‘প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছেই প্রাণপ্রিয় তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেন তার দ্বিতীয় আবাস। আর সেই আবাস যদি পরিপূর্ণ থাকে ফুলে ফলে প্রকৃতির পরম ছোয়ায়, তাহলে তা বাড়তি মাত্রা এনে দেয় তাদের মনে। প্রকৃতির এমন মন মাতানো রুপে সেজেছে ইসালামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। রক্তিম কৃষ্ণচূড়ায় লাল হয়েছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়। পিচঢালা পথে লাল কৃষ্ণচূড়ার ঝড়ে পড়া পাপঁড়ি দেখে মনে হয় যেন এক পুষ্পশয্যা। ক্যাম্পাসের এ অপরুপ রুপ দেখলে মন ভরে ওঠে আনন্দে।’
কথাগুলো বলছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সুচনা। তার মতই মন্তব্য করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্ত্বরে আড্ডাবাজ সাদেকুল, নাজিফা, মৌ, তৃপ্তি।
তারা বললেন, কৃষ্ণচূড়া আমাদের ক্যাম্পাসকে সাজিয়েছে নতুন রুপে। এই ফুল নিয়ে তাই আমাদের আহ্লাদটাও যেন বেশি। সুযোগ পেলেই আড্ডা দিতে এখানে ছুটে আসি। বন্ধুরা মিলে সবুজের ছায়ায় চলে মজা মাস্তি আর আড্ডা। এ আনন্দ যেন ফুরাবার নয়।’
দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়ছে প্রকৃতি। এর মধ্যে যেন আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে নানা রঙের ফুল। তার মধ্যে অনন্য কৃষ্ণচূড়া। ঘন সবুজের মাঝে টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া, হলদে রঙ্গের সোনালু ফুল আর সবুজ ঘাসের ওপর সফেদ কাশফুলে ছেয়ে গেছে ক্যাম্পাসের প্রকৃতি। লাল কৃষ্ণচূড়া ও সোনালু ফুল সৌন্দর্য বিলিয়ে পুরো প্রকৃতিকে ধন্য করেছে। এ যেন খোপায় লাল বেনী পরা সবুজ শাড়ীতে হলদে রঙ্গ মেশানো অপ্সরী কোন এক বধূ।
মোহনীয় ফুলের সুবাস, হারেক ফলের বৃক্ষরাজি এবং পাখির কলকাকলিতে মুখরিত এ বিশ্ববিদ্যালয়।
ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে গেলেই দেখা মিলবে ডালপালা ছড়ানো বিশাল এক কৃষ্ণচূড়া। গাছটির শাখায় শাখায় শোভা পাচ্ছে রক্তিম কৃষ্ণচূড়া। দেখে মনে হবে লাল-সবুজের অভ্যর্থনা দিতে দাড়িয়ে আছে গাছটি। শুধু প্রধান ফটকই নয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে গোলাপ, গাদা, জারুল, সূর্যমুখী, হাসনাহেনা, বকুল, ডালিয়া, বেলীসহ হৃদয়কাড়া হাজারো বাহারি ফুলের সমাহার।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন, ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবন, চিকিৎসা কেন্দ্র, উপাচার্যের বাসভবন, খালেদা জিয়া হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, লালন শাহ হল, টিএসসিসিসহ গোটা ক্যাম্পাসকে রক্তিম রঙ্গে রাঙ্গিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণচূড়া।
এছাড়াও ডায়না চত্ত্বরে সবুজ গাছে হলদে রঙ্গের সেনালু ফুল ক্যাম্পাসের শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। সোনালু ফুলের পাপঁড়ি ছড়ানো নরম সবুজ ঘাসের উপর ক্লাসের ফাকে শিক্ষার্থীরা গল্প ও আড্ডায় মেতে ওঠে। কেউবা বসে থাকেন বাসের অপেক্ষায়। শুধু কৃষ্ণচূড়া আর সোনালু ফুলেই শেষ নয়, সাথে রয়েছে সবুজ ঘাসে সফেদ রঙ্গের ঘাসফুল। ক্রিকেট মাঠের পশ্চিম দিকে এসব ঘাসে উপর মধুর গোধূলী পার করে শিক্ষার্থীরা।