ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টাকার পাহাড় গড়েছেন তারা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা: সেলিমা রহমান ভারতে থাকার বৈধ মেয়াদ শেষ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে পুলিশের কাজ পুলিশকে দিয়েই করাতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না জাতিসংঘ অধিবেশন নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে ড. ইউনূসের বৈশ্বিক-আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জরুরি: বাইডেন ইলিশের দাম কমছে না কেন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন

সবচেয়ে প্রভাবশালী রোহিঙ্গা পরিবারটি এখন পথের ফকির

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ভাবশালী রোহিঙ্গা পরিবারটি – মিয়ানমারের টম বাজারের খালেদা বেগমের ছিল হার্ডওয়্যার, মুদির দোকানসহ বেশকিছু দোকান, যা অন্তত কোটি টাকা মূল্যের। বাড়িও ছিল ওই এলাকার মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন। মুসলিম অধ্যুষিত ওই বাজারে তারাই ছিলেন সবচেয়ে প্রভাবশালী।

সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের মুখে সব দোকান, বাড়িসহ সহায় সম্পত্তি ফেলে ১৫ দিনে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অনেক কষ্টে নাফ নদ ও কাঁটাতারের সীমারেখা পার হয়ে চলে আসেন বাংলাদেশে।

আসার পরপরই জানতে পেরেছেন, দোকান পাট ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, এখনো কোনো তাঁবু পাননি। মেলেনি কোনো ত্রাণও। আশ্রয় জুটেছে খোলা আকাশের নিচে। ফলে কোটিপতি থেকে মুহূর্তেই হয়ে গেলেন পথের ফকির।

কুতুপালং সড়কের কাছে একটি নালার কিনারে কচু বাগানে বসে থাকতে দেখা যায় তাকে। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন অজানা, অচেনা পথের দিকে। সবকিছুই তার কাছে অপরিচিত। তার কোলজুড়ে ৩ মাসের একটি বাচ্চাকেও কান্না করতে দেখা যায়।

গতকাল দুপুরে যখন খালেদা বেগমের সঙ্গে কথা হয় তখন তিনি ছিলেন ক্ষুধার্ত। কিন্তু চেহারায় ছিল আভিজাত্যের ছাপ। ডান হাতে ছিল একটি গোল্ডেন রঙের ঘড়ি। পরনের পোশাকও ছিল অনেকটা মার্জিত। কিন্তু লজ্জায় ত্রাণের জন্য হাত পাততে পারছিলেন না।

খালেদা খানম বলেন, ‘টম বাজার এলাকায় তারা ছিলেন রাজার হালে। কোনো কিছুর অভাব ছিল না। তাদের প্রায় ১২ একর জমি ছিল। ত্রিশটির মতো গরু ছিল। দোকান পাট ছাড়াও আরও কিছু সম্পদ ছিল। সব মিলিয়ে হবে কোটি টাকার। এখন কার কাছে যাব, কি করব কিছুই দিশা পাচ্ছেন না তিনি। যৌথ পরিবারের সদস্য আলেয়া বেগমের কোলেও দেখা যায় এক ছোট্ট শিশু।’

তিনি জানান, ‘বাংলাদেশে আসার পথে দুই লাখ মিয়ানমারের মুদ্রা কিয়াট নিয়ে আসলেও দালালদের খপ্পরে পড়ে আড়াই হাজার টাকায় তা বিক্রি করে দেন। গত দুই দিন কষ্ট করে এই টাকা দিয়ে পানি আর শুকনো কিছু খাবার কিনে বাচ্চাদের কোনোমতে খাওয়ান। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরাও না খেয়ে পথেই বসে রয়েছেন।’

ওই পরিবারের পুরুষ সদস্য আবদুল হামিদ ও মৌলভি মাইনুদ্দিন জানান, ‘তাদের পরিবারটি অনেক বড়। ৩০ সদস্যের সবাই বাংলাদেশে কষ্ট করে আসতে পারলেও সব সহায় সম্পত্তি ফেলে আসতে হয়েছে। এখন তারা শূন্য হাতে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

টাকার পাহাড় গড়েছেন তারা

সবচেয়ে প্রভাবশালী রোহিঙ্গা পরিবারটি এখন পথের ফকির

আপডেট টাইম : ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ভাবশালী রোহিঙ্গা পরিবারটি – মিয়ানমারের টম বাজারের খালেদা বেগমের ছিল হার্ডওয়্যার, মুদির দোকানসহ বেশকিছু দোকান, যা অন্তত কোটি টাকা মূল্যের। বাড়িও ছিল ওই এলাকার মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন। মুসলিম অধ্যুষিত ওই বাজারে তারাই ছিলেন সবচেয়ে প্রভাবশালী।

সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের মুখে সব দোকান, বাড়িসহ সহায় সম্পত্তি ফেলে ১৫ দিনে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অনেক কষ্টে নাফ নদ ও কাঁটাতারের সীমারেখা পার হয়ে চলে আসেন বাংলাদেশে।

আসার পরপরই জানতে পেরেছেন, দোকান পাট ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, এখনো কোনো তাঁবু পাননি। মেলেনি কোনো ত্রাণও। আশ্রয় জুটেছে খোলা আকাশের নিচে। ফলে কোটিপতি থেকে মুহূর্তেই হয়ে গেলেন পথের ফকির।

কুতুপালং সড়কের কাছে একটি নালার কিনারে কচু বাগানে বসে থাকতে দেখা যায় তাকে। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন অজানা, অচেনা পথের দিকে। সবকিছুই তার কাছে অপরিচিত। তার কোলজুড়ে ৩ মাসের একটি বাচ্চাকেও কান্না করতে দেখা যায়।

গতকাল দুপুরে যখন খালেদা বেগমের সঙ্গে কথা হয় তখন তিনি ছিলেন ক্ষুধার্ত। কিন্তু চেহারায় ছিল আভিজাত্যের ছাপ। ডান হাতে ছিল একটি গোল্ডেন রঙের ঘড়ি। পরনের পোশাকও ছিল অনেকটা মার্জিত। কিন্তু লজ্জায় ত্রাণের জন্য হাত পাততে পারছিলেন না।

খালেদা খানম বলেন, ‘টম বাজার এলাকায় তারা ছিলেন রাজার হালে। কোনো কিছুর অভাব ছিল না। তাদের প্রায় ১২ একর জমি ছিল। ত্রিশটির মতো গরু ছিল। দোকান পাট ছাড়াও আরও কিছু সম্পদ ছিল। সব মিলিয়ে হবে কোটি টাকার। এখন কার কাছে যাব, কি করব কিছুই দিশা পাচ্ছেন না তিনি। যৌথ পরিবারের সদস্য আলেয়া বেগমের কোলেও দেখা যায় এক ছোট্ট শিশু।’

তিনি জানান, ‘বাংলাদেশে আসার পথে দুই লাখ মিয়ানমারের মুদ্রা কিয়াট নিয়ে আসলেও দালালদের খপ্পরে পড়ে আড়াই হাজার টাকায় তা বিক্রি করে দেন। গত দুই দিন কষ্ট করে এই টাকা দিয়ে পানি আর শুকনো কিছু খাবার কিনে বাচ্চাদের কোনোমতে খাওয়ান। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরাও না খেয়ে পথেই বসে রয়েছেন।’

ওই পরিবারের পুরুষ সদস্য আবদুল হামিদ ও মৌলভি মাইনুদ্দিন জানান, ‘তাদের পরিবারটি অনেক বড়। ৩০ সদস্যের সবাই বাংলাদেশে কষ্ট করে আসতে পারলেও সব সহায় সম্পত্তি ফেলে আসতে হয়েছে। এখন তারা শূন্য হাতে।