বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জল ও বনের বাসিন্দা বালিহাঁসের ঝাঁক ঠাকুরগাঁওয়ের একটি বাড়িতে মমতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। ভোর হলেই আহারের খোঁজে উড়ে যায় খাল-বিল ও নদী-নালায়। আর সন্ধ্যায় ফিরে আসে ওই বাড়িতে । মানুষ ও পাখির ভালবাসার এমন বিরল দৃষ্টান্ত এবাদুল হকের বাড়িতে। এ যেন মানুষ আর প্রকৃতির মধ্যে এক আত্মীয়তার বন্ধন।
জানা গেছে দুই বছর আগে আকস্মিক কালবৈশাখীর ঝড়ে নীড়হারা এই বালিহাসের ঝাঁক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কহরপাড়া গ্রামের এবাদুল হকের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। সেই থেকে ১৪টি বাচ্চা নিয়ে মা-বাবা পাখি তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
পাখি প্রেমিক এবাদুলও তার বাড়ির গোয়াল ঘরের একটি কোনে থাকতে দেয়। সকাল হলেই পাখির কল-কাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে এবাদুলের বাড়ি। কিন্তু এলাকার পাখি শিকারীদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে পাখিগুলোর উপর। শিকারীদের অত্যাচারে মা ও বাবা বালিহাঁস দুটি চলে গেলে অসহায় হয়ে পড়ে ১৪টি বাচ্চা। পাখিপ্রেমিক এবাদুল হক সন্তানের মত আদর যতনে বাচ্চা গুলোকে বড় করে। বছর গড়িয়ে বাচ্চা গুলো খোলা আকাশে উড়তে শেখে।
পরিচিত হয়ে যায় এলাকার সকলের। বনের পাখি আকাশে উড়ে গেলে আর ফিরে আসেনা। কিন্তু বালিহাঁস গুলো যেন এবাদুলের ভালবাসার টানে আবার ফিরে আসে। কিন্তু শিকারীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না পাখি গুলো। কমতে কমতে এখন দাঁড়িয়েছে ৩ টিতে। এবাদুল হক জানায়, তিনি পেশায় দিনমজুর। যা আয় করেন তার একটি অংশ পাখিগুলোর খাবারের খরচ করেন। সরকারি ভাবে সহায়তা পেলে পাখিগুলো পরিচর্যার মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব হতো।
নতুন পাড়া এলাকার শাহিনুর আলম বলেন, এবাদুল হকের বাড়িটি পাখির কল-কাকলিতে অন্যরকম নৈর্সগিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বন সংরক্ষক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বন ও বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পাখিগুলোকে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেয়া উচিৎ। তবে বন কর্মকর্তার এই বক্তব্য প্রসে পাখি প্রেমিক এবাদুল হক বলেন,সন্তানের মত সেগুলোকে তিনি লালন পালন করে বড় করেছেন। তিনি আরো বলেন, পাখি গুলো ভোরে খাল-বিল,নদী-নালায় আহারের খোঁজে যায়। আবার সন্ধ্যা হলে তার বাড়িতে ফিরে আসে। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন,নিবিড় ভালোবাসার টানে পাখিগুলো তার বাড়িতে বাস করছে।