ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ঝুলে আছে পেট্রোবাংলার আড়াই হাজার মামলা রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা নিয়ে সেমিনার করবে বিএনপি যে কারণে চাকরি ছাড়লেন শহিদ আবু সাঈদের ২ ভাই আইন উপদেষ্টাকে হেনস্তা জেনেভা মিশনের শ্রম কাউন্সেলরকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ ট্রাম্পের নতুন ‘সীমান্ত জার’ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কতটা কঠোর হবেন জাবিতে পাখি সুরক্ষায় ছাত্রদলের ভিন্নধর্মী উদ্যোগ যে পাখি উড়ন্ত অবস্থায় ডিম পাড়ে, মাটিতে পড়ার আগে বাচ্চা ফুটে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্র-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হচ্ছেন যারা প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের খাবার কর্মসূচি চালু করা হবে : উপদেষ্টা উপদেষ্টা ফারুকী-বশিরকে নিয়ে বিতর্ক, যা বললেন মাহফুজ আলম

রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের ঢল

টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকমুখর হয়ে উঠেছে পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটি। শহরের যান্ত্রিক কোলাহল ভুলে প্রকৃতির কোলে নিজেদের সঁপে দিতে হ্রদ-পাহাড়ের শহর রাঙ্গামাটিতে ছুটে এসেছেন হাজারো পর্যটক। বুকিং হয়ে গেছে শহরের বেশির ভাগ হোটেল-মোটেল।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে প্রচুর পর্যটকবাহী গাড়ি শহরে প্রবেশ করেছে। শহরের বাসস্ট্যান্ড রিজার্ভ বাজারে দেখা যায় পর্যটকবাহী গাড়ির দীর্ঘ সারি। অনেকে দলগতভাবে বাস নিয়ে আবার অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেড়াতে এসেছেন।

শহরে নেমেই নাস্তা করার জন্য লাইন দিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় পর্যটকদের। রিজার্ভ বাজার খাজা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মো. রুবেল বলেন, আজ থেকে টানা ছুটি শুরু হওয়ায় সকাল থেকেই প্রচুর পর্যটক রাঙ্গামাটি প্রবেশ করেছে। আর গাড়ির শেষ গন্তব্য রিজার্ভ বাজার হওয়াতে সবাই গাড়ি থেকে নেমে আমাদের এবং আশপাশের রেস্টুরেন্টগুলোতে নাস্তার জন্য ভিড় করছেন।

পর্যটকদের উপস্থিতির কারণে বুকিং হয়ে গেছে শহরের প্রায় অধিকাংশ হোটেল-মোটেল। যারা আগে বুকিং দিয়ে আসেননি, তারা শহরে এসেই হোটেল বুকিং দিচ্ছেন। তাই গতকাল পর্যন্ত যেসব হোটেল-মোটেলে কিছু রুম খালি ছিল সেগুলোও দ্রুত বুকিং হয়ে যাচ্ছে।

Dhaka post

হোটেল মতি মহলের স্বত্বাধিকারী মো. শফিউল নেজাম বলেন, সকাল থেকে ভালো পর্যটক আসছে দেখতে পাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের ৭০ শতাংশ রুম বুকিং আছে। আশা করছি আজ দুপুরের মধ্যে হোটেলের শতভাগ বুকিং হয়ে যাবে। আর যেহেতু শীতের মৌসুম, তাই আমরা আশা করছি আমাদের এবারের ব্যবসাটা ভালোই হবে।

হোটেল নাদিশা ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার মো. শাহীন সুলতান বলেন, সাপ্তাহিক এবং বড় দিনের ছুটি মিলিয়ে টানা তিন দিনের ছুটিতে রাঙ্গামাটিতে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। যথেষ্ট পর্যটক এসেছে রাঙ্গামাটিতে। আজ থেকে আমাদের হোটেল শতভাগ বুকিং রয়েছে। যদি রাঙ্গামাটির হোটেলগুলোর ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পর্যটক আসে, তাহলে রুম না পেয়ে অনেককে ঘুরে চলে যেতে হতে পারে।

