ঢাকা , রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ

সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার প্রতিবাদে প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলে শুরু করলে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে বিক্ষোভকারীরা মাজার গেটের সামনে গেলে রঙিন পানি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিক থেকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।  এই বিক্ষোভ সমাবেশে আছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, উদীচী, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, ছাত্র ঐক্য ফোরামসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষেরা।  সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্ট অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে মাজার গেটের কাছে পুলিশ বাধার মুখে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে


১২টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত ভাস্কর্য সরানোর কাজ হয়।  এ সময় সুপ্রিম কোর্টের ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্যটি সরানোর দাবি জানিয়ে আসছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভাস্কর্য সরানোর খবর পাওয়ার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে সর্বোচ্চ আদালতের সামনে ছুটে আসেন বিক্ষুব্ধরা।  দুইটার দিকে বেশ কিছু তরুণ সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের বাইরে স্লোগান দিতে থাকেন।  এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ছাত্রদের একটি মিছিল আসে।  রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষুব্ধরা আদালতের ফটক ধরে ধাক্কাধাক্কি করেন।

এ সময় কিছুক্ষণের জন্য ভাস্কর্য সরানোর কাজ বন্ধ থাকে।  ভেতর থেকে ফটকের কাছে আসেন কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।  তবে সাময়িক উত্তেজনার পর বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ ফটকের সামনে ও অন্য একটি অংশ রাস্তার একপাশ বন্ধ করে রাস্তার ওপর অবস্থান নেন।  থেমে থেমে স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা।  স্লোগান ওঠে ‘ন্যায়বিচারের ভাস্কর্য অপসারণ করা যাবে না’, ‘আপস না রাজপথ?-রাজপথ, রাজপথ’, ‘হেফাজতের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মৌলবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও জ্বালিয়ে দাও’ ইত্যাদি।

বিক্ষোভের মধ্যেই ভাস্কর্যটি অপসারণের কাজ শেষ হয়।  সেখান থেকে ক্রেনের সাহায্যে ভাস্কর্যটি একটি ছোট ট্রাকে তোলা হয়।  ভাস্কর্যটি অ্যানেক্স ভবনের ভেতরে পানির পাম্পের পাশে নিয়ে রাখা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।  ভোর চারটার দিকে ভাস্কর্য অপসারণের কাজ শেষ হওয়ার পর আরও ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে বিক্ষোভকারীরা সেখান থেকে চলে যান।  যাওয়ার আগে আজকের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।  এরই অংশ হিসেবে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ।

ভাস্কর্যটি সরানোর সময় উপস্থিত ছিলেন এর ভাস্কর মৃণাল হক।  তিনি বলেন, এ ভাস্কর্য কোনো গ্রিক দেবীর নয়; বরং এটি বাঙালি মেয়ের ভাস্কর্য।  যার হাতে ন্যায়বিচারের প্রতীক।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ

আপডেট টাইম : ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০১৭

সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার প্রতিবাদে প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলে শুরু করলে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে বিক্ষোভকারীরা মাজার গেটের সামনে গেলে রঙিন পানি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিক থেকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।  এই বিক্ষোভ সমাবেশে আছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, উদীচী, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, ছাত্র ঐক্য ফোরামসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষেরা।  সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্ট অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে মাজার গেটের কাছে পুলিশ বাধার মুখে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে


১২টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত ভাস্কর্য সরানোর কাজ হয়।  এ সময় সুপ্রিম কোর্টের ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্যটি সরানোর দাবি জানিয়ে আসছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভাস্কর্য সরানোর খবর পাওয়ার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে সর্বোচ্চ আদালতের সামনে ছুটে আসেন বিক্ষুব্ধরা।  দুইটার দিকে বেশ কিছু তরুণ সুপ্রিম কোর্টের মূল ফটকের বাইরে স্লোগান দিতে থাকেন।  এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ছাত্রদের একটি মিছিল আসে।  রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষুব্ধরা আদালতের ফটক ধরে ধাক্কাধাক্কি করেন।

এ সময় কিছুক্ষণের জন্য ভাস্কর্য সরানোর কাজ বন্ধ থাকে।  ভেতর থেকে ফটকের কাছে আসেন কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।  তবে সাময়িক উত্তেজনার পর বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ ফটকের সামনে ও অন্য একটি অংশ রাস্তার একপাশ বন্ধ করে রাস্তার ওপর অবস্থান নেন।  থেমে থেমে স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা।  স্লোগান ওঠে ‘ন্যায়বিচারের ভাস্কর্য অপসারণ করা যাবে না’, ‘আপস না রাজপথ?-রাজপথ, রাজপথ’, ‘হেফাজতের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মৌলবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও জ্বালিয়ে দাও’ ইত্যাদি।

বিক্ষোভের মধ্যেই ভাস্কর্যটি অপসারণের কাজ শেষ হয়।  সেখান থেকে ক্রেনের সাহায্যে ভাস্কর্যটি একটি ছোট ট্রাকে তোলা হয়।  ভাস্কর্যটি অ্যানেক্স ভবনের ভেতরে পানির পাম্পের পাশে নিয়ে রাখা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।  ভোর চারটার দিকে ভাস্কর্য অপসারণের কাজ শেষ হওয়ার পর আরও ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে বিক্ষোভকারীরা সেখান থেকে চলে যান।  যাওয়ার আগে আজকের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।  এরই অংশ হিসেবে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ।

ভাস্কর্যটি সরানোর সময় উপস্থিত ছিলেন এর ভাস্কর মৃণাল হক।  তিনি বলেন, এ ভাস্কর্য কোনো গ্রিক দেবীর নয়; বরং এটি বাঙালি মেয়ের ভাস্কর্য।  যার হাতে ন্যায়বিচারের প্রতীক।