বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দেশের বস্ত্রের রয়েছে প্রাচীন ও গৌরবময় ইতিহাস। ইউরোপীয় বস্ত্রের তুলনায় উন্নত বলে সুপ্রাচীন কাল থেকেই দেশের বস্ত্র রপ্তানি হত সেসব দেশে। ব্রিটিশ ও পশ্চিম পাকিস্তানিদের নানামুখী ষড়যন্ত্রের মুখেও টিকে থেকেছে এই বস্ত্রশিল্প। স্বাধীনতার পর ৮০’র দশকে বিশেষ সুবিধাসহ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিলে রাতারাতি আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ শিল্পে রূপ নেয় বস্ত্র খাত।
দেশের বস্ত্রশিল্প খাত কতটা প্রাচীন তার দিনক্ষণ সুনির্দিষ্ট করে জানা না গেলেও বিশেজ্ঞদের মতে, প্রাচীনকাল থেকেই উন্নত মানের বস্ত্র তৈরি হতো এই ভূ-খণ্ডে। ঢাকাই মসলীন আর জামদানীর বুনন এতটাই উন্নত ছিল যে, ইউরোপের বাজারে প্রাচীনকালেই তা রপ্তানি হত।
শুধু মসলীন আর জামদানিই নয়, খদ্দর, হোশিয়ারি, রেশমের মত নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের বস্ত্র বুননের ইতিহাস আছে। যা ধ্বংসে ব্রিটিশরা নানান মূখী ষড়যন্ত্র চালায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯২৯ থেকে ৪৭ সাল পর্যন্ত ১১টি আর ৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত ৭০টির মত বস্ত্র কারখানা গড়ে উঠে বাংলাদেশে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে এই কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪শ’ ৬১টিতে।
স্বাধীনের পর অন্য সব শিল্পের মত বস্ত্রশিল্পকে রাষ্ট্রয়াত্বকরণ করা হয়। সরকারী ব্যবস্থাপনায় চলে যায় বস্ত্র শিল্প। ৮০’র দশকে বাংলাদেশ মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে প্রবেশ করলে বেশ কিছু সুবিধা দিয়ে বেসরকারী খাতে ছেড়ে দেয়া হয় এই শিল্পখাত। উদ্যোক্তারা বলছেন, পরবর্তী সব সরকার এই সুবিধা বহাল রাখলে বর্তমান সর্বাধুনীক রুপ পায় বস্ত্রখাত।
দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার যোগানে মেটানোর পাশাপাশি পাশাপাশি রপ্তানিও হচ্ছে বাংলাদেশের বস্ত্র। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ১৯৭৩-৭৪ অর্থ বছরে বাংলাদেশের প্রাথমিক বস্ত্র শিল্প খাত থেকে রপ্তানী ছিল প্রায় ১ কোটি টাকা; আর তার ৪৩ বছর পর এই রপ্তানী বেড়ে দাঁড়ায় সাত হাজার কোটি টাকায়। বস্ত্র শিল্পের স্বর্ণযুগ শুরু হয় ৯০’র দশকে তৈরী পোশাক শিল্পের হাত ধরে। তৈরী পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারাই বিনিয়োগ করে প্রাথমিক বস্ত্র শিল্প খাতে।