জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র থেমে নেই বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের কথা বলে; নির্বাচনের কথা বলে অনেকেই আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার কথা বলে। ডেমোক্রেসির কথা বলে দূতাবাসগুলো চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক দলের অনেকেই তা বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে।’
‘আমি জার্মানির একজন সাংবাদিককে বলেছি ১৯৪৫ সালে নাৎসি বাহিনীকে আপনারা নিজেরাই নিষিদ্ধ করেছেন। সেখান থেকেই বোঝা উচিত আওয়ামী লীগের কি হবে’, যোগ করেন আসিফ মাহমুদ।
গতকাল সোমবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আয়োজনে ‘নবীন চোখে গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আবরার ফাহাদের মৃত্যু থেকে দেশপ্রেমকে ধারণ করে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সে লড়াই আজও চলছে। তার অংশ হিসেবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। তবে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এখনো ঠিকভাবে হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদেরকে সরকারের পক্ষ থকে ব্যয়ভার বহন করা হবে। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালকে বিশেষায়িতভাবে জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি নিয়ন্ত্রণ করে দেউলিয়াত্বের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের কাউন্টার বয়ান তৈরি করতে হবে। ফ্যাসিবাদ যাতে ফিরে না আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। ৭১ এ স্বাধীনতার পর ভাসানি বলেছেন আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। আমরাও বলছি ২৪ এর অভ্যুত্থানের পরও আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয় নাই। আমাদের সামাজিক নিজেদের ক্রিয়েটিভিটি, উদ্যম ও সাহসের মাধ্যমে সে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সমগ্র ক্ষেত্রে ১ দফার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।’
আলোচকের বক্তব্যে সোস্যাল এক্টিভিস্ট সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহ বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যেটা করছে তা শুধু এই ১৫ বছরে তৈরি হয়নি। শেখ মুজিবের সময় থেকে এর শুরু হয়েছিল। ৭০ এর নির্বাচনে মানুষ ভোট দিয়ে শেখ মুজিবকে নির্বাচিত করলো, পরে স্বাধীন বাংলাদেশ শেখ মুজিব সেটা এক্সপ্লোয়েট করেছে। আপনার আশপাশের আওয়ামী লীগের লোকজনকে জিজ্ঞেস করবেন তারা অনুশোচনা করে কিনা? অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখবেন তারা বলবে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা নাই।
তিনি আরও বলেন, উপদেষ্টাদের মধ্যে অনেকে গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করে না। উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ এমনভাবে কাজ করেছেন মনে হয় ১০০ বছরের কোনো মৃগী রোগী কাজ করছেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন উপস্থাপক ও আইনজীবী মানজুর আল মতিন, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ শান্ত। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. লুৎফুল এলাহী এবং পরিবেশ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন রুনু।