বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিরল দর্শন পরিযায়ী পাখি। উনিশ শতকের মাঝামাঝিতেও দেশে কম-বেশি নজরে পড়ত। বিশেষ করে সুন্দরবনের আশপাশ অঞ্চলের জলাভূমিতে বিচরণ ছিল। জোড়ায় জোড়ায় কিংবা একাকী দেখা যেত। এ ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায়ও দেখা যেত ওই সময়। তবে এরা কখনো ভালো অবস্থানে ছিল না। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সমগ্র বিশ্বেই এরা বিপদগ্রস্ত। বিশ্বে এ ধরনের ২৬ প্রজাতির পাখি রয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশে প্রায় আট প্রজাতির বিচরণ ছিল এক সময়।
বর্তমানে দুই প্রজাতির (এশিয়ান শামুকখোল ও ছোট মদনটাক) ব্যতিরেকে অন্যসব নজরেই পড়ে না। এরা নিরীহ শান্ত স্বভাবের পাখি। মূলত শিকারিদের দৌরাত্ম্যেই দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে প্রজাতিটি। এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোচীন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউগিনি পর্যন্ত।
পাখির বাংলা নাম: ‘কালা গলা মানিকজোড়’, ইংরেজি নাম: ‘ব্ল্যাক নেকেড স্টর্ক’ (Black-necked Stork), বৈজ্ঞানিক নাম: Ephippiorhychus asiaticus। এরা ‘লোহারজঙ্গ’ নামেও পরিচিত।
গড় দৈর্ঘ্য ১২৯-১৫০ সেন্টিমিটার। প্রাপ্তবয়স্কদের মাথা, গলা, ঘাড়, ডানা ও লেজ নীলচে কালোর ওপর বাদামির মিশ্রণ। কাঁধ থেকে পিঠের মাঝ বরাবর এবং দেহতল ধবধবে সাদা। ঠোঁট কালো, নিচের অংশ উপরের দিকে বাঁকানো। লম্বা পা প্রবাল লাল। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম হলেও পুরুষের চোখের তারা বাদামি, স্ত্রী পাখির ক্ষেত্রে চোখের তারা হলুদ।
প্রধান খাবার: মাছ, ব্যাঙ, ইঁদুর, মৃত পাখি ও বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ। বাইম মাছের প্রতি এদের আসক্তি লক্ষ্য করা যায়।
প্রজনন মৌসুম সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর। উঁচু গাছে চিকন ডালপালা ও লতাপাতা দিয়ে অগোছাল বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ফুটতে সময় লাগে ২৭-২৯ দিন।
লেখক: আলম শাইন,