বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ইতিহাস অনুযায়ী প্রতি ১০০ বছর পর পর একটি করে মহামারির পুনরাবৃত্তি ঘটে। যা কেড়ে নেয় হাজারো মানুষের প্রাণ। দেখা গেছে ১৭২০ সালে প্লেগ, ১৮২০ সালে কলেরা, ১৯২০ সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারি হয়েছে।
বর্তমানে অর্থাৎ ২০২০ সালে দেখা দিল করোনাভাইরাস। চীনে থেকে সৃষ্টি এই ভাইরাল মহামারি উল্লিখিত মহামারিগুলোর মতো একই ধাঁচ অনুসরণ করেছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে দেখেই মনে হয় ইতিহাস প্রতি ১০০ বছর পরে নিজেকে পুনরাবৃত্তি করছে! চলুন জেনে নেয়া যাক সেই মহামারিগুলো সম্পর্কে-
১৭২০ সালে প্লেগ
১৭২০ সালে বুবোনিক প্লেগ বৃহত আকারের মহামারি ছিল, এটি মার্সেইয়ের দুর্দান্ত প্লেগও বলে। রেকর্ডগুলো দেখায় যে ব্যাক্টেরিয়া মার্সেইলে প্রায় ১ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিলো। ধারণা করা হয় যে এই ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমিত মাছি দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে।
১৮২০ সালে কলেরা
থাইল্যান্ডে কলেরা মহামারি প্রথম ধরা পড়েছিল ১৮২০ সালে। ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনে সহ এশিয়ার দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৮২০ সালে এই জীবাণুটির কারণে এশিয়ায় ১ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছিল। ১৮২০ সালের মহামারি দূষিত নদীর পানি খাওয়ার কারণে শুরু হয়েছিল বলে জানা যায়।
১৯২০ সালে স্প্যানিশ ফ্লু
১০০ বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লু দেখা দিয়েছিল, সেই সময় লোকেরা এইচ ১ এন ১ ফ্লু ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছিল। ক্রমাগত স্প্যানিশ ফ্লু জিনগত ভাবে পরিবর্তন হতো, যার ফলে ভাইরাসটি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক করে তুলেছিল। প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল এবং বিশ্বের ১০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলো, ১৯২০ সালের মহামারিটি ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা ছিল।
২০২০ সালে করোনা
চীনে হওয়া এই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসটি ইতিমধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। দুনিয়াজুড়ে মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটারস ডট ইনফো’র হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত ৩ লাখ ৮ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৯৫ হাজার ৮২৮ জন ও মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৬৯ জনের।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসের কারণে থমকে গেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিশ্বের ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। সবাই এক রকম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। সরকারের নির্দেশে অনেক দেশের মানুষই এখন স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি।
বাংলাদেশে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২২ জন আক্রান্ত ও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন তিনজন। তাই সবাইকে অবশ্যই আরো বেশি সতর্ক হতে হবে।