ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টাকার পাহাড় গড়েছেন তারা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা: সেলিমা রহমান ভারতে থাকার বৈধ মেয়াদ শেষ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে পুলিশের কাজ পুলিশকে দিয়েই করাতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না জাতিসংঘ অধিবেশন নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে ড. ইউনূসের বৈশ্বিক-আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জরুরি: বাইডেন ইলিশের দাম কমছে না কেন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন

রঙ-রূপে অনন্য বসন্ত বাউরি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বসন্ত বাউরি। কেউ কেউ মনে করেন, বসন্তকালে বেশি দেখা যায় বলেই পাখিটির এমন নাম। রানীর মতো মাথায় টকটকে সিঁদুরে লাল মুকুটে ঋতুরাজ বসন্তে বেশি নজরে পড়ে। এ জন্য বসন্ত বাউরি নামটি তারই মানায়। রঙ-রূপে অনন্য সুন্দর এই পাখিটির ইংরেজি নাম-ঞযত্ড়ধঃবফ ইধত্নবঃ। মেগালাইমিদি গোত্রের এই পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম-গবমধষধরসধ ঐধবসধপবঢ়যধষধ। ঘন পাতার বড় গাছে বেশি বিচরণ এদের। ঘন পাতার আড়ালে থাকতে ভালোবাসলেও খাবারের অভাবে কখনও কখনও বাড়ির সফেদা, আতা, জামরুল, পেঁপে, জলপাই কিংবা গ্রামীণ মেঠোপথের পাশের খেজুর গাছে রসের হাঁড়িতেও দেখা মেলে বৃক্ষচারি এই পাখিটির। ২২-২৪ সেন্টিমিটার লম্বা এ পাখিটির কপাল ও বুক টকটকে লাল। এর মধ্যে আছে কালো ছোপ। চোখের দু’পাশে ও গলায় আসমানি সবুজে ঘেরা। শরীর ঘাসরঙা সবুজ। মুখাবয়ব কালচে। চোখ কালচে-ধাতব। শক্ত-মজবুদ ঠোঁট হলুদ-কালচে। ঠোঁটের গোড়ায় বিড়ালের গোঁফের মতো কয়েকটি শক্ত লোম আছে। লীলাভ-সবুজ প্রান্তের খাটো লেজ। পা হলদে-বাদামি। কিছুটা ছোট হলেও হঠাত্ টিয়ে পাখির মতো মনে হতে পারে। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির মধ্যে রঙ-রূপের পার্থক্য আছে। পুরুষ পাখিটি একটু বড়সড়। কপাল ও মাথায় টকটকে লাল রঙ নেই। মাথা, ঘাড়, গলা বাদামি ধূসর রঙের। পাখার নিচের পালক ধূসর-কালো। বনভূমি, বুনো ফল-ফলাদি কমে যাওয়ায় বাসস্থান, প্রজননে বাসা তৈরি, খাদ্য সঙ্কটে কমছে এই দৃষ্টিনন্দন বসন্ত বাউরি পাখির সংখ্যা। বট-পাকুড়ের মতো বুনো ফল-ফলাদি প্রধান খাদ্য। পেঁপে, পেয়ারা, জাম, আতা, সফেদা, খেজুরের রসেও আসক্তি এদের। খাবারের অভাবে পোকামাকড়ও খায়। কুট-উ-রুক স্বরে ডাকে। অনেক দূর থেকেও ডাক শোনা যায়। এদের গতি স্বাভাবিক। এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। অনেক সময় ছোট দল বেঁধেও থাকে। খুলনা বিভাগীয় মত্স্য বিশেষজ্ঞ ও বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সুন্দর দৃষ্টিনন্দন অবয়বের নরম ফলাহারী পাখি বসন্ত বাউরি। বসন্তে বেশি নজরে এলেও বছরের অন্য সময়েও এদেরকে কম-বেশি দেখা যায়। ভারতের হিমালয়ে এদের বেশি সংখ্যায় দেখা যায়। আমাদের দেশে পাঁচ-ছয় প্রজাতির বসন্ত বাউরি দেখা যায়। নিজেরা গর্ত করে না, তবে অন্যের ব্যবহূত খোড়ল কিংবা প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা গাছের কোঠরে বা ফোকরে ফেব্রুয়ারি-এপ্রিলে এরা বাসা বানায় এবং ৩-৪টি ডিম দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ১৫-১৬ দিন সময় নেয়। ২০-২২ দিনে বাচ্চারা ডানা মেলে আকাশে ওড়ে। বৈশ্বিক আবহাওয়ার পরিবর্তন, মানুষের রূঢ় আচরণে পরিবেশ-প্রকৃতির বিপর্যয় ও বনভূমি উজাড় হয়ে খাবারের সঙ্কটে কমে যাচ্ছে বসন্ত বাউরির মতো অপরূপা সুন্দর পাখিগুলো।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

টাকার পাহাড় গড়েছেন তারা

রঙ-রূপে অনন্য বসন্ত বাউরি

আপডেট টাইম : ০৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বসন্ত বাউরি। কেউ কেউ মনে করেন, বসন্তকালে বেশি দেখা যায় বলেই পাখিটির এমন নাম। রানীর মতো মাথায় টকটকে সিঁদুরে লাল মুকুটে ঋতুরাজ বসন্তে বেশি নজরে পড়ে। এ জন্য বসন্ত বাউরি নামটি তারই মানায়। রঙ-রূপে অনন্য সুন্দর এই পাখিটির ইংরেজি নাম-ঞযত্ড়ধঃবফ ইধত্নবঃ। মেগালাইমিদি গোত্রের এই পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম-গবমধষধরসধ ঐধবসধপবঢ়যধষধ। ঘন পাতার বড় গাছে বেশি বিচরণ এদের। ঘন পাতার আড়ালে থাকতে ভালোবাসলেও খাবারের অভাবে কখনও কখনও বাড়ির সফেদা, আতা, জামরুল, পেঁপে, জলপাই কিংবা গ্রামীণ মেঠোপথের পাশের খেজুর গাছে রসের হাঁড়িতেও দেখা মেলে বৃক্ষচারি এই পাখিটির। ২২-২৪ সেন্টিমিটার লম্বা এ পাখিটির কপাল ও বুক টকটকে লাল। এর মধ্যে আছে কালো ছোপ। চোখের দু’পাশে ও গলায় আসমানি সবুজে ঘেরা। শরীর ঘাসরঙা সবুজ। মুখাবয়ব কালচে। চোখ কালচে-ধাতব। শক্ত-মজবুদ ঠোঁট হলুদ-কালচে। ঠোঁটের গোড়ায় বিড়ালের গোঁফের মতো কয়েকটি শক্ত লোম আছে। লীলাভ-সবুজ প্রান্তের খাটো লেজ। পা হলদে-বাদামি। কিছুটা ছোট হলেও হঠাত্ টিয়ে পাখির মতো মনে হতে পারে। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির মধ্যে রঙ-রূপের পার্থক্য আছে। পুরুষ পাখিটি একটু বড়সড়। কপাল ও মাথায় টকটকে লাল রঙ নেই। মাথা, ঘাড়, গলা বাদামি ধূসর রঙের। পাখার নিচের পালক ধূসর-কালো। বনভূমি, বুনো ফল-ফলাদি কমে যাওয়ায় বাসস্থান, প্রজননে বাসা তৈরি, খাদ্য সঙ্কটে কমছে এই দৃষ্টিনন্দন বসন্ত বাউরি পাখির সংখ্যা। বট-পাকুড়ের মতো বুনো ফল-ফলাদি প্রধান খাদ্য। পেঁপে, পেয়ারা, জাম, আতা, সফেদা, খেজুরের রসেও আসক্তি এদের। খাবারের অভাবে পোকামাকড়ও খায়। কুট-উ-রুক স্বরে ডাকে। অনেক দূর থেকেও ডাক শোনা যায়। এদের গতি স্বাভাবিক। এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। অনেক সময় ছোট দল বেঁধেও থাকে। খুলনা বিভাগীয় মত্স্য বিশেষজ্ঞ ও বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সুন্দর দৃষ্টিনন্দন অবয়বের নরম ফলাহারী পাখি বসন্ত বাউরি। বসন্তে বেশি নজরে এলেও বছরের অন্য সময়েও এদেরকে কম-বেশি দেখা যায়। ভারতের হিমালয়ে এদের বেশি সংখ্যায় দেখা যায়। আমাদের দেশে পাঁচ-ছয় প্রজাতির বসন্ত বাউরি দেখা যায়। নিজেরা গর্ত করে না, তবে অন্যের ব্যবহূত খোড়ল কিংবা প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা গাছের কোঠরে বা ফোকরে ফেব্রুয়ারি-এপ্রিলে এরা বাসা বানায় এবং ৩-৪টি ডিম দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ১৫-১৬ দিন সময় নেয়। ২০-২২ দিনে বাচ্চারা ডানা মেলে আকাশে ওড়ে। বৈশ্বিক আবহাওয়ার পরিবর্তন, মানুষের রূঢ় আচরণে পরিবেশ-প্রকৃতির বিপর্যয় ও বনভূমি উজাড় হয়ে খাবারের সঙ্কটে কমে যাচ্ছে বসন্ত বাউরির মতো অপরূপা সুন্দর পাখিগুলো।