তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ২০১৮ সালের মধ্যে ২ হাজার ৬শ’ ইউনিয়নকে ফাইবার অপটিক ক্যাবল সংযোগের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, ‘চীন সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চীনের এ সংক্রান্ত একটি ঋণচুক্তি শিগগিরই স্বাক্ষরিত হবে।’
প্রতিমন্ত্রী রবিবার আগারগাঁয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অডিটোরিয়ামে সফররত চীনের এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট সান পিং এর নেতৃত্বাধীন ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি সেবা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রান্তিক জনগণের কাছে ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করতে ইনফো সরকার-৩ প্রকল্প করা গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১৬শ’ পুলিশ অফিসের মধ্যে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। এর ফলে পুলিশের নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী ও নিরাপদ হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ১ হাজার ৯৯৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের মধ্যে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পে ১ হাজার ২২৭ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে অর্থায়ন করছে চীন। তিনি বলেন, ইনফো সরকার-২ প্রকল্পের আওতায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দেশের ১৮ হাজার ৩৩২টি সরকারি অফিসের মধ্যে কানেক্টিভিটি ও ৮শ’ ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল লাইনের মাধ্যমে কানেক্টিভিটির সম্প্রসারণ করা হয়েছে যা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দেশের প্রায় ৫০ লাখ মানুষের সঙ্গে জনসচেতনতামূলক ভার্চুয়াল মিটিং করেছেন।’ তিনি বলেন, চীনের আর্থিক সহযোগিতায় এস্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি শীর্ষক আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় ১ লাখ প্রান্তিক পর্যায়ের দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানে অপটিক্যাল ফাইবারঅথবা বিশেষ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হবে।
এ ছাড়া ১৫ হাজার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন, রেগুলেটরি ল্যাব, সাইবার সিকউিরিটি ল্যাব ও হার্ডওয়্যার শিল্পের বিকাশে বড় আকারের ল্যাব স্থাপন করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আওতায় গাজীপুরের কালিয়াকৈরে টিয়ার ফোর ডেটা সেন্টার নির্মাণের কাজ চলছে। বর্তমানে কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক সংলগ্ন স্থানে সাড়ে ৭ একর ভূমির উন্নয়নের কাজ শেষে ভবন নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে শেষ হতে যাওয়া এই প্রকল্পের ৪০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও ডাটা সুরক্ষিত রাখতে বিশ্বের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৯ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার যার মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে রয়েছে ১৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, স্মার্ট সিটি সলিউশনের মাধ্যমে সরকারি সেবাগুলো অনলাইনে নিয়ে আসা, সাইবার নিরাপত্তা বিধান করার মাধ্যমে জনগণের ডিজিটাল জীবন উপভোগ্য করতে মডার্নাইজেশন অব আরবান এন্ড রুরাল লাইভ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পের পুরোটাই আসবে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে।