বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ৯৪ বছরের বৃদ্ধা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার পরনে সাদা গাউন। দেখে মনে হয় তিনি বিয়ের জন্য সেজেছেন। তবে এই বিয়েতে নেই কোনো পাত্রপক্ষ। তাহলে? বার্মিংহাম নিবাসী মার্থা মায় ওফেলিয়া মুন টাকারের স্বপ্ন ছিল তিনি বিয়ের গাউন পরে ছবি তুলবেন।
বয়স পরিণত হতে বিয়ে হলো ঠিকই। তবে সাদা গাউন পরা হলো না তার। অবশেষে ৯৪ বছর বয়সে এসে স্বপ্ন পূরণ হল মার্থার। আর তার এই ছবি এরই মধ্যে ভাইরাল হয়ে উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে। ১৯৫২ সালে বিবাহ হয় মার্থার। বিয়ের সময় তার বয়স মাত্র ২৩ বছর। এই বিয়ের জন্য ছোটো থেকেই স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। তাই সবকিছু ঠিকঠাক হতেই ছুটলেন ওয়েডিং গার্মেন্টসের দোকানে।
বার্মিংহাম নিবাসী মার্থা মায় ওফেলিয়া মুন টাকার
বার্মিংহাম নিবাসী মার্থা মায় ওফেলিয়া মুন টাকার
তবে তাকে দেখেই দোকান বন্ধ করে দিলেন মালিক। কারণ মার্থার গায়ের রং কালো। হ্যাঁ, এটুকুই ‘অপরাধ’ তার। আর সেই সময় ইংল্যান্ডে কোনো কালো চামড়ার নারী বিবাহে গাউন পরতে পারতেন না। ফলে ছেলেবেলার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। আরো প্রায় ৭০ বছর পাড় হয়ে গেল। তারপর মার্থার এক নাতনির দৌলতে স্বপ্নপূরণ হয়।
সারা পৃথিবীজুড়ে এই ৭০ বছরে অনেক পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সারা পৃথিবীজুড়ে চলেছে সচেতনতার প্রচার। গত বছরই ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ডের বুকেও। মার্থাকে দেখলে এখন আর ওয়েডিং গার্মেন্টসের দোকানদাররা দরজা বন্ধ করে দেবেন না। তবে নতুন করে বিবাহ করার কোনো ইচ্ছা আর নেই তার।
নাতনির উদ্যোগে নতুন পোশাকে সেজে সত্যিই খুশি হয়েছেন তিনি
নাতনির উদ্যোগে নতুন পোশাকে সেজে সত্যিই খুশি হয়েছেন তিনি
তবে নাতনির উদ্যোগে নতুন পোশাকে সেজে সত্যিই খুশি হয়েছেন তিনি। হাসতে হাসতে বলেন, তিনি বিয়ে করতে চলেছেন। অথচ তার বিয়ের কোনো পাত্র নেই। মার্থার মুখের নির্মল হাসি অনেকেরই মন ছুঁয়ে গিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকেই।
এর মধ্যেই উঠে আসছে বর্ণবিদ্বেষের দীর্ঘ ইতিহাসের কথাও। তবে সেই ইতিহাসকে পিছনে ফেলে আমরা কিছুটা এগোতে পেরেছি। এই এগিয়ে যাওয়ার ফলে হাসি ফুটেছে মার্থার মুখে। তবে এখনও অনেকটাই পথ হাঁটা বাকি।