‘দাদা পায়ে পড়ি রে, মেলা থেকে বউ এনে দে’- সে কবে কার কথা। গৌরিপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা গানটিতে সুর দিয়েছিলেন অংশুমান রায়। গানটি গেয়েছিলেন তিনি নিজেই। আমরা তখন স্কুলে পড়ি। ভাবতাম, তাই আবার হয় নাকি? বউমেলার খোঁজ তখন পাইনি। তবে বাস্তবে বউ মেলার অস্তিত্ব কিন্তু সত্যিই রয়েছে। মেলা থেকে বউ এনে লিভ ইন করা যায়। পরে সময়মতো, সুবিধামতো বিয়ে করলেই হলো। ভাবছেন মনে হয়, বিদেশের গল্প শোনাচ্ছি? বিদেশি হলেও খুব বেশি কিন্তু দূরে নয়। একেবারে আমাদের প্রতিবেশিদের গল্প। গল্প বললে ভুল হবে। একেবারে সত্যি কথা।
ভারতের রাজস্থানের জয়পুর জেলার নয়াবাস গ্রামে রয়েছে শতবর্ষ প্রাচীন এই পরম্পরা। তবে গ্রামে এখন হটকেক
-পাবুরা আর রুপালির গল্প। বহুদিন লিভ ইন করার পর শেষপর্যন্ত রুপালিকেই বিয়ে করেছেন পাবুরা। এ নিয়ে এখন আলোচনায় তোলপাড় গোটা জয়পুর ও উদয়পুরে।
গ্রাসিয়া জনজাতির মানুষ বিশ্বাস করেন, জীবনে উপার্জন করতে গেলে সন্তান হওয়া জরুরি। বিয়ের আগে সন্তান প্রসব না হলে, পরেও হবে না। পরিবারে সুখ আসবে না। তাই পছন্দমতো পার্টনারের সঙ্গে আগেই লিভ ইন করে দেখে নেয়া-সবকিছু ঠিক। তা না হলে পরে আফসোস করবে কে?
এবারে সমস্যা হলো পছন্দমতো মেয়ে পাওয়া যাবে কোথায়? তার জন্য নাকি এখন মেলা বসে। ছেলেমেয়েরা নিজেদের মতো পার্টনার খুঁজে নিয়ে পালিয়ে যায়। লুকিয়ে থাকে। পণপ্রথা নেই। কিন্তু একটা অর্থ দেয়া-নেয়ার প্রথা আছে। নিয়ম হচ্ছে-ছেলে বা মেয়েকে আগে যারা খুঁজে বের করবে (মেয়ের বাড়ির লোকজন হোক বা ছেলের বাড়ির) তারা অর্থ দাবি করবে অপরপক্ষের কাছ থেকে। এটাই নাকি ওখানকার রেওয়াজ।
শুধুমাত্র যুবক যুবতিরাই নয়, কম বয়সী থেকে বিধবা মহিলা, সবারই অধিকার আছে পছন্দের সঙ্গীর সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার। সবারই অধিকার আছে লিভ ইন রিলেশনে থাকার। সকলেরই অধিকার আছে নিজের ইচ্ছে মত বিয়ে করার। এই যেমন পাবুরা আর রুপালি। দীর্ঘদিন লিভ ইন করার পর, এই এতদিনে তাদের মনে হয়েছে বিয়ে করার দরকার। তাই এবার বিয়ে করলেন ওঁরা। পাবুরার বর্তমান বযস ৮০। আর রুপালির ৭০। এতটাই প্রগতিশীল এই গ্রাসিয়া জনজাতি। দেখে শুনে মনে হয় না, এঁরা ভারতেরই বাসিন্দা।-ইন্দু ইন্ডিয়া