রাঙ্গামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৃজন কান্তি বড়ুয়া বলেন,সাপ্তাহিক এবং বড় দিনের ছুটি মিলিয়ে আমরা বেশ কদিন ছুটি পেয়েছি। রাঙ্গামাটিতে পর্যটক সমাগম বেশ ভালোই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের প্রায় ৯০ শতাংশ আবাসিক কক্ষ বুকিং রয়েছে।

পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কাপ্তাই হ্রদে নৌ-ভ্রমণ। তাই বেশির ভাগ পর্যটকই সকাল থেকে ট্যুরিস্ট বোট ভাড়া করে বেরিয়ে পড়ছেন কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণে।

রাঙ্গামাটি পর্যটন ঘাটের ইজারাদার এবং ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, গরমের বিদায় ও শীতের আগমন এবং টানা ছুটি মিলে রাঙ্গামাটিতে এখন পর্যটক সমাগম খুবই ভালো। আমাদের সমিতি থেকে পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আগামী দুই দিন বন্ধ থাকাতে আশা করছি পর্যটকদের এই স্রোত চলমান থাকবে।

ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সিনিয়র সদস্য এবং ট্যুরিস্ট গাইড মো. নাসির বলেন, রাঙ্গামাটি পর্যটন নগরী হওয়ায় টানা তিন দিনের ছুটিতে যথেষ্ট পর্যটক আসছে। ট্যুরিস্টরা যাতে নির্বিঘ্নে কাপ্তাই লেকে ঘুরতে পারে, সেই লক্ষ্যে আমরা বোট মালিক সমিতি থেকে পদক্ষেপ নিয়েছি।

কুমিল্লা থেকে এসেছেন পর্যটক সাইমন বিন হাসান। তিনি বলেন, পরিবার নিয়ে রাঙ্গামাটি বেড়াতে এসেছি। বোট নিয়ে কাপ্তাই লেকে ঘুরে বিকেলে ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক দেখতে যাব।

চট্টগ্রামের রাউজান থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নাহিদুল ইসলাম বলেন, রাঙ্গামাটি বেড়াতে এসে খুবই ভালো লাগছে। হ্রদ পাহাড়ের এই মিশেল আর কোথাও দেখা যায় না। রাঙ্গামাটিতে আসলে প্রকৃতিকে দারুণভাবে উপভোগ করা যায়।

আরেক পর্যটক মো. কামাল বলেন, আমরা ঢাকা থেকে বন্ধুরা মিলে বাইক রাইড করে এসেছি। রাঙ্গামাটির পরিবেশ আসলেই অতুলনীয়। দূর থেকে লেক দেখতে খুব ভালো লাগে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ঝুলে আছে পেট্রোবাংলার আড়াই হাজার মামলা

রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের ঢল

আপডেট টাইম : ০৫:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২

টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকমুখর হয়ে উঠেছে পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটি। শহরের যান্ত্রিক কোলাহল ভুলে প্রকৃতির কোলে নিজেদের সঁপে দিতে হ্রদ-পাহাড়ের শহর রাঙ্গামাটিতে ছুটে এসেছেন হাজারো পর্যটক। বুকিং হয়ে গেছে শহরের বেশির ভাগ হোটেল-মোটেল।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে প্রচুর পর্যটকবাহী গাড়ি শহরে প্রবেশ করেছে। শহরের বাসস্ট্যান্ড রিজার্ভ বাজারে দেখা যায় পর্যটকবাহী গাড়ির দীর্ঘ সারি। অনেকে দলগতভাবে বাস নিয়ে আবার অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেড়াতে এসেছেন।

শহরে নেমেই নাস্তা করার জন্য লাইন দিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় পর্যটকদের। রিজার্ভ বাজার খাজা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মো. রুবেল বলেন, আজ থেকে টানা ছুটি শুরু হওয়ায় সকাল থেকেই প্রচুর পর্যটক রাঙ্গামাটি প্রবেশ করেছে। আর গাড়ির শেষ গন্তব্য রিজার্ভ বাজার হওয়াতে সবাই গাড়ি থেকে নেমে আমাদের এবং আশপাশের রেস্টুরেন্টগুলোতে নাস্তার জন্য ভিড় করছেন।

