গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম হামলায় নতুন করে আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আল-মাওয়াসি অঞ্চলে একটি ক্যাফেতে বসে থাকা মানুষের ওপর ড্রোন হামলা হলে বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু হয়। যদিও এই এলাকাকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আগেই নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার রাতে খান ইউনিসের পশ্চিমে ছোট্ট একটি তাঁবুর ক্যাফেতে ইসরায়েলি ড্রোনের দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এই অঞ্চলে সংঘাতের মধ্যেই বেঁচে থাকা সাধারণ মানুষের জন্য এটি ছিল ইন্টারনেট সংযোগ এবং বাইরের জগতের সঙ্গে যুক্ত থাকার বা বড় পর্দায় ফুটবল খেলা দেখার স্থান।
কেন্দ্রীয় গাজা অঞ্চলের দেইর আল-বালাহ থেকে আলজাজিরার হানি মাহমুদ বলেন, এটি ইসরাইলের কথিত ‘নিরাপদ এলাকা’ এবং ‘অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর অঞ্চল’ সম্পর্কে মিথ্যা বর্ণনার আরও একটি প্রমাণ। এই ক্যাফেতে লোকজন শুধু ইন্টারনেট ব্যবহার বা বড় স্ক্রিনে খেলা দেখার জন্য আসেন। ভেতরে মানুষ থাকা অবস্থায় একটি ড্রোন অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
তিনি বলেন, খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা কিছু ভুক্তভোগীর চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। এ ছাড়া হামলায় আহত সাতজনের অস্ত্রোপচার করা হয়।
এর আগে, গাজার কেন্দ্রে অবস্থিত আল আওদা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, সোমবার সিরিজ আক্রমণের ফলে ২০ জন নিহত হয়। ইসরায়েলি ট্যাংক পশ্চিম দিক থেকে নুসেরাত শরণার্থী শিবিরে অগ্রসর হয়ে বাসিন্দাদের ও নিরাপদ স্থানে যাওয়া লোকদের ওপর গুলি চালায়।
উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া শহরের চিকিৎসকরা জানান, ইসরায়েলি বিমান হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। গাজা সিটিতে আরেকটি বিমান হামলায় আরও কয়েকজন নিহত হয়েছেন। একটি ইসরায়েলি ড্রোন বেইত লাহিয়ার নিকটবর্তী কামাল আদওয়ান হাসপাতালেও আক্রমণ চালায়। সেখানে তিনজন মেডিকেল কর্মী আহত হন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছে ৪৩ হাজার ৬০৩ জন। এছাড়া আহতের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।