বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করলো নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার ভেটেরানস ১৯৭১, ইউএসএ ইনক।’ স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে এক সংবাদ সম্মেলন নতুন কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ।
পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে যে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সশস্ত্র বিদ্রোহ গড়ে তুলেছিলেন গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ তাদের অন্যতম একজন ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নতুন কমিটি ঘোষণার পাশাপাশি সভাপতি গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ বছরের যেকোনো একটি দিনকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ ঘোষণা, মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি জাতীয় কমিটির মাধ্যমে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) কর্তৃক তদন্তপূর্বক সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্থান দিয়ে একটি তালিকা তৈরির আহ্বান জানান।
এছাড়া দুর্বৃত্তদের কবল থেকে রাজনীতিকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান একটি প্রগতিশীল আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে প্রবাসের মুক্তিযোদ্ধারাও নিয়োজিত থাকার সংকল্প ব্যক্ত করেন সংবাদ সম্মেলনে। নবগঠিত সংগঠনের ২৫ সদস্যের কমিটির সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বরিশাল অঞ্চলের গেরিলা যোদ্ধা ফারুক হোসাইন।
সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ বলেন, ‘প্রবাস প্রজন্মকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশে একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ মাসে পাক হায়েনাদের চালানো গণহত্যার ভয়ঙ্কর ঘটনাবলি মার্কিন রাজনীতিকসহ আন্তর্জাতিক মহলকে জানানো এবং জাতিসংঘে ওই গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা চালাবে এই সংগঠন।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধফেরতদের সেদেশের সরকার যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশেও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে সমন্বয় ঘটানোর পদক্ষেপ নেবে সংস্থাটি। মুক্তিযোদ্ধারাও যাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কাছে থেকে যোগ্য সম্মান লাভে সক্ষম হয় তা নিয়েও মূলধারায় দেন-দরবার চালাবে নতুন এই সংগঠন।’
গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ বলেন, ‘একাত্তরের ঘাতক এবং বঙ্গবন্ধুর ঘাতক হিসেবে দণ্ডিতরা যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে রয়েছে। এদেরকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের জন্যে ফেডারেল প্রশাসনে চলমান দেন-দরবারে ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার ভেটেরানস ১৯৭১, ইউএসএ ইনক।’
তিনি বলেন, ‘নিউ ইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সিটিতে বসবাসরত রাজাকার-আল বদর এবং তাদের দোসর ছাত্র শিবিরের লোকজন লেবাস পাল্টিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের আড়ালে এখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এদেরকে সামাজিকভাবে চিহ্নিত এবং বর্জনের জন্যে সোচ্চার থাকবে এই সংগঠনের সর্বস্তরের সদস্য-কর্মকর্তারা।’
কমিটির অন্য কর্মকর্তারা হলেন- ভাইস প্রেসিডেন্ট শওকত আকবর রিচি, খুরশীদ আনোয়ার বাবলু, রুহুল আমিন ভূঁইয়া, মেজর (অব.) মঞ্জুর আহমেদ (বীর প্রতীক), মেজর (অব.) এহসান, রেজাউল বারী, বিএম জাকির হোসেন হিরু এবং সরদার আলাউদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, আবুল মনসুর খান, মকবুল হোসেন এবং মনির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বাশার, দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মঞ্জুর আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুস সাদিক, আপ্যায়ন সম্পাদক মো. হাই মঞ্জু, নির্বাহী সদস্য লাবলু আনসার, মোতাহার হোসেন, ইউসুফ চৌধুরী, আবু তাহের ও আবুল বাশার চুন্নু।
সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন-বিজ্ঞানী ড. নূরন নবী, সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ, কৌশিক আহমেদ ও মাহফুজুর রহমান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান, মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুন্সি বশীর আহমেদ, মফিজ আহমেদ, প্রকৌশলী আশরাফুল হক, শহীদ পরিবারের সন্তান ডা. মাসুদুল হাসান ও ফাহিম রেজা নূর, শিল্পপতি জহিরুল ইসলাম, ফার্মাসিস্ট এম এ আওয়াল সিদ্দিকী, নূর-ই আজম বাবু, আলী আহসান কিবরিয়া অনু, মোল্লা মাসুদ, সুলতানউদ্দিন আহমেদ, প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান, খসরুল আলম, অ্যাডভোকেট আবু হোসেন হেলেন, শাহীন শেখ ও ইলিয়ার রহমান।