পর্যটকদের উপস্থিতির কারণে বুকিং হয়ে গেছে শহরের প্রায় অধিকাংশ হোটেল-মোটেল। যারা আগে বুকিং দিয়ে আসেননি, তারা শহরে এসেই হোটেল বুকিং দিচ্ছেন। তাই গতকাল পর্যন্ত যেসব হোটেল-মোটেলে কিছু রুম খালি ছিল সেগুলোও দ্রুত বুকিং হয়ে যাচ্ছে।

Dhaka post

হোটেল মতি মহলের স্বত্বাধিকারী মো. শফিউল নেজাম বলেন, সকাল থেকে ভালো পর্যটক আসছে দেখতে পাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের ৭০ শতাংশ রুম বুকিং আছে। আশা করছি আজ দুপুরের মধ্যে হোটেলের শতভাগ বুকিং হয়ে যাবে। আর যেহেতু শীতের মৌসুম, তাই আমরা আশা করছি আমাদের এবারের ব্যবসাটা ভালোই হবে।

হোটেল নাদিশা ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার মো. শাহীন সুলতান বলেন, সাপ্তাহিক এবং বড় দিনের ছুটি মিলিয়ে টানা তিন দিনের ছুটিতে রাঙ্গামাটিতে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। যথেষ্ট পর্যটক এসেছে রাঙ্গামাটিতে। আজ থেকে আমাদের হোটেল শতভাগ বুকিং রয়েছে। যদি রাঙ্গামাটির হোটেলগুলোর ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পর্যটক আসে, তাহলে রুম না পেয়ে অনেককে ঘুরে চলে যেতে হতে পারে।

রাঙ্গামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৃজন কান্তি বড়ুয়া বলেন,সাপ্তাহিক এবং বড় দিনের ছুটি মিলিয়ে আমরা বেশ কদিন ছুটি পেয়েছি। রাঙ্গামাটিতে পর্যটক সমাগম বেশ ভালোই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের প্রায় ৯০ শতাংশ আবাসিক কক্ষ বুকিং রয়েছে।

পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কাপ্তাই হ্রদে নৌ-ভ্রমণ। তাই বেশির ভাগ পর্যটকই সকাল থেকে ট্যুরিস্ট বোট ভাড়া করে বেরিয়ে পড়ছেন কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণে।

রাঙ্গামাটি পর্যটন ঘাটের ইজারাদার এবং ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, গরমের বিদায় ও শীতের আগমন এবং টানা ছুটি মিলে রাঙ্গামাটিতে এখন পর্যটক সমাগম খুবই ভালো। আমাদের সমিতি থেকে পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আগামী দুই দিন বন্ধ থাকাতে আশা করছি পর্যটকদের এই স্রোত চলমান থাকবে।

ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সিনিয়র সদস্য এবং ট্যুরিস্ট গাইড মো. নাসির বলেন, রাঙ্গামাটি পর্যটন নগরী হওয়ায় টানা তিন দিনের ছুটিতে যথেষ্ট পর্যটক আসছে। ট্যুরিস্টরা যাতে নির্বিঘ্নে কাপ্তাই লেকে ঘুরতে পারে, সেই লক্ষ্যে আমরা বোট মালিক সমিতি থেকে পদক্ষেপ নিয়েছি।

কুমিল্লা থেকে এসেছেন পর্যটক সাইমন বিন হাসান। তিনি বলেন, পরিবার নিয়ে রাঙ্গামাটি বেড়াতে এসেছি। বোট নিয়ে কাপ্তাই লেকে ঘুরে বিকেলে ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক দেখতে যাব।

চট্টগ্রামের রাউজান থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নাহিদুল ইসলাম বলেন, রাঙ্গামাটি বেড়াতে এসে খুবই ভালো লাগছে। হ্রদ পাহাড়ের এই মিশেল আর কোথাও দেখা যায় না। রাঙ্গামাটিতে আসলে প্রকৃতিকে দারুণভাবে উপভোগ করা যায়।

আরেক পর্যটক মো. কামাল বলেন, আমরা ঢাকা থেকে বন্ধুরা মিলে বাইক রাইড করে এসেছি। রাঙ্গামাটির পরিবেশ আসলেই অতুলনীয়। দূর থেকে লেক দেখতে খুব ভালো লাগে।