স্বাদে মিষ্টি হলেও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এই সবজিটির বেশ কার্যকর। মিষ্টি আলুতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে একেবারে নিচের দিকে রয়েছে। তাই এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরে সুগারের মাত্রা তো বাড়েই না, উল্টো ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বাড়ে
আয়রন হলো এমন একটি খনিজ যা শ্বেত এবং লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে ইমিউন সিস্টেমের ক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজে আসে। আর এই খনিজটি প্রচুর পরিমাণে আছে মিষ্টি আলুতে। ফলে সপ্তাহে এক থেকে দুবার এই সবজিটি খাওয়ার অভ্যাস করলে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না।

৪. ওজন বৃদ্ধি পায়
অপেক্ষাকৃত বেশি চিকন মানুষদের জন্য মিষ্টি আলুর খুবই উপকারী। প্রতিদিন মিষ্টি আলুকে খেলে শরীরে কমপ্লেক্স স্টার্চ, ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না।

৫. স্মৃতিশক্তি বাড়ে
মানব মস্তিষ্কের ভেতরে থাকা নার্ভ সেলগুলো নিজেদের মধ্যে যত সুন্দরভাবে সংকেত আদান-প্রদান করবে, তত স্মৃতিশক্তি বাড়তে শুরু করবে। সেই সঙ্গে বাড়বে বুদ্ধি, মনোযোগ এবং মনে রাখার ক্ষমতাও। এক্ষেত্রে পটাশিয়াম কাজে আসতে পারে। আর এই খনিজটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে মিষ্টি আলুতে। তাই স্মৃতিশক্তি বাড়াতে মিষ্টি আলু নিয়মিত রাখুন খাদ্য তালিকায়।

৬. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
মিষ্টি আলুতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটিনয়েড এবং ভিটামিন এ ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়, এই উপাদানগুলো দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

৭. ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর হয়
দাঁত এবং হাড়কে শক্ত করার পাশাপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং একাধিক সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে ভিটামিন সি-এর কোনো বিকল্প নেই। এখানেই শেষ নয়, এছাড়া ব্লাড সেলের ফর্মেশানেও ভিটামিন সি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৮. ভিটামিন বি৬-এ চাহিদা মেটায়
এই ভিটামিনটি শরীরে একাধিক ক্ষতিকর ক্যামিকেলের প্রভাব কমিয়ে দেয়। ফলে একাধিক ডিজেনারেটিভ ডিজিজ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে হার্টেরও উন্নতি ঘটায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

৯. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
প্রচুর মাত্রায় ফাইবার থাকার কারণে নিয়মিত এই সবজিটি খেলে পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যে মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে।

১০. বিষণ্নতা কমে
মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। এই খনিজটি আর্টারি এবং হার্টের পেশির কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিষণ্নতা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।