বিশ্ব ইজতেমার মূল-প্যান্ডেল অনেকটা খালি রেখে নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। খালি জায়গায় ৬৪ জেলা থেকে সামিয়ানা আসবে ও পরে টানানো হবে। ইজতেমা শুরু থেকে এই প্রথমবারের মতো সারাদেশের সকল জেলা থেকে প্যান্ডেলের সামিয়ানা আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে সকল ইজতেমায় পুরো প্যান্ডেল নির্মাণ করা হতো একসঙ্গে।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ইজতেমা ময়দান ঘুরে এই তথ্য জানা গেছে।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি। ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব। মাঝে চারদিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব এবং ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা।
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ব ইজতেমার অধিকাংশ জায়গা খালি। শুধু বাঁশ পুঁতে রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় ইজতেমার নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সুরা সদস্য শাহ আলম বলেন, এবারই প্রথম সিদ্ধান্ত হলো, খিত্তাওয়ারি সব জেলা থেকে সামিয়ানা এনে নিজ দায়িত্বে টাঙাবে সংশ্লিষ্ট জেলার মুসল্লিরা। এর আগে এরকম হয়নি। জেলাগুলো থেকে সামিয়ানা আসার পর তারা টাঙাবে তাই এখন ইজতেমার ৯০ ভাগ কাজ শেষ।
আরেক সূরা সদস্য আবুল হাসাত বলেন, বিশ্ব ইজতেমা ময়দান প্রস্তুত। আমাদের আর কোনো ঘাটতি নেই।
গোডাউন জামাতের জিম্মাদার মাওলানা শিহাব উদ্দিন জানান, বিশ্ব ইজতেমা আয়োজকদের পক্ষ থেকে মোট ১০টি বিভাগ করা হয়েছে। ১০টি বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করবে নজমওয়ালী জামাত। ১০টি জামাত হল, পাহারা জামাত, এস্কেবাল (অভ্যর্থনা) জামাত, জুর্নেওয়ালী জামাত, পানির জামাত, বিদ্যুৎ জামাত, মাইক জামাত, সাফাই জামাত, রিজার্ভ জামাত, গোডাউন জামাত ও নজমওয়ালী জামাত। নজম আলী জামাতে বর্তমানে ৩৫ জন সদস্য রয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম ৬ সদস্য।
আয়োজকদের এই তিন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি জামাতে শতাধিক লোক থাকবে। আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তারা কাজ করবে। আগামী বৃহস্পতিবার বাদ ফজর পুরো প্যান্ডেলে আলাদা আলাদা খিত্তায় বয়ান হবে। বৃহস্পতিবার বাদ আসর বিশ্ব জামাতের মুরুব্বীরা বসে সিদ্ধান্ত নিবে কে আখেরই মোনাজাত পরিচালনা করবেন, কারা কারা বয়ান করবেন। তাদের ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক শুক্রবার বাদ ফজর আম-বয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠু সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে। গাজীপুর জেলা প্রশাসন, গাজীপুর সিটিকরপোরেশন, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিস সহ সংশ্লিষ্ট সকল সরকারী দপ্তর তাদের নিজ নিজ সেল গঠন করেছে। সাংবাদিকদের জন্যও প্রস্তুত করা হয়েছে মিডিয়া সেল। সব মিলিয়ে বিশ্ব ইজতেমার শেষ সময়ে প্রস্তুতি নিতে পুরোদমে বিরামহীন কাজ চলছে। যতই সময় যাচ্ছে ততই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে দলে দলে লোক আসছে। মাঠে এসেই ধর্মপ্রাণ মানুষ ইজতেমার কাজে লেগে পড়ছেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমার আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ইজতেমা সমাপ্ত করতে পারব।