ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুরে আসুন বাইক্কা বিল থেকে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ব্যস্ত নগরজীবনে কাজকর্মের চাপে যখন পিষ্ট হয়ে যাচ্ছেন, ঠিক তখনই ঢাকার বাইরে কোনো জায়গা থেকে ঘুরে আসতে পারেন। একঘেয়েমি দূর হওয়ার পাশাপাশি  প্রকৃতির সান্নিধ্য পাবেন খুব কাছ থেকে। ঢাকার বাইরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জায়গার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্রীমঙ্গলের বাইক্কার বিল।

যা দেখবেন- বর্তমানে হাইল হাওরের প্রাণ বাইক্কা বিল। ‘ইউএসএইড’-এর অর্থায়নে প্রকল্পের মাধ্যমে বাইক্কা বিলে গড়ে তোলা হয়েছে মাছ ও পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রম। বিলটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে সমন্বিত রক্ষিত এলাকা সহব্যবস্থাপনা প্রকল্প আইপ্যাক। বাইক্কা বিলে মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলায় দেশের বিলুপ্তপ্রায় রুই, গইন্না, কালিবাওস, দেশি সরপুঁটি, পাবদা, আইড়, গুলশা, চিতলসহ ১৫-২০ প্রজাতির মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। নানা জাতের মাছের সঙ্গে রয়েছে হাজারো কচুরিপানা, শাপলা আর পদ্মফুল।

বিলের পানিতে সকাল-সন্ধ্যা চলে রঙিন ফড়িংয়ের বিরতিহীন ওড়াউড়ি। বৃষ্টিহীন উষ্ণ দিনে বিলের ফুলের পাশে আসে একদল পতঙ্গ। প্রকৃতিপ্রেমীর চোখে পাখিই এই অভয়াশ্রমের সেরা প্রাণি। বিলের উল্লেখযোগ্য পাখি- পানকৌড়ি, কানিবক, ধলাবক, গোবক, ধুপনিবক, রাঙ্গাবক, দলপিপি, নেউপিপি, পানমুরগি, বেগুনি কালেম, কালোমাথা কাস্তেচরা, শঙ্খচিল, পালাসি, কুড়া, ঈগল। শীতের অতিথি হয়ে এই বিলে আসে অনেক জাতের পাখি। এদের মধ্যে আছে গেওয়ালা বাটান, মেটেমাথা চিটি, কালাপঙ্খ ঠেঙ্গী, ধলা বালিহাঁস, পাতি সরালি, রাজসরালি, মরচেরং, ভূতিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, ল্যাঙ্গাহাঁস, গুটি ঈগল, সাপ-ব্যাঙ এবং আরো নানা প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ।

এ ছাড়া বাইক্কা বিলে পাওয়া যায় সুস্বাদু মাখনা, শালুকসহ নানা স্বাদের, নানা বর্ণের জলজ ফল। পর্যটকদের সুবিধার্থে পাখি দেখার জন্য বাইক্কা বিলে পানির উপরে তৈরি করা হয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। এ টাওয়ার থেকে শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে বিলের পাখি কাছ থেকে দেখার সুব্যবস্থা রয়েছে। ইচ্ছে করলে আপনি স্বল্পমূল্যে বিলে নৌকাভ্রমণ করতে পারেন। প্রচণ্ড গরমে পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে বসলে শীতল বাতাস শরীরে কাঁপন তুলবে মুহূর্তেই। বাইক্কা বিলের ওয়াচ টাওয়ারের উপর বসে সূর্য ডোবা দেখা যায়।

কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে বাস অথবা আন্তনগর ট্রেনে শ্রীমঙ্গল যেতে পারেন। সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অনেক বাস পাবেন (হানিফ, শ্যামলী, এনা, ইত্যাদি)। ভাড়া ৪৫০-৫০০/- শ্রীমঙ্গল নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মাইক্রোতে চেপে বাইক্কা বিল। সারাদিনের জন্য বাইক্কা বিলে যাওয়া আসার জন্য সিএনজিচালিত বেবিট্যাক্সির ভাড়া পড়বে এক হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

ঘুরে আসুন বাইক্কা বিল থেকে

আপডেট টাইম : ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ব্যস্ত নগরজীবনে কাজকর্মের চাপে যখন পিষ্ট হয়ে যাচ্ছেন, ঠিক তখনই ঢাকার বাইরে কোনো জায়গা থেকে ঘুরে আসতে পারেন। একঘেয়েমি দূর হওয়ার পাশাপাশি  প্রকৃতির সান্নিধ্য পাবেন খুব কাছ থেকে। ঢাকার বাইরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জায়গার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্রীমঙ্গলের বাইক্কার বিল।

যা দেখবেন- বর্তমানে হাইল হাওরের প্রাণ বাইক্কা বিল। ‘ইউএসএইড’-এর অর্থায়নে প্রকল্পের মাধ্যমে বাইক্কা বিলে গড়ে তোলা হয়েছে মাছ ও পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রম। বিলটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে সমন্বিত রক্ষিত এলাকা সহব্যবস্থাপনা প্রকল্প আইপ্যাক। বাইক্কা বিলে মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলায় দেশের বিলুপ্তপ্রায় রুই, গইন্না, কালিবাওস, দেশি সরপুঁটি, পাবদা, আইড়, গুলশা, চিতলসহ ১৫-২০ প্রজাতির মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। নানা জাতের মাছের সঙ্গে রয়েছে হাজারো কচুরিপানা, শাপলা আর পদ্মফুল।

বিলের পানিতে সকাল-সন্ধ্যা চলে রঙিন ফড়িংয়ের বিরতিহীন ওড়াউড়ি। বৃষ্টিহীন উষ্ণ দিনে বিলের ফুলের পাশে আসে একদল পতঙ্গ। প্রকৃতিপ্রেমীর চোখে পাখিই এই অভয়াশ্রমের সেরা প্রাণি। বিলের উল্লেখযোগ্য পাখি- পানকৌড়ি, কানিবক, ধলাবক, গোবক, ধুপনিবক, রাঙ্গাবক, দলপিপি, নেউপিপি, পানমুরগি, বেগুনি কালেম, কালোমাথা কাস্তেচরা, শঙ্খচিল, পালাসি, কুড়া, ঈগল। শীতের অতিথি হয়ে এই বিলে আসে অনেক জাতের পাখি। এদের মধ্যে আছে গেওয়ালা বাটান, মেটেমাথা চিটি, কালাপঙ্খ ঠেঙ্গী, ধলা বালিহাঁস, পাতি সরালি, রাজসরালি, মরচেরং, ভূতিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, ল্যাঙ্গাহাঁস, গুটি ঈগল, সাপ-ব্যাঙ এবং আরো নানা প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ।

এ ছাড়া বাইক্কা বিলে পাওয়া যায় সুস্বাদু মাখনা, শালুকসহ নানা স্বাদের, নানা বর্ণের জলজ ফল। পর্যটকদের সুবিধার্থে পাখি দেখার জন্য বাইক্কা বিলে পানির উপরে তৈরি করা হয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। এ টাওয়ার থেকে শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে বিলের পাখি কাছ থেকে দেখার সুব্যবস্থা রয়েছে। ইচ্ছে করলে আপনি স্বল্পমূল্যে বিলে নৌকাভ্রমণ করতে পারেন। প্রচণ্ড গরমে পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে বসলে শীতল বাতাস শরীরে কাঁপন তুলবে মুহূর্তেই। বাইক্কা বিলের ওয়াচ টাওয়ারের উপর বসে সূর্য ডোবা দেখা যায়।

কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে বাস অথবা আন্তনগর ট্রেনে শ্রীমঙ্গল যেতে পারেন। সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অনেক বাস পাবেন (হানিফ, শ্যামলী, এনা, ইত্যাদি)। ভাড়া ৪৫০-৫০০/- শ্রীমঙ্গল নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মাইক্রোতে চেপে বাইক্কা বিল। সারাদিনের জন্য বাইক্কা বিলে যাওয়া আসার জন্য সিএনজিচালিত বেবিট্যাক্সির ভাড়া পড়বে এক হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